
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

২০ অক্টোবর, ২০২৫ ২৩:০৫
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়নের ডেবরা খালে পাইলিং স্থাপন কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক কামরুজ্জামান সুইটকে জবাই করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।এ ঘটনায় আইনী আশ্রয় পেতে সুইট সোমবার (২০ অক্টোবর) ঝালকাঠি সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কামরুজ্জামান সুইট জাতীয় দৈনিক খবরেরকাগজ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এবং স্থানীয় দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল, দৈনিক দূরযাত্রা ও দৈনিক খবর ডটকম'র নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করছেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়নের ডেবরা গ্রামের মোসলেম হাওলাদারের পুত্র নাঈম হোসেন (৩৫) এবং নাইমের মা নিলুফা বেগম(৫০) ওই এলাকার প্রেসিডেন্ট বাড়ির খলিল হাওলাদারের ঘরের সামনের খাল পাড়ের ৫০০ফুট পাইলিং এর কাজ করে। এই কাজের অনিয়ম হওয়ায় ভিডিওসহ দৈনিক খবর ডটকম পোর্টালে গত ১৬ অক্টোবর নিউজ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার (২০অক্টোবর) ১০টা ৩৬মিনিটে প্রতিবেদকের ব্যবহৃত ০১৯৩৬-১১২৭০৭ নম্বরে ০১৩০৪-৮৫৭৩৫০ থেকে ফোন করে নাইম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তখন প্রতিবেদক তাকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ জবাই করে খুন করবে বলে হুমকি দেয়। এসময় হুমকির ভাষ্য লাউড দিলে পাশে থাকা বাবুল মিনা, সাইফুল ইসলাম বাবু শুনতে পায়। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় এ জিডিতে। এঘটনায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সদর থানা পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিককে হুমকির ঘটনায় জিডি করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।’
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়নের ডেবরা খালে পাইলিং স্থাপন কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক কামরুজ্জামান সুইটকে জবাই করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।এ ঘটনায় আইনী আশ্রয় পেতে সুইট সোমবার (২০ অক্টোবর) ঝালকাঠি সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কামরুজ্জামান সুইট জাতীয় দৈনিক খবরেরকাগজ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এবং স্থানীয় দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল, দৈনিক দূরযাত্রা ও দৈনিক খবর ডটকম'র নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করছেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, নলছিটি উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়নের ডেবরা গ্রামের মোসলেম হাওলাদারের পুত্র নাঈম হোসেন (৩৫) এবং নাইমের মা নিলুফা বেগম(৫০) ওই এলাকার প্রেসিডেন্ট বাড়ির খলিল হাওলাদারের ঘরের সামনের খাল পাড়ের ৫০০ফুট পাইলিং এর কাজ করে। এই কাজের অনিয়ম হওয়ায় ভিডিওসহ দৈনিক খবর ডটকম পোর্টালে গত ১৬ অক্টোবর নিউজ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার (২০অক্টোবর) ১০টা ৩৬মিনিটে প্রতিবেদকের ব্যবহৃত ০১৯৩৬-১১২৭০৭ নম্বরে ০১৩০৪-৮৫৭৩৫০ থেকে ফোন করে নাইম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তখন প্রতিবেদক তাকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ জবাই করে খুন করবে বলে হুমকি দেয়। এসময় হুমকির ভাষ্য লাউড দিলে পাশে থাকা বাবুল মিনা, সাইফুল ইসলাম বাবু শুনতে পায়। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় এ জিডিতে। এঘটনায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সদর থানা পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিককে হুমকির ঘটনায় জিডি করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।’

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:২৩
ঝালকাঠির নলছিটিতে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৪৫০ বস্তা আলু জব্দ করেছে পুলিশ। তবে ওই আলুর মালিক পাওয়া যায়নি। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার মগড় ইউনিয়নের খাওখীর গ্রামের উত্তর দিকে কালিজিরা খালেরপাড়ে মনির তালুকদারের জমি থেকে মালিকানাবিহীন ওই ৪৫০ বস্তা আলু জব্দ করা হয়।
জব্দ আলু মগড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেনের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে এলাকাবাসী জানান, বুধবার রাতে অপরিচিত কয়েকজন লোক আলুভর্তি একটি বড় ট্রলার ওই খালের পাড়ে নিয়ে আসেন। পরে আলুর বস্তাগুলো ট্রলার থেকে খালের পার্শ্ববর্তী মনির তালুকদারের জমিতে উঠিয়ে রেখে খালি ট্রলার নিয়ে চলে যান। এ সময় তারা (এলাকাবাসী) ভেবেছিলেন হয়তো এই আলু কেউ কিনেছেন। তারা নিয়ে যাবেন; কিন্তু বুধবার রাত থেকে শনিবার দিন পর্যন্ত ওই আলুর বস্তা কেউ না নেওয়ায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ওখানেই বস্তাগুলো পড়ে থাকে। পরে মগড় ইউপি সদস্য মিন্টু খানকে বিষয়টি জানানো হয়।
মগড় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিন্টু খান বলেন, আমি বিষয়টি জেনে এবং আলুর মালিককে খুঁজে না পেয়ে রোববার নলছিটি থানা পুলিশকে এ ঘটনা জানাই। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলুর বস্তাগুলো জব্দ করে।
মগড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেন জানান, জব্দ আলুর বস্তাগুলো তার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
নলছিটি থানার পরিদর্শক (ওসি/তদন্ত) মো. আশরাফ আলী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ওই ৪৫০ বস্তা আলুর কোনো মালিক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ওই আলুর বস্তাগুলো জব্দ করে মগড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। পরে প্রশাসনকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৫:৪৯
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে তার নিজ জেলা ঝালকাঠিতে তৃতীয় দিনের মতো বরিশাল-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে করেছেন ছাত্র জনতা।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে শহরের কলেজমোড় এলাকায় তারা জড়ো হন। পরে মহাসড়কে অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা।
অবরোধকারী ঝালকাঠি গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সাগর বলেন, ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে এতদিন পার হয়ে গেলেও মূল অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আমাদের ভাইয়ের হত্যার বিচার যতদিনে না পাব আমাদের সংগ্রাম চলতেই থাকবে। আমার ভাই হাদি শহীদ হয়েছেন প্রয়োজনেও আমরাও শহীদ হব। আমরা দ্রুত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। যারা হামলা চালাচ্ছে, তাদের এখন পর্যন্ত সরকার গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে পারেনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলার সদস্য সচিব, রাইয়ান বিন কামাল বলেন, আমরা হাদি ভাইর হত্যার বিচারের দাবিতে বিগত কিছু দিন ধরে আন্দোলন করে এসেছি। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো প্রশাসনের লোক এসে আমাদের দাবিটা কি সেটা শুনেনি। আজকে যতক্ষণে পুলিশ প্রশাসনের কেউ না আসবে ততক্ষণে আমরা সড়ক অবরোধ ছাড়ব না। এখানে পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আসতেই হবে।
ঝালকাঠির সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, অবরোধ হওয়ার সাথে সাথে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। আমরা আন্দোলনকারীদের বোঝানার চেষ্টা করছি।
এদিকে ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানকে ফোন দিলে তিনি ফোন কেটে দিলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৪২
শোকে স্তব্ধ ওসমান হাদির গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি। হাদিশূন্য তার বসতভিটায় ভিড় করছেন চেনা-অচেনা বহু মানুষ। শোকের মাতম চলছে শ্বশুর বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জেও। শেষবার মত দেখার অপেক্ষার প্রহর গুনছে এখন গ্রামবাসী। পারিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, হাদির শেষ ইচ্ছে ছিলো তাকে যেন তার বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়। তবে সে সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
টিনসেড ঘরেই জন্ম নিয়েছিলেন সৈয়দ শরীফ ওসমান হাদি। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হাদির বেড়ে ওঠা এখানেই। তবে এই ঘরে হাদি যেন এখন কেবলই, ছবি। ঘাতকের গুলিতে চিরতরে বিদায় নেয়ায়, শূন্যতায় ছেয়ে তার জন্মভূমি।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল পৌর এলাকায় ১৯৯৩ সালের জন্ম নেয় ওসমান হাদি। বাবা মাওলানা আবদুল হাদি ও মা তাসলিমা হাদির ঘরে ৬ সন্তানের মধ্যে হাদি ছিলেন সবার ছোট।
এলাকাবাসী জানান, শৈশব থেকেই হাদি ছিলেন প্রতিবাদের এক কণ্ঠস্বর। নেছারাবাদ এন এস কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম শেষ করে পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমির পাঠ চুকান। স্বজনদের পাশাপাশি গ্রামবাসীর কাছে হাদি যেন কেবল একটি নাম নয়, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়ায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিচ্ছবি হয়েছেন। তাইতো তার নিহতের ঘটনা মানতে পারছে না কেউই। কেউ অঝরে, কেউ কাঁদছেন গুমরে গুমরে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই চেনা, অচেনা বহু মানুষ ভিড় করেন হাদির এই ভাঙাচুরা ঘরের সামনেই। বাড়িতে থাকা হাদির বোন আর বোনের পরিবারকে সান্ত্বনা দেবার ভাষা পাচ্ছে না আগতরা। সাথে কেউ স্মৃতি আওড়ান, কারো মুখে হাদি হত্যার বিচারের দাবি।
অপরদিকে, হাদির শ্বশুরবাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জেও চলছে শোকের মাতম। অল্প বয়সে স্বামী হারা স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যতে উদ্বিগ্ন স্বজনরা। দাবি, আর যেন কোন মায়ের কোল খালি না হয় হাদির মত।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান ওসমান হাদি। ঢাকা মেডিকেল ও এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ঝালকাঠির নলছিটিতে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৪৫০ বস্তা আলু জব্দ করেছে পুলিশ। তবে ওই আলুর মালিক পাওয়া যায়নি। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার মগড় ইউনিয়নের খাওখীর গ্রামের উত্তর দিকে কালিজিরা খালেরপাড়ে মনির তালুকদারের জমি থেকে মালিকানাবিহীন ওই ৪৫০ বস্তা আলু জব্দ করা হয়।
জব্দ আলু মগড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেনের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে এলাকাবাসী জানান, বুধবার রাতে অপরিচিত কয়েকজন লোক আলুভর্তি একটি বড় ট্রলার ওই খালের পাড়ে নিয়ে আসেন। পরে আলুর বস্তাগুলো ট্রলার থেকে খালের পার্শ্ববর্তী মনির তালুকদারের জমিতে উঠিয়ে রেখে খালি ট্রলার নিয়ে চলে যান। এ সময় তারা (এলাকাবাসী) ভেবেছিলেন হয়তো এই আলু কেউ কিনেছেন। তারা নিয়ে যাবেন; কিন্তু বুধবার রাত থেকে শনিবার দিন পর্যন্ত ওই আলুর বস্তা কেউ না নেওয়ায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ওখানেই বস্তাগুলো পড়ে থাকে। পরে মগড় ইউপি সদস্য মিন্টু খানকে বিষয়টি জানানো হয়।
মগড় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিন্টু খান বলেন, আমি বিষয়টি জেনে এবং আলুর মালিককে খুঁজে না পেয়ে রোববার নলছিটি থানা পুলিশকে এ ঘটনা জানাই। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলুর বস্তাগুলো জব্দ করে।
মগড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেন জানান, জব্দ আলুর বস্তাগুলো তার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
নলছিটি থানার পরিদর্শক (ওসি/তদন্ত) মো. আশরাফ আলী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ওই ৪৫০ বস্তা আলুর কোনো মালিক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ওই আলুর বস্তাগুলো জব্দ করে মগড় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জামাল হোসেনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। পরে প্রশাসনকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে তার নিজ জেলা ঝালকাঠিতে তৃতীয় দিনের মতো বরিশাল-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে করেছেন ছাত্র জনতা।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে শহরের কলেজমোড় এলাকায় তারা জড়ো হন। পরে মহাসড়কে অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা।
অবরোধকারী ঝালকাঠি গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সাগর বলেন, ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে এতদিন পার হয়ে গেলেও মূল অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আমাদের ভাইয়ের হত্যার বিচার যতদিনে না পাব আমাদের সংগ্রাম চলতেই থাকবে। আমার ভাই হাদি শহীদ হয়েছেন প্রয়োজনেও আমরাও শহীদ হব। আমরা দ্রুত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। যারা হামলা চালাচ্ছে, তাদের এখন পর্যন্ত সরকার গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে পারেনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলার সদস্য সচিব, রাইয়ান বিন কামাল বলেন, আমরা হাদি ভাইর হত্যার বিচারের দাবিতে বিগত কিছু দিন ধরে আন্দোলন করে এসেছি। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো প্রশাসনের লোক এসে আমাদের দাবিটা কি সেটা শুনেনি। আজকে যতক্ষণে পুলিশ প্রশাসনের কেউ না আসবে ততক্ষণে আমরা সড়ক অবরোধ ছাড়ব না। এখানে পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আসতেই হবে।
ঝালকাঠির সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, অবরোধ হওয়ার সাথে সাথে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। আমরা আন্দোলনকারীদের বোঝানার চেষ্টা করছি।
এদিকে ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানকে ফোন দিলে তিনি ফোন কেটে দিলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
শোকে স্তব্ধ ওসমান হাদির গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি। হাদিশূন্য তার বসতভিটায় ভিড় করছেন চেনা-অচেনা বহু মানুষ। শোকের মাতম চলছে শ্বশুর বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জেও। শেষবার মত দেখার অপেক্ষার প্রহর গুনছে এখন গ্রামবাসী। পারিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, হাদির শেষ ইচ্ছে ছিলো তাকে যেন তার বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়। তবে সে সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
টিনসেড ঘরেই জন্ম নিয়েছিলেন সৈয়দ শরীফ ওসমান হাদি। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হাদির বেড়ে ওঠা এখানেই। তবে এই ঘরে হাদি যেন এখন কেবলই, ছবি। ঘাতকের গুলিতে চিরতরে বিদায় নেয়ায়, শূন্যতায় ছেয়ে তার জন্মভূমি।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল পৌর এলাকায় ১৯৯৩ সালের জন্ম নেয় ওসমান হাদি। বাবা মাওলানা আবদুল হাদি ও মা তাসলিমা হাদির ঘরে ৬ সন্তানের মধ্যে হাদি ছিলেন সবার ছোট।
এলাকাবাসী জানান, শৈশব থেকেই হাদি ছিলেন প্রতিবাদের এক কণ্ঠস্বর। নেছারাবাদ এন এস কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম শেষ করে পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমির পাঠ চুকান। স্বজনদের পাশাপাশি গ্রামবাসীর কাছে হাদি যেন কেবল একটি নাম নয়, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়ায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিচ্ছবি হয়েছেন। তাইতো তার নিহতের ঘটনা মানতে পারছে না কেউই। কেউ অঝরে, কেউ কাঁদছেন গুমরে গুমরে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই চেনা, অচেনা বহু মানুষ ভিড় করেন হাদির এই ভাঙাচুরা ঘরের সামনেই। বাড়িতে থাকা হাদির বোন আর বোনের পরিবারকে সান্ত্বনা দেবার ভাষা পাচ্ছে না আগতরা। সাথে কেউ স্মৃতি আওড়ান, কারো মুখে হাদি হত্যার বিচারের দাবি।
অপরদিকে, হাদির শ্বশুরবাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জেও চলছে শোকের মাতম। অল্প বয়সে স্বামী হারা স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যতে উদ্বিগ্ন স্বজনরা। দাবি, আর যেন কোন মায়ের কোল খালি না হয় হাদির মত।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান ওসমান হাদি। ঢাকা মেডিকেল ও এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।