https://jamunabankbd.com/

বরিশাল

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সান্টুর বেফাঁস মন্তব্যে বরিশালে তোলপাড়!

হাসিবুল ইসলাম, বরিশাল

হাসিবুল ইসলাম, বরিশাল

১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ০০:০৭

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সান্টুর বেফাঁস মন্তব্যে বরিশালে তোলপাড়!

কেন্দ্রীয় নেতা সরফুদ্দিন সান্টুর বেশ কয়েকটি বেফাঁস মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এই নেতা একটি বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কর্মী-সমর্থকদের চাঁদাবাজির অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি নিজে স্বীকার করেন। তার এই বেফাঁস মন্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়, যা নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য সান্টুর ওপর সংক্ষুব্ধ হয়েছেন বরিশাল জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এবং দলের দায়িত্বশীল নেতার এমন আচরণে বিব্রত বিএনপির হাইকমান্ড। এই তথ্য বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এবং ঢাকার একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র রূপালী বাংলাদেশকে নিশ্চিত করে।

স্থানীয় বিএনপির একটি অংশের অভিযোগ, উজিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরফুদ্দিন সান্টু বিগত সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে কখনও মাঠে ছিলেন না। তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য করে বিদেশে নিরাপদে থেকেছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং নিজের সংসদীয় এলাকা উজিরপুর-বানারীপাড়ায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন।

এই নেতার অনুগত কর্মী-সমর্থকেরা আওয়ামী লীগের অনপুস্থিতিতে গত এক বছরে বিভিন্ন দখলসন্ত্রাসসহ নানামুখী অপরাধে জড়িয়ে আলোচনায় আছেন। নেতাকর্মীদের এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে নেপথ্য শক্তি হিসেবে এতদিন সরফুদ্দিন সান্টু নিজেই কাজ করেছেন, যা তিনি স্বীকারও করেছেন। বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সদস্য সান্টুর বক্তব্যের একটি ভিডিও বেশকদিন ধরে সমাজপাতায় ঘুরছে, যেখানে তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘গত এক বছর বিএনপি নেতাকর্মীরা যে চাঁদাবাজি করেছে, সেটা তিনি তাদের করতে দিয়েছেন।

ত্রয়োদশ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির নেতার এমন বেফাঁস মন্তব্যে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে। এবং এই বিষয়টিকে তার প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ আবার সার্বক্ষণিক আলোচনায় রাখছেন। বিশেষ করে ইস্যুটি নিয়ে একই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু এবং ছাত্রদলের সাবেক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের অনুগত অনুসারীরা সান্টুকে বিতর্কিত করতে নানা কৌশল চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ১ মিনিট ২২ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ছাড়াও সরফুদ্দিন সান্টু আরও বেশ কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ড করে নিজেকে আলোচনায় রাখেন। গত ১৯ জুলাই উজিরপুর ও ২০ জুলাই বানারীপাড়া উপজেলা এবং পৌর বিএনপির সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘বেগম খালেদা জিয়ার হাতে ১০ লাখ টাকা’ দিয়ে বিএনপির রাজনীতি করার কথা বলেছেন। এছাড়া ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলালের মনোনয়ন এনে দিয়ে ভোটে জেতানোর কথা বলেছেন সান্টু। তার এই দুটি বেফাঁস মন্তব্যের পরে এবার আলোচনায় এসেছে কর্মী-সমর্থকদের দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করানোর বিষয়টি, যা খোদ বিএনপি নেতা নিজের মুখেই স্বীকার করে রীতিমত আলোচনার খোরাক হয়েছেন।

উপজেলা বিএনপির একটি সূত্র নিশ্চিত করে কর্মী-সমর্থকদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার সুযোগ দেওয়া সংক্রান্ত যে ভিডিওটি দুদিন পূর্বে ভাইরাল হয়, তা চলতি বছরের জুলাই মাসে বানারীপাড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের। নতুন কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি কর্মীদের উদ্দেশ করে এমন বেসামাল কথা বলেন। ধারনা করা হচ্ছে, তার বক্তব্যের ভিডিওটি দলীয় ঘরনার রাজনৈতিক কারও কাছে সংরক্ষিত ছিল, তিনি সময় বুঝে প্রকাশ করেছেন।

এই ভিডিও ক্লিপে সান্টুকে বলতে শোনা যায়, ‘গত এক বছর বিএনপি নেতা-কর্মীরা যে চাঁদাবাজি করেছে, সেটা তিনি তাদের করতে দিয়েছেন। এবং কেন দিয়েছেন তার যুক্তিও খন্ডন করে তিনি বলেন, গত ১৭ বছর নেতাকর্মীরা কিছু খায় নায়। অবস্থা কিন্তু ভালো না, আমি থাকি আর না থাকি, আপনারা এক থাকেন। বিএনপি ক্ষমতায় না এলে কিন্তু কিছু পাবেন না। এবং নেতাকর্মীদের পকেটে যদি পয়সা না থাকে, তাহলে সমস্যা হলে আমার কাছে আসেন, ইত্যাদি...।

উপজেলাপর্যায়ের শীর্ষ নেতার এই ধরনের বেফাঁস মন্তব্য স্থানীয় নেতাকর্মীদের হাতাশ এবং সংক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এই বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গোলাম মাহমুদ মাহবুব। তিনি বলেন, উজিরপুরের গুঠিয়ায় সান্টুর মালিকানাধীন বাইতুল ভিউ কনভেনশন হলে আয়োজিত একটি বৈঠকে তিনি বেফাঁস মন্তব্যটি করেছেন। তবে বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মৃধা ওই ভিডিও বক্তব্যকে কাটপিস বলে দাবি করেছেন। এবং তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ভিডিওটি দেখে মনে হয়েছে এটি কাটপিস করে তৈরি করা হয়েছে। তবে ভিডিওটি যে সুপার এডিট করা নয়, তা বিভিন্ন মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সান্টুর এমন বেফাঁস মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু। এই নেতা সাংবাদিকদের বলছেন, দায়িত্বশীল নেতা হয়ে সান্টু দলের ক্ষতি করছেন। তার এই ধরনের বক্তব্যে দলীয় হাইকমান্ড পুরোপুরি বিব্রত এবং তৃণমূল বিএনপিকে তিনি সন্ত্রাসী বানিয়ে ফেলেছেন।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, সান্টু শুধু বেফাঁস মন্তব্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি, তিনি এর আগে বরিশাল অঞ্চলের প্রবীণ বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারকে নিয়েও ‘খিস্তিখেউর’ করেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল সদর আসনের তিনবারের এমপি সরোয়ারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সান্টু বলেছিলেন, ‘সেই দিন ভুলে যান, আমারে আঙুল দিয়েন না। আমি কিন্তু বরিশালে একবার ভোট করেছি, আবারও করে দেখাব। নেতা সরোয়ারকে নিয়ে তার এমন বিষাদগারমূলক এমন বক্তব্য ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি করে। এনিয়ে সরোয়ার অনুসারী নেতাকর্মীদের ক্ষোভে ফুসে উঠলেও রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে পরিশেষে চেপে যেতে দেখা যায়।

প্রতাপশালী বিএনপি নেতা সরফুদ্দিন সান্টুর ধারাবাহিক বেফাঁস মন্তব্য পর্যায়ক্রমে প্রকাশ্যে আসা এবং সেগুলো সমাজপাতায় ভাইরাল হওয়া নিয়ে তার কর্মী-অনুসারীরা বেশ টেনশনে রয়েছেন। প্রাসঙ্গিক এই বিষয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশী সান্টুর বক্তব্য না পাওয়া গেলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার অনুগত একাধিক কর্মী সাংবাদিকদের জানান, বয়সের ভারে নুহ্য নেতা বক্তব্য রাখতে গিয়ে খানিকটা তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। পরবর্তীতে সেগুলো দলীয় ঘরনার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক, বিশেষ করে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা ভাইরাল করে তাকে বিতর্কিত করতে তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছেন।

সান্টুর এই ধারাবাহিক বেফাঁস মন্তব্য যে সামগ্রিকভাবে দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তা বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহীনও স্বীকার করেছেন। এবং তিনি বুধবার সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি নিয়ে তার সাথে আলোচনা হয়েছে, সান্টু এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন। তাছাড়া তিনি নির্বাহী কমিটির সদস্য, বিষয়টি নিয়ে তার সাথে হাইকমান্ডও কথা বলেছেন।’

আরও পড়ুন:

খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুজন ও হাঙ্গার প্রজেক্টের শোকবার্তা

আরিফ আহমেদ মুন্না

আরিফ আহমেদ মুন্না

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭

প্রিন্ট এন্ড সেভ

খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুজন ও হাঙ্গার প্রজেক্টের শোকবার্তা

বাবুগঞ্জের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল ওহাব খানের সহধর্মিণী বাংলাদেশ প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকবার্তা দিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখা এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়। এসব সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেরিত পৃথক শোকবার্তায় তারা খালেদা ওহাবের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

শোকবার্তায় বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, 'খালেদা ওহাব দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের অতি আপনজন। তাঁর স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খান ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার। ১৯৮৯ সালে আততায়ীর গুলিতে আব্দুল ওহাব খান নিহত হওয়ার পরে খালেদা ওহাব একজন গৃহবধূ থেকে নিজের মেধা যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি থেকে জনগণের নেত্রী হয়ে ওঠেন। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন কাজ করে গেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাদের একজন স্বজন হারিয়েছে।'

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া শোকবার্তায় সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, 'খালেদা ওহাব শুধু একজন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন। ১৯৮৯ সালে স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খানের মৃত্যুর পরে তিনি তাঁর স্বামীর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পুরো একটা জীবন তিনি অবলীলায় খরচ করেছেন মানুষ ও মানবতার কল্যাণে। তিনি ছিলেন নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তিনি শিখিয়ে গেছেন কীভাবে একজন সাধারণ গৃহবধূ নারীকে সমাজের সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জীবনযুদ্ধে জয়ী এবং সফল হতে হয়। তিনি অদম্য ও জীবন সংগ্রামী নারীদের কাছে একজন আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।'

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভাগীয় সমন্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতা বলেন, 'বাবুগঞ্জে নারীর অগ্রযাত্রা এবং নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। জীবদ্দশায় তিনি বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সর্বোপরি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তিনি আমৃত্যু বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অসাধারণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, রান্নাবান্না এবং অতিথি আপ্যায়নে ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অনন্য। তাঁর শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। একজন কীর্তিমতী নারী হিসেবে তিনি ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন।'

উল্লেখ্য, বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারিণী খালেদা ওহাব ১৯৮৯ সালের উপ-নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পরবর্তী এরশাদ সরকারের উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তনের পরে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর স্বামী বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব খান আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে ওই বছরই অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি। যে সময়ে নারীরা ঠিকভাবে ঘর থেকেই বের হতে পারতেন না সেই সময়ে একজন নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিল অকল্পনীয় একটা ঘটনা। দেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনি একাধিকবার বিআরডিবি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টির বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন।

রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথেও আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ছাড়াও পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট পরিচালিত বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার বাবুগঞ্জ উপজেলা সভানেত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাড়ি বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দরিয়াবাদ গ্রামে।

গত মঙ্গলবার খালেদা ওহাব পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শান্তি সহায়ক সম্মেলনে যোগ দিতে বরিশাল থেকে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে তিনি রামপুরা এলাকায় তার ছোটবোনের বাসায় বেড়াতে গেলে বুধবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে নিকটস্থ ফরাজি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৪টার দিকে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, খালেদা ওহাব স্ট্রোকজনিত কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আছর চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। #

আমরা ৫৩ বছর ধোঁকা খেয়েছি আর নয় - চরমোনাই পীর

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২১:৩১

প্রিন্ট এন্ড সেভ

আমরা ৫৩ বছর ধোঁকা খেয়েছি আর নয় - চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘আমরা বুঝে ফেলেছি, পুরোনো বউকে নতুন শাড়ি দিয়ে ঘোমটা দিয়ে ধোঁকা দেওয়া যাবে না। এ ধোঁকায় বাংলাদেশের মানুষ আর পড়বে না। আমরা ৫৩ বছর ধোঁকা খেয়েছি, আর নয়। দেশকে মুক্ত করতে হবে।’

চরমোনাইয়ের ঐতিহাসিক অগ্রহায়ণের মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে অনুষ্ঠিত উলামা-মাশায়েখ ও দ্বীনদার বুদ্ধিজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সৈয়দ রেজাউল করীম।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। মাহফিলে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের আলেম-ওলমারা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে জাতীয় উলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের নতুন সভাপতি হিসেবে দেশের শীর্ষ আলেম মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদের নাম ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর।

আগামীর নির্বাচনে পরিবর্তন আসতেই হবে জানিয়ে মুফতি রেজাউল করিম বলেন, ‘৫৩ বছর দেশ যারা পরিচালনা করেছে, যেই নীতি-আদর্শের মাধ্যমে চলছে। এ নীতি-আদর্শে চোরের দিক থেকে আমরা চ্যাম্পিয়ান হয়েছি। হাজার হাজার মা সন্তান হারা হয়েছে। এখন নতুনভাবে দেশ পরিচালনার জন্য তারা পাগলের মতো হয়ে গেছে। কখন ক্ষমতায় যাবে, আবার সেই চরিত্র বাস্তবায়ন করবে।’

এ সময় চরমোনাই পীর বলেন, ‘আমি কিন্তু কোথাও প্রার্থী হইনি। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে হবও না। সারা দেশে আমার সফর করতে হবে।’ তিনি বলেন, দিন-রাত নিজের পকটের টাকা খরচ করে পাগলের মতো ঘুরছি। এর পেছনে একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আছে। সেটা হলো—আমরা এ দেশকে ভালোবাসি। আমরা ইসলামকে ভালোবাসি, মানুষকে ভালোবাসি।’

আট দফা দাবি আদায়ে বরিশালে নার্স বিক্ষোভ

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১৯:০৬

প্রিন্ট এন্ড সেভ

আট দফা দাবি আদায়ে বরিশালে নার্স বিক্ষোভ

ভিন্ন অধিদপ্তরের অধীনে স্বতন্ত্র নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদ এবং জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনসহ আট দফা দাবিতে বরিশালে কালো ব্যাজ ধারণ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নার্সরা।

বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) বরিশাল জেলা শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নার্স ও মিডওয়াইফরা ব্যানার, ফেস্টুন ও বিভিন্ন স্লোগানে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলও করেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি খাত দেশের স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এই খাত চরম অবহেলায় রয়েছে। স্বতন্ত্র নার্সিং অধিদপ্তর বাতিলের সিদ্ধান্ত পেশাগত মর্যাদা, দক্ষতা উন্নয়ন ও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতির পথে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- বিএনএ বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি আলী আজগর, সহ-সভাপতি মো. শাহআলম, সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম তালুকদার, কোষাধ্যক্ষ শামীমা ইয়াসমিন, আনোয়ারা খানম, হাফিজা আক্তার প্রমুখ।

বরিশাল নার্সিং কলেজ ও শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত নার্স ও মিডওয়াইফরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.