
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:২৫
প্রচুর ভিটামিন সি ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা–সম্পন্ন অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ জনপ্রিয় ফল পেয়ারার রাজধানী বরিশালে এর উৎপাদন বছরে ৪০ হাজার টন অতিক্রম করতে যাচ্ছে। বছরে প্রায় পৌনে ২শ কোটি টাকার পেয়ারার বাজার তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যে। এমনকি বরিশালের পেয়ারা বাজার ইতোমধ্যে সারা দেশে সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিকভাবে তা সীমান্ত অতিক্রম করে পার্শ্ববর্তী দেশের আগরতলা, শিলং, জলপাইগুড়ি, নিউ জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং বনগাঁওসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। ভালো দাম পেয়ে বরিশালের কৃষিযোদ্ধাগণও পেয়ারা আবাদে আরও আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল। চলতি মৌসুমে খোলা বাজারে প্রতি কেজি পেয়ারা ৬০–৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাগান পর্যায়ে অবশ্য উৎপাদকরা ৪০ টাকার বেশি দাম পাচ্ছেন না। পাইকারি হাটে এসে তা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এমনকি পেয়ারা বিপণনে আটঘর কুড়িয়ানা ও ভিমরুলি এলাকায় বিশাল ভাসমান পেয়ারার হাট ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের অর্থনীতির বিশাল চালিকাশক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। শুধু পেয়ারা বেচাকেনাই নয়, এ ভাসমান হাট ও পেয়ারার বাগান দেখতেও প্রতিদিন সারাদেশের বিপুল সংখ্যক পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে আটঘর কুড়িয়ানা ও ভিমরুলি এলাকা। ফলে পেয়ারা উৎপাদন ও বিপণনকে ঘিরে পর্যটন শিল্পও নতুন হাতছানি দিচ্ছে এ এলাকায়। এসব পর্যটকের কাছে বরিশাল একটি ট্রানজিট পয়েন্ট। রাজধানী ঢাকা–সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকগণ বরিশালে পৌঁছে এখান থেকে পেয়ারা বাগান ও ভাসমান পেয়ারা হাট দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।
এমনকি ‘মকুন্দপুরি’সহ সনাতন জাতের পেয়ারা–সাথে আমাদের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বারি’ উদ্ভাবিত ‘কাজী পেয়ারা’, ‘বারি পেয়ারা–২’, ‘বারি পেয়ারা–৩’, বীজবিহীন ‘বারি পেয়ারা–৪’ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত ‘বাউ পেয়ারা–১’ থেকে ‘বাউ পেয়ারা–৯’ এবং ‘থাই পেয়ারা–৫’ ও ‘থাই পেয়ারা–৭’ নামের উন্নতমানের সুমিষ্ট পেয়ারা আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলে পেয়ারার আবাদ ১০ হাজার একর অতিক্রম করেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)–এর মতে, দেশে বর্তমানে যে প্রায় ৪০ হাজার একরে পেয়ারার আবাদ হচ্ছে, এককভাবে বরিশালেই তার অবদান প্রায় ১০ সহস্রাধিক একর। প্রতিবছরই এ অঞ্চলে পেয়ারার আবাদ ও উৎপাদন বাড়ছে। এমনকি গত কয়েকটি বছর ধরে কাজী পেয়ারা ও থাই পেয়ারা আবাদ সম্প্রসারণে এক ধরনের নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে এ অঞ্চলে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরিশালের ইসাকাঠী ও রহমতপুরে হর্টিকালচার নার্সারি ছাড়াও লেবুখালী নার্সারি থেকে সব সময়ই উন্নত জাত ও মানের পেয়ারার চারা ও কলম সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।
ভিটামিন–সি–সমৃদ্ধ পেয়ারা মূলত গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও কৃষিবিজ্ঞানের কল্যাণে এখন তা সারা বছরই উৎপাদন হচ্ছে। এমনকি সরাসরি ফল হিসেবে খাবার পাশাপাশি পেয়ারা দিয়ে এখন জ্যাম ও জেলি ছাড়াও জুস পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে সারা বিশ্বে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দক্ষিণাঞ্চলের লক্ষাধিক হেক্টর জমিতে বছরে ২৫ লক্ষাধিক টন বিভিন্ন ধরনের ফল উৎপাদন হলেও এ অঞ্চলে আজ পর্যন্ত কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠেনি।
অথচ এ অঞ্চলে উৎপাদিত প্রায় ৩০ হাজার টন আমড়া ও ৩০ হাজার টন পেয়ারা সাথে পৌনে ৪ লাখ টন ইলিশ মাছ নিয়ে একটি ইপিজেড বা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকগণ। এছাড়াও প্রায় ১৪ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত বরিশাল কৃষি অঞ্চলে যে প্রায় ১৭ লাখ টন সবজি উৎপাদন হচ্ছে, তারও অনেকগুলোই প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। তবে বিশ্বের যে শতাধিক দেশে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানি হচ্ছে, সেখানের বরিশালের সবজিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।
উর্বর বেলে দো–আঁশ মাটিতে পেয়ারা আবাদে পরামর্শ দিয়ে থাকেন কৃষিবিদগণ। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পেয়ারার চারা বা কলম রোপণের উপযুক্ত সময়। চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪ মিটার এবং ৩ মিটার দূরত্বের লাইনে পেয়ারা চারা রোপণ অত্যন্ত আদর্শ ও উপযুক্ত বলে মনে করেন কৃষিবিদগণ। রোপণের আগে ৫০ সেন্টিমিটার বা দেড় হাত দৈর্ঘ্য–প্রস্থ ও গভীর গর্ত করে সেখানে ১৫–২০ কেজি গোবর, ১–২ কেজি পচা খৈল এবং ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ৭৫–১০০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করে গর্ত বুজিয়ে ১৫–২০ দিন পরে সেখানে চারা রোপণের পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিদগণ। মাটিতে রসের অভাব হলে খরার সময় ২–৩ বার সেচ প্রয়োগ করতে হবে।
পেয়ারার ভালো ফলন পেতে গাছের অঙ্গছাঁটাই, ডাল নুয়ে দেওয়া, ফল পাতলাকরণ এবং ফল ঢেকে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন কৃষিবিদগণ। পাশাপাশি সুষ্ঠু সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করারও তাগিদ দিয়েছেন কৃষিবিদগণ।
পেয়ারার বাগান ও গাছে ‘অ্যানথ্রাকনোজ’, ‘উইল্ট বা ঢলে পড়া’ রোগ ছাড়াও ‘সাদা মাছি পোকা’র আক্রমণ অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব বালাই থেকে পেয়ারা ফল ও গাছকে রক্ষায় আক্রান্ত পাতা ও ডগা ছাঁটাই করে ধ্বংস করা ছাড়াও ‘ইমিডাক্লোপ্রিড’ গ্রুপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলিলিটার হারে ১০ দিন অন্তর ২–৩ বার স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিদগণ।
প্রচুর ভিটামিন সি ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা–সম্পন্ন অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ জনপ্রিয় ফল পেয়ারার রাজধানী বরিশালে এর উৎপাদন বছরে ৪০ হাজার টন অতিক্রম করতে যাচ্ছে। বছরে প্রায় পৌনে ২শ কোটি টাকার পেয়ারার বাজার তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যে। এমনকি বরিশালের পেয়ারা বাজার ইতোমধ্যে সারা দেশে সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিকভাবে তা সীমান্ত অতিক্রম করে পার্শ্ববর্তী দেশের আগরতলা, শিলং, জলপাইগুড়ি, নিউ জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং বনগাঁওসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। ভালো দাম পেয়ে বরিশালের কৃষিযোদ্ধাগণও পেয়ারা আবাদে আরও আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল। চলতি মৌসুমে খোলা বাজারে প্রতি কেজি পেয়ারা ৬০–৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাগান পর্যায়ে অবশ্য উৎপাদকরা ৪০ টাকার বেশি দাম পাচ্ছেন না। পাইকারি হাটে এসে তা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এমনকি পেয়ারা বিপণনে আটঘর কুড়িয়ানা ও ভিমরুলি এলাকায় বিশাল ভাসমান পেয়ারার হাট ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের অর্থনীতির বিশাল চালিকাশক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। শুধু পেয়ারা বেচাকেনাই নয়, এ ভাসমান হাট ও পেয়ারার বাগান দেখতেও প্রতিদিন সারাদেশের বিপুল সংখ্যক পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে আটঘর কুড়িয়ানা ও ভিমরুলি এলাকা। ফলে পেয়ারা উৎপাদন ও বিপণনকে ঘিরে পর্যটন শিল্পও নতুন হাতছানি দিচ্ছে এ এলাকায়। এসব পর্যটকের কাছে বরিশাল একটি ট্রানজিট পয়েন্ট। রাজধানী ঢাকা–সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকগণ বরিশালে পৌঁছে এখান থেকে পেয়ারা বাগান ও ভাসমান পেয়ারা হাট দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।
এমনকি ‘মকুন্দপুরি’সহ সনাতন জাতের পেয়ারা–সাথে আমাদের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বারি’ উদ্ভাবিত ‘কাজী পেয়ারা’, ‘বারি পেয়ারা–২’, ‘বারি পেয়ারা–৩’, বীজবিহীন ‘বারি পেয়ারা–৪’ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত ‘বাউ পেয়ারা–১’ থেকে ‘বাউ পেয়ারা–৯’ এবং ‘থাই পেয়ারা–৫’ ও ‘থাই পেয়ারা–৭’ নামের উন্নতমানের সুমিষ্ট পেয়ারা আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলে পেয়ারার আবাদ ১০ হাজার একর অতিক্রম করেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)–এর মতে, দেশে বর্তমানে যে প্রায় ৪০ হাজার একরে পেয়ারার আবাদ হচ্ছে, এককভাবে বরিশালেই তার অবদান প্রায় ১০ সহস্রাধিক একর। প্রতিবছরই এ অঞ্চলে পেয়ারার আবাদ ও উৎপাদন বাড়ছে। এমনকি গত কয়েকটি বছর ধরে কাজী পেয়ারা ও থাই পেয়ারা আবাদ সম্প্রসারণে এক ধরনের নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে এ অঞ্চলে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরিশালের ইসাকাঠী ও রহমতপুরে হর্টিকালচার নার্সারি ছাড়াও লেবুখালী নার্সারি থেকে সব সময়ই উন্নত জাত ও মানের পেয়ারার চারা ও কলম সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।
ভিটামিন–সি–সমৃদ্ধ পেয়ারা মূলত গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও কৃষিবিজ্ঞানের কল্যাণে এখন তা সারা বছরই উৎপাদন হচ্ছে। এমনকি সরাসরি ফল হিসেবে খাবার পাশাপাশি পেয়ারা দিয়ে এখন জ্যাম ও জেলি ছাড়াও জুস পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে সারা বিশ্বে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দক্ষিণাঞ্চলের লক্ষাধিক হেক্টর জমিতে বছরে ২৫ লক্ষাধিক টন বিভিন্ন ধরনের ফল উৎপাদন হলেও এ অঞ্চলে আজ পর্যন্ত কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠেনি।
অথচ এ অঞ্চলে উৎপাদিত প্রায় ৩০ হাজার টন আমড়া ও ৩০ হাজার টন পেয়ারা সাথে পৌনে ৪ লাখ টন ইলিশ মাছ নিয়ে একটি ইপিজেড বা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকগণ। এছাড়াও প্রায় ১৪ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত বরিশাল কৃষি অঞ্চলে যে প্রায় ১৭ লাখ টন সবজি উৎপাদন হচ্ছে, তারও অনেকগুলোই প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। তবে বিশ্বের যে শতাধিক দেশে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানি হচ্ছে, সেখানের বরিশালের সবজিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।
উর্বর বেলে দো–আঁশ মাটিতে পেয়ারা আবাদে পরামর্শ দিয়ে থাকেন কৃষিবিদগণ। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পেয়ারার চারা বা কলম রোপণের উপযুক্ত সময়। চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪ মিটার এবং ৩ মিটার দূরত্বের লাইনে পেয়ারা চারা রোপণ অত্যন্ত আদর্শ ও উপযুক্ত বলে মনে করেন কৃষিবিদগণ। রোপণের আগে ৫০ সেন্টিমিটার বা দেড় হাত দৈর্ঘ্য–প্রস্থ ও গভীর গর্ত করে সেখানে ১৫–২০ কেজি গোবর, ১–২ কেজি পচা খৈল এবং ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ৭৫–১০০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করে গর্ত বুজিয়ে ১৫–২০ দিন পরে সেখানে চারা রোপণের পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিদগণ। মাটিতে রসের অভাব হলে খরার সময় ২–৩ বার সেচ প্রয়োগ করতে হবে।
পেয়ারার ভালো ফলন পেতে গাছের অঙ্গছাঁটাই, ডাল নুয়ে দেওয়া, ফল পাতলাকরণ এবং ফল ঢেকে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন কৃষিবিদগণ। পাশাপাশি সুষ্ঠু সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করারও তাগিদ দিয়েছেন কৃষিবিদগণ।
পেয়ারার বাগান ও গাছে ‘অ্যানথ্রাকনোজ’, ‘উইল্ট বা ঢলে পড়া’ রোগ ছাড়াও ‘সাদা মাছি পোকা’র আক্রমণ অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসব বালাই থেকে পেয়ারা ফল ও গাছকে রক্ষায় আক্রান্ত পাতা ও ডগা ছাঁটাই করে ধ্বংস করা ছাড়াও ‘ইমিডাক্লোপ্রিড’ গ্রুপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলিলিটার হারে ১০ দিন অন্তর ২–৩ বার স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিদগণ।
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:১৫
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:০৫
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:২৪

২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:১৫
বরিশালে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই কয়লা ও পাচারকাজে ব্যবহৃত একটি লাইটার ভেসেলসহ ১২ চোরাকারবারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ডের একটি দল। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কোস্ট গার্ড স্টেশন বরিশাল কোতোয়ালি থানাধীন চরমোনাই আনন্দ ঘাট-সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালে একটি সন্দেহজনক লাইটার ভেসেল তল্লাশি করা হয়। তল্লাশির পর ভেসেলটি থেকে ১ হাজার ১০০ টন চোরাই কয়লা জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ সময় চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোংলা হিরণ পয়েন্টে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজ থেকে এই কয়লা অসদুপায় অবলম্বন করে অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।
জব্দ করা কয়লা, পাচারকাজে ব্যবহৃত লাইটার ভেসেল এবং আটক ১২ চোরাকারবারিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা।
বরিশালে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই কয়লা ও পাচারকাজে ব্যবহৃত একটি লাইটার ভেসেলসহ ১২ চোরাকারবারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ডের একটি দল। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কোস্ট গার্ড স্টেশন বরিশাল কোতোয়ালি থানাধীন চরমোনাই আনন্দ ঘাট-সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালে একটি সন্দেহজনক লাইটার ভেসেল তল্লাশি করা হয়। তল্লাশির পর ভেসেলটি থেকে ১ হাজার ১০০ টন চোরাই কয়লা জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ সময় চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোংলা হিরণ পয়েন্টে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজ থেকে এই কয়লা অসদুপায় অবলম্বন করে অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।
জব্দ করা কয়লা, পাচারকাজে ব্যবহৃত লাইটার ভেসেল এবং আটক ১২ চোরাকারবারিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা।

২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:০৫
শয়তানের নিঃশ্বাসের খপ্পরে পড়ে ২৭ বছরের গৃহবধু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার মামলা হলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল কোতয়ালি থানার ওসিকে আসামির বিরুদ্ধে এজাহার করার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে উপরোক্ত নির্দেশ দেন।
নগরের ২৬ নং ওয়ার্ডের হরিনাফুলিয়া এলাকার আসমা আক্তার বাদী হয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরের রাসেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। বাদি মামলায় উল্লেখ করেন তার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আসামীর।
বাদির আইডি কার্ড সংশোধন করে দেওয়ার কথা বলে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে আসতে বলে। গত ১২ নভেম্বর বাদি বাস স্ট্যান্ড আসলে শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়া বাদিসহ তার নবজাত শিশু সন্তানকে ঢাকা নিয়ে যায়। এরপর ১২ ই নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাঁদিকে খুনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাদি স্বামীকে জানালে স্বামী ১৯ নভেম্বর ঢাকা গিয়ে বাদিকে উদ্ধার করে বরিশাল নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে ২৭বছরের ওই গৃহবধূ বৃহস্পতিবার বরিশাল আদালতে হাজির হয়ে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
শয়তানের নিঃশ্বাসের খপ্পরে পড়ে ২৭ বছরের গৃহবধু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার মামলা হলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল কোতয়ালি থানার ওসিকে আসামির বিরুদ্ধে এজাহার করার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে উপরোক্ত নির্দেশ দেন।
নগরের ২৬ নং ওয়ার্ডের হরিনাফুলিয়া এলাকার আসমা আক্তার বাদী হয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরের রাসেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। বাদি মামলায় উল্লেখ করেন তার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আসামীর।
বাদির আইডি কার্ড সংশোধন করে দেওয়ার কথা বলে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে আসতে বলে। গত ১২ নভেম্বর বাদি বাস স্ট্যান্ড আসলে শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়া বাদিসহ তার নবজাত শিশু সন্তানকে ঢাকা নিয়ে যায়। এরপর ১২ ই নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাঁদিকে খুনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাদি স্বামীকে জানালে স্বামী ১৯ নভেম্বর ঢাকা গিয়ে বাদিকে উদ্ধার করে বরিশাল নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে ২৭বছরের ওই গৃহবধূ বৃহস্পতিবার বরিশাল আদালতে হাজির হয়ে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
বাবুগঞ্জের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল ওহাব খানের সহধর্মিণী বাংলাদেশ প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকবার্তা দিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখা এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়। এসব সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেরিত পৃথক শোকবার্তায় তারা খালেদা ওহাবের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, 'খালেদা ওহাব দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের অতি আপনজন। তাঁর স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খান ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার। ১৯৮৯ সালে আততায়ীর গুলিতে আব্দুল ওহাব খান নিহত হওয়ার পরে খালেদা ওহাব একজন গৃহবধূ থেকে নিজের মেধা যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি থেকে জনগণের নেত্রী হয়ে ওঠেন। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন কাজ করে গেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাদের একজন স্বজন হারিয়েছে।'
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া শোকবার্তায় সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, 'খালেদা ওহাব শুধু একজন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন। ১৯৮৯ সালে স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খানের মৃত্যুর পরে তিনি তাঁর স্বামীর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পুরো একটা জীবন তিনি অবলীলায় খরচ করেছেন মানুষ ও মানবতার কল্যাণে। তিনি ছিলেন নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তিনি শিখিয়ে গেছেন কীভাবে একজন সাধারণ গৃহবধূ নারীকে সমাজের সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জীবনযুদ্ধে জয়ী এবং সফল হতে হয়। তিনি অদম্য ও জীবন সংগ্রামী নারীদের কাছে একজন আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।'
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভাগীয় সমন্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতা বলেন, 'বাবুগঞ্জে নারীর অগ্রযাত্রা এবং নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। জীবদ্দশায় তিনি বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সর্বোপরি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তিনি আমৃত্যু বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অসাধারণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, রান্নাবান্না এবং অতিথি আপ্যায়নে ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অনন্য। তাঁর শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। একজন কীর্তিমতী নারী হিসেবে তিনি ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন।'
উল্লেখ্য, বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারিণী খালেদা ওহাব ১৯৮৯ সালের উপ-নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পরবর্তী এরশাদ সরকারের উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তনের পরে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর স্বামী বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব খান আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে ওই বছরই অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি। যে সময়ে নারীরা ঠিকভাবে ঘর থেকেই বের হতে পারতেন না সেই সময়ে একজন নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিল অকল্পনীয় একটা ঘটনা। দেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনি একাধিকবার বিআরডিবি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টির বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন।
রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথেও আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ছাড়াও পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট পরিচালিত বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার বাবুগঞ্জ উপজেলা সভানেত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাড়ি বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দরিয়াবাদ গ্রামে।
গত মঙ্গলবার খালেদা ওহাব পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শান্তি সহায়ক সম্মেলনে যোগ দিতে বরিশাল থেকে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে তিনি রামপুরা এলাকায় তার ছোটবোনের বাসায় বেড়াতে গেলে বুধবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে নিকটস্থ ফরাজি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৪টার দিকে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, খালেদা ওহাব স্ট্রোকজনিত কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আছর চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। #
বাবুগঞ্জের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল ওহাব খানের সহধর্মিণী বাংলাদেশ প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকবার্তা দিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখা এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়। এসব সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেরিত পৃথক শোকবার্তায় তারা খালেদা ওহাবের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, 'খালেদা ওহাব দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের অতি আপনজন। তাঁর স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খান ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার। ১৯৮৯ সালে আততায়ীর গুলিতে আব্দুল ওহাব খান নিহত হওয়ার পরে খালেদা ওহাব একজন গৃহবধূ থেকে নিজের মেধা যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি থেকে জনগণের নেত্রী হয়ে ওঠেন। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন কাজ করে গেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাদের একজন স্বজন হারিয়েছে।'
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া শোকবার্তায় সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, 'খালেদা ওহাব শুধু একজন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন। ১৯৮৯ সালে স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খানের মৃত্যুর পরে তিনি তাঁর স্বামীর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পুরো একটা জীবন তিনি অবলীলায় খরচ করেছেন মানুষ ও মানবতার কল্যাণে। তিনি ছিলেন নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তিনি শিখিয়ে গেছেন কীভাবে একজন সাধারণ গৃহবধূ নারীকে সমাজের সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জীবনযুদ্ধে জয়ী এবং সফল হতে হয়। তিনি অদম্য ও জীবন সংগ্রামী নারীদের কাছে একজন আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।'
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভাগীয় সমন্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতা বলেন, 'বাবুগঞ্জে নারীর অগ্রযাত্রা এবং নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। জীবদ্দশায় তিনি বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সর্বোপরি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তিনি আমৃত্যু বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অসাধারণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, রান্নাবান্না এবং অতিথি আপ্যায়নে ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অনন্য। তাঁর শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। একজন কীর্তিমতী নারী হিসেবে তিনি ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন।'
উল্লেখ্য, বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারিণী খালেদা ওহাব ১৯৮৯ সালের উপ-নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পরবর্তী এরশাদ সরকারের উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তনের পরে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর স্বামী বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব খান আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে ওই বছরই অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি। যে সময়ে নারীরা ঠিকভাবে ঘর থেকেই বের হতে পারতেন না সেই সময়ে একজন নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিল অকল্পনীয় একটা ঘটনা। দেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনি একাধিকবার বিআরডিবি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টির বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন।
রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথেও আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ছাড়াও পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট পরিচালিত বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার বাবুগঞ্জ উপজেলা সভানেত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাড়ি বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দরিয়াবাদ গ্রামে।
গত মঙ্গলবার খালেদা ওহাব পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শান্তি সহায়ক সম্মেলনে যোগ দিতে বরিশাল থেকে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে তিনি রামপুরা এলাকায় তার ছোটবোনের বাসায় বেড়াতে গেলে বুধবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে নিকটস্থ ফরাজি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৪টার দিকে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, খালেদা ওহাব স্ট্রোকজনিত কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আছর চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। #

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.