২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২২:০১
দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নস্যাৎ করতেই ওসমান হাদিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে— এমন অভিযোগ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি দেশের চলমান গণতান্ত্রিক উত্তরণ থামিয়ে দেওয়ার একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
জুনায়েদ সাকি বলেন, আমরা দেখেছি প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের অফিসে হামলা করা হয়েছে। এর পরপরই সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও উদীচীর ভবনে হামলা হয়েছে। এই ধারাবাহিক হামলাগুলো ন্যাক্কারজনক। এগুলো কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়, বরং একটি গভীর ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ।
ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেভাবে ওসমান হাদিকে হত্যা করা হলো, তাতে সারাদেশের মানুষ শোকাহত ও ক্ষুব্ধ। গতকাল আমরা তার জানাজায় দেখেছি—সারা দেশের মানুষ কিভাবে সেখানে যুক্ত হয়েছে। তার শাহাদাত একদিকে আমাদের শোকাহত করেছে, অন্যদিকে ক্ষোভে ফুঁসিয়ে তুলেছে।
জুনায়েদ সাকি বলেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের হাজারও শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন চেয়েছি। এই তিনটি বিষয় আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু আমরা দেখছি, পতিত ফ্যাসিস্টরা ভারতে আশ্রয় নিয়ে সেখান থেকেই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, একদল স্বার্থান্বেষী মহল মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালাচ্ছে, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে আক্রমণ করছে। এতে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, জুলাই আন্দোলন দেশের ইতিহাসে এক বিরাট ঐক্য তৈরি হয়েছিল। সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক দল, মত ও আদর্শে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও জনগণের বৃহৎ ঐক্যের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন ঘটিয়েছি।
বর্তমান সময়কে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পর্ব উল্লেখ করে জুনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের লক্ষ্য রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক করা, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করা, সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন করা এবং দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
জুনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতেই তারা উঠে পড়ে লেগেছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে যাতে এটি সফল হতে না পারে। তবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজ সরকারের দায়িত্ব ছিল এই ঐক্য বজায় রাখা, মানুষের জানমাল ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সরকার সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা রহস্যজনকভাবে নীরব ছিল।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব নাশকতামূলক তৎপরতা ঠেকাতে পারেনি? ক্ষুব্ধ মানুষকে সহজেই উত্তেজিত করা যায়— একদল সেটাই করছে।
শেষে তিনি বলেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন— এগুলো আমাদের জাতীয় স্বার্থ। কেউ যেন এই জাতীয় স্বার্থ বানচাল করতে না পারে, সেজন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যে ফাটল ধরলে এই আততায়ী ও নাশকতাকারীরাই লাভবান হবে।
দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নস্যাৎ করতেই ওসমান হাদিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে— এমন অভিযোগ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি দেশের চলমান গণতান্ত্রিক উত্তরণ থামিয়ে দেওয়ার একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
জুনায়েদ সাকি বলেন, আমরা দেখেছি প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের অফিসে হামলা করা হয়েছে। এর পরপরই সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও উদীচীর ভবনে হামলা হয়েছে। এই ধারাবাহিক হামলাগুলো ন্যাক্কারজনক। এগুলো কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়, বরং একটি গভীর ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ।
ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেভাবে ওসমান হাদিকে হত্যা করা হলো, তাতে সারাদেশের মানুষ শোকাহত ও ক্ষুব্ধ। গতকাল আমরা তার জানাজায় দেখেছি—সারা দেশের মানুষ কিভাবে সেখানে যুক্ত হয়েছে। তার শাহাদাত একদিকে আমাদের শোকাহত করেছে, অন্যদিকে ক্ষোভে ফুঁসিয়ে তুলেছে।
জুনায়েদ সাকি বলেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের হাজারও শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন চেয়েছি। এই তিনটি বিষয় আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু আমরা দেখছি, পতিত ফ্যাসিস্টরা ভারতে আশ্রয় নিয়ে সেখান থেকেই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, একদল স্বার্থান্বেষী মহল মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালাচ্ছে, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে আক্রমণ করছে। এতে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, জুলাই আন্দোলন দেশের ইতিহাসে এক বিরাট ঐক্য তৈরি হয়েছিল। সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক দল, মত ও আদর্শে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও জনগণের বৃহৎ ঐক্যের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন ঘটিয়েছি।
বর্তমান সময়কে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পর্ব উল্লেখ করে জুনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের লক্ষ্য রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক করা, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করা, সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন করা এবং দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
জুনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতেই তারা উঠে পড়ে লেগেছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে যাতে এটি সফল হতে না পারে। তবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজ সরকারের দায়িত্ব ছিল এই ঐক্য বজায় রাখা, মানুষের জানমাল ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সরকার সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা রহস্যজনকভাবে নীরব ছিল।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব নাশকতামূলক তৎপরতা ঠেকাতে পারেনি? ক্ষুব্ধ মানুষকে সহজেই উত্তেজিত করা যায়— একদল সেটাই করছে।
শেষে তিনি বলেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন— এগুলো আমাদের জাতীয় স্বার্থ। কেউ যেন এই জাতীয় স্বার্থ বানচাল করতে না পারে, সেজন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যে ফাটল ধরলে এই আততায়ী ও নাশকতাকারীরাই লাভবান হবে।

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২২:৩৪
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সেলিম রেজা (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে আটক করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রৌমারী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ইকবাল হোসেন সুজন নামে একজন।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে থানা চত্বর থেকে তাকে আটক করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঞ্চার চর গ্রামের রমিজ উদ্দিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক ও জমাজমি নিয়ে বিরোধ চলছিল এক পক্ষের। বিরোধপূর্ণ জমির বিষয়ে বাদী ও বিবাদী নিয়ে রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে থানায় সালিশি বৈঠক করে পুলিশ। পরে বৈঠক শেষে থানা থেকে বের হওয়ার সময় বাদী রমিজ উদ্দিনের যোগসাজশে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে বিবাদীপক্ষের সেলিম রেজা নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ।
অভিযোগকারী ইকবাল হোসেন বলেন, আমার বড় ভাই সেলিম রেজা কোনো রাজনীতির দলের সঙ্গে জড়িত না। সে একজন কৃষক; কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। পুলিশ শুধুমাত্র অন্যের প্ররোচনায় এবং জমিজমা বিরোধের জেরে তাকে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে আটক করেছে। ভাইয়ের মুক্তিসহ সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বন্দবেড় ইউনিয়নের ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ময়েজ উদ্দিন বলেন, সেলিম রেজা খুব ভালো ছেলে। সে আওয়ামী লীগ কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নয়। তাকে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে আটক করা পুলিশের ঠিক হয়নি। আটকের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রৌমারী থানার ওসি মো. কাওসার আলী বলেন, সেলিম রেজা আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং তাকে থানা চত্বর থেকে পুলিশ আটক করে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কী বলল এবং পুলিশের বিরুদ্ধে কে কী অভিযোগ দিল- তা আমাদের দেখার বিষয় না। তবে আওয়ামী লীগের পদ-পদবিতে না থাকলেও তিনি ওই রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বির ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তা ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি তিনি।
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সেলিম রেজা (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে আটক করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রৌমারী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ইকবাল হোসেন সুজন নামে একজন।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে থানা চত্বর থেকে তাকে আটক করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঞ্চার চর গ্রামের রমিজ উদ্দিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক ও জমাজমি নিয়ে বিরোধ চলছিল এক পক্ষের। বিরোধপূর্ণ জমির বিষয়ে বাদী ও বিবাদী নিয়ে রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে থানায় সালিশি বৈঠক করে পুলিশ। পরে বৈঠক শেষে থানা থেকে বের হওয়ার সময় বাদী রমিজ উদ্দিনের যোগসাজশে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে বিবাদীপক্ষের সেলিম রেজা নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ।
অভিযোগকারী ইকবাল হোসেন বলেন, আমার বড় ভাই সেলিম রেজা কোনো রাজনীতির দলের সঙ্গে জড়িত না। সে একজন কৃষক; কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। পুলিশ শুধুমাত্র অন্যের প্ররোচনায় এবং জমিজমা বিরোধের জেরে তাকে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে আটক করেছে। ভাইয়ের মুক্তিসহ সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বন্দবেড় ইউনিয়নের ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ময়েজ উদ্দিন বলেন, সেলিম রেজা খুব ভালো ছেলে। সে আওয়ামী লীগ কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নয়। তাকে আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে আটক করা পুলিশের ঠিক হয়নি। আটকের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রৌমারী থানার ওসি মো. কাওসার আলী বলেন, সেলিম রেজা আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং তাকে থানা চত্বর থেকে পুলিশ আটক করে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কী বলল এবং পুলিশের বিরুদ্ধে কে কী অভিযোগ দিল- তা আমাদের দেখার বিষয় না। তবে আওয়ামী লীগের পদ-পদবিতে না থাকলেও তিনি ওই রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন।
এ ব্যাপারে জানতে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বির ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তা ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর দেননি তিনি।

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২২:৩১
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে ২ আসনে সমঝোতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে এই সমঝোতায় পৌঁছান তারা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আগামী নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং ঝিনাইদহ-২ আসনে দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁনকে ছাড় দেবে বিএনপি। তবে নির্বাচনি বিধি অনুযায়ী তাদের নিজ দলের প্রতীক ‘ট্রাক’ নিয়ে লড়তে হবে।
তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘আজ বিএনপির সঙ্গে আমাদের সভা হয়েছে। সেখানে আমরা ১০টি আসনে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছি। সভায় বিএনপির পক্ষ থেকে দুটি আসনে সমঝোতার কথা বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। আগামীকাল (সোমবার) আমাদের দলের নির্বাহী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে ২ আসনে সমঝোতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে এই সমঝোতায় পৌঁছান তারা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আগামী নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং ঝিনাইদহ-২ আসনে দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁনকে ছাড় দেবে বিএনপি। তবে নির্বাচনি বিধি অনুযায়ী তাদের নিজ দলের প্রতীক ‘ট্রাক’ নিয়ে লড়তে হবে।
তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘আজ বিএনপির সঙ্গে আমাদের সভা হয়েছে। সেখানে আমরা ১০টি আসনে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছি। সভায় বিএনপির পক্ষ থেকে দুটি আসনে সমঝোতার কথা বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। আগামীকাল (সোমবার) আমাদের দলের নির্বাহী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২২:২৯
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁরা প্রাণ দিয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুদানের তপ্ত মরুভূমি রঞ্জিত হয়েছে তাদের রক্তে। নাটোরের মো. মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামের মমিনুল ইসলাম, শান্ত মন্ডল, রাজবাড়ীর শামীম রেজা, কিশোরগঞ্জের জাহাঙ্গীর আলম এবং গাইবান্ধার সবুজ মিয়া-এরা সবাই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ড্রোন হামলায় প্রাণবিসর্জন দেওয়া দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য। দেশের অকুতোভয় বীর সন্তান। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী।
বিশ্বশান্তির মঞ্চে অনন্য জাগরণের এই আত্মত্যাগ মুক্তির সোনালী সূর্যের প্রতীক দেশের জাতীয় পতাকাকে করেছে আরও রক্ত লাল। বিশ্বপরিমণ্ডলে পুনরায় সাহস, পেশাদারিত্ব ও আত্মনিবেদনের মাধ্যমে রক্তের অক্ষরে নিজেদের নামাঙ্কিত করার পাশাপাশি বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস হিসেবে চিত্রিত করে গেছেন বাংলাদেশকে। তাদের চির প্রস্থান বেদনার আবার একই সঙ্গে গৌরবময় অনুভূতির দ্যোতক।
কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা ও গৌরব বুকে নিয়েই নিহত ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ফিরেছেন নিজ মাতৃভূমিতে কফিনে নিথর দেহে। যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও আনুষ্ঠানিকতায় সম্পন্ন হচ্ছে বিশ্বশান্তিতে জীবন দেয়া এই সূর্যসন্তানদের জানাজা ও দাফন। অতুল্য আত্মত্যাগে চিরকাল তাঁরা দীপ্ত থাকবেন প্রতিটি মানুষের স্মৃতি-আবেগের সরলতায়, ও গর্বের অনুভবে আত্মমর্যাদায়। তাদের রক্ত, ত্যাগ আর অদম্য সাহস গভীর কৃতজ্ঞতা ও পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে সতের কোটির বাংলাদেশ।
এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ সদস্য মারা যান। আহত হয়েছেন ৯ জন। আহত শান্তিরক্ষীরা হলেন-কুষ্টিয়ার বাসিন্দা লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান, দিনাজপুরের সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন, ঢাকার করপোরাল আফরোজা পারভিন ইতি, বরগুনার ল্যান্স করপোরাল মহিবুল ইসলাম, কুড়িগ্রামের সৈনিক মো. মেজবাউল কবির, রংপুরের সৈনিক মোসা. উম্মে হানি আক্তার, মানিকগঞ্জের সৈনিক চুমকি আক্তার এবং নোয়াখালীর সৈনিক মো. মানাজির আহসান।
আহত সকলের চিকিৎসা চলছে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে। তাদের কয়েকজন এরইমধ্যে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন। বাকিরা সবাই শঙ্কামুক্ত। বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ড্রোন হামলাটি চালিয়েছিল সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিকস বেইসে।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সদস্যদের পদচিহ্ন সারা বিশ্বে। শুরু ১৯৮৮ সালের ১৪ আগস্ট। কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি যাত্রীবাহী বিমানে একে একে উঠলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৫ কর্মকর্তা। ইউনাইটেড নেশনস ইরান-ইরাক মিলিটারি অবজারভার গ্রুপ (ইউনিমগ) নামে জাতিসংঘের একটি শান্তিরক্ষা মিশনে সেই কর্মকর্তাদের নিয়ে বহনকারী বিমানটি ডানা মিললো ঢাকার আকাশে। বিশ্ব পরিমণ্ডলে শান্তি অন্বেষণে নতুন দিকের সূচনা করলো লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এরপর দেখতে দেখতে প্রায় চার দশক। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন নামে এক নতুন অধ্যায়ের শুরুর পরের ইতিহাসটি গর্বের, মাথা উঁচু করে পথচলার।
জাতিসংঘের ৫৬টি শান্তিরক্ষা মিশনের মধ্যে বাংলাদেশ ৫৪টি মিশনেই অংশ নিয়েছে। বর্তমানে ১০টি দেশে শান্তির পতাকা হাতে নিয়োজিত তারা। সময়ের বহমানতায় অপরিহার্য করে তুলেছে নিজেদের। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি ১৯৯৩ সাল থেকে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে আসছে। ব্লু হেলমেটধারীরা মিশনে অন্যতম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে সবার সেরা এই শান্তির প্রহরীরা। জাতিসংঘের পতাকাকে সমুন্নত ও উড্ডীন রাখার পাশাপাশি তাঁরা উজ্জ্বল করেছেন দেশের ভাবমূর্তি।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিদেশের মাটিতে শত্রুদের সামনে মাথা নত করেনি কখনও। কঠিন বিপদ-সংকটময় মুহূর্তে জীবনঝুঁকির মধ্যেও জটিল ও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে কাজ করে যাচ্ছেন অহর্নিশ। বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সিয়েরালিওন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় তাদের দেশের প্রধান ভাষা বাংলা করতে না পারলেও দেশটির দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার প্রচলন বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিভাত। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর ‘মজ্জা’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। গত ৩৭ বছর যাবত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে ওঠেছে দেশটি।
বিশ্বের বিভিন্ন বিরোধপূর্ণ দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে নিজেদের। অসামান্য অবদানের জন্য সুনাম কুড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। ৬দিন আগে সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬জন বীর শান্তিরক্ষী শাহাদতবরণ গভীরভাবে মর্মাহত করেছে গোটা দেশবাসীকে। জাতিসংঘের পতাকা তলে বিশ্বশান্তি রক্ষার মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গের শপথ করেই তাঁরা সেখানে গিয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে তাই স্বীকৃত এবং প্রশংসিত।
জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সর্বোচ্চসংখ্যক শান্তিরক্ষী পাঠানো ১১৯টি দেশের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে প্রথম বারের মতো ডিআর কঙ্গোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তিনটি হেলিকপটার মোতায়েন করা হয়েছে। শুরু থেকে সুদানে সর্বশেষ ৬ জন নিহত হওয়া ছাড়াও এই পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ১৬৮ জন শান্তিরক্ষী জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর ১৩১ জন, নৌবাহিনীর চার জন, বিমানবাহিনীর ছয় জন এবং পুলিশের ২৪ জন। আহত হয়েছেন ২৭২ জন। সার্বিকভাবে সুপ্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ সেনাসদস্য, উন্নত সরঞ্জাম, বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ এবং উঁচু মূল্যবোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মিশন এলাকার জনসাধারণ ও জাতিসংঘের আস্থা অর্জনে ঈর্ষণীয় সাফল্য লাভ করেছে।
ব্লু হেলমেটধারীরা শান্তির অনন্য দূত। অতীতের ধারাবাহিকতায় এই সময়েও সর্বোচ্চমানের পেশাদারি মনোভাব, সাহসিকতা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে বিশ্বের দেশে দেশে সন্ত্রাস, সংঘাত ও দাঙ্গা দমনের মাধ্যমে শান্তি স্থাপন থেকে শুরু করে দেশ পুনর্গঠনে নির্ভীক ভূমিকা পালন করছেন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। এক সময় যেসব দেশের সাধারণ মানুষ ‘বাংলাদেশ’ নামের সঙ্গেই পরিচিত ছিল না সেসব দেশের মানুষের মনেও শ্রদ্ধার আসন নিয়েছে বাংলাদেশ। দেশগুলোতে ব্লু হেলমেটধারীরা বিশ্বমানবতার সেবায় উৎসর্গ করেছেন নিজেদের। পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, সততা ও মানবিকতায় তাঁরা আজ বিশ্বমঞ্চে আত্মত্যাগের অনুকরণীয় এক দৃষ্টান্ত।
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁরা প্রাণ দিয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুদানের তপ্ত মরুভূমি রঞ্জিত হয়েছে তাদের রক্তে। নাটোরের মো. মাসুদ রানা, কুড়িগ্রামের মমিনুল ইসলাম, শান্ত মন্ডল, রাজবাড়ীর শামীম রেজা, কিশোরগঞ্জের জাহাঙ্গীর আলম এবং গাইবান্ধার সবুজ মিয়া-এরা সবাই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ড্রোন হামলায় প্রাণবিসর্জন দেওয়া দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য। দেশের অকুতোভয় বীর সন্তান। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী।
বিশ্বশান্তির মঞ্চে অনন্য জাগরণের এই আত্মত্যাগ মুক্তির সোনালী সূর্যের প্রতীক দেশের জাতীয় পতাকাকে করেছে আরও রক্ত লাল। বিশ্বপরিমণ্ডলে পুনরায় সাহস, পেশাদারিত্ব ও আত্মনিবেদনের মাধ্যমে রক্তের অক্ষরে নিজেদের নামাঙ্কিত করার পাশাপাশি বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস হিসেবে চিত্রিত করে গেছেন বাংলাদেশকে। তাদের চির প্রস্থান বেদনার আবার একই সঙ্গে গৌরবময় অনুভূতির দ্যোতক।
কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা ও গৌরব বুকে নিয়েই নিহত ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ফিরেছেন নিজ মাতৃভূমিতে কফিনে নিথর দেহে। যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও আনুষ্ঠানিকতায় সম্পন্ন হচ্ছে বিশ্বশান্তিতে জীবন দেয়া এই সূর্যসন্তানদের জানাজা ও দাফন। অতুল্য আত্মত্যাগে চিরকাল তাঁরা দীপ্ত থাকবেন প্রতিটি মানুষের স্মৃতি-আবেগের সরলতায়, ও গর্বের অনুভবে আত্মমর্যাদায়। তাদের রক্ত, ত্যাগ আর অদম্য সাহস গভীর কৃতজ্ঞতা ও পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে সতের কোটির বাংলাদেশ।
এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ সদস্য মারা যান। আহত হয়েছেন ৯ জন। আহত শান্তিরক্ষীরা হলেন-কুষ্টিয়ার বাসিন্দা লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান, দিনাজপুরের সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন, ঢাকার করপোরাল আফরোজা পারভিন ইতি, বরগুনার ল্যান্স করপোরাল মহিবুল ইসলাম, কুড়িগ্রামের সৈনিক মো. মেজবাউল কবির, রংপুরের সৈনিক মোসা. উম্মে হানি আক্তার, মানিকগঞ্জের সৈনিক চুমকি আক্তার এবং নোয়াখালীর সৈনিক মো. মানাজির আহসান।
আহত সকলের চিকিৎসা চলছে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে। তাদের কয়েকজন এরইমধ্যে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন। বাকিরা সবাই শঙ্কামুক্ত। বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ড্রোন হামলাটি চালিয়েছিল সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিকস বেইসে।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সদস্যদের পদচিহ্ন সারা বিশ্বে। শুরু ১৯৮৮ সালের ১৪ আগস্ট। কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি যাত্রীবাহী বিমানে একে একে উঠলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৫ কর্মকর্তা। ইউনাইটেড নেশনস ইরান-ইরাক মিলিটারি অবজারভার গ্রুপ (ইউনিমগ) নামে জাতিসংঘের একটি শান্তিরক্ষা মিশনে সেই কর্মকর্তাদের নিয়ে বহনকারী বিমানটি ডানা মিললো ঢাকার আকাশে। বিশ্ব পরিমণ্ডলে শান্তি অন্বেষণে নতুন দিকের সূচনা করলো লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এরপর দেখতে দেখতে প্রায় চার দশক। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন নামে এক নতুন অধ্যায়ের শুরুর পরের ইতিহাসটি গর্বের, মাথা উঁচু করে পথচলার।
জাতিসংঘের ৫৬টি শান্তিরক্ষা মিশনের মধ্যে বাংলাদেশ ৫৪টি মিশনেই অংশ নিয়েছে। বর্তমানে ১০টি দেশে শান্তির পতাকা হাতে নিয়োজিত তারা। সময়ের বহমানতায় অপরিহার্য করে তুলেছে নিজেদের। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি ১৯৯৩ সাল থেকে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে আসছে। ব্লু হেলমেটধারীরা মিশনে অন্যতম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে সবার সেরা এই শান্তির প্রহরীরা। জাতিসংঘের পতাকাকে সমুন্নত ও উড্ডীন রাখার পাশাপাশি তাঁরা উজ্জ্বল করেছেন দেশের ভাবমূর্তি।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিদেশের মাটিতে শত্রুদের সামনে মাথা নত করেনি কখনও। কঠিন বিপদ-সংকটময় মুহূর্তে জীবনঝুঁকির মধ্যেও জটিল ও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে কাজ করে যাচ্ছেন অহর্নিশ। বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সিয়েরালিওন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় তাদের দেশের প্রধান ভাষা বাংলা করতে না পারলেও দেশটির দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার প্রচলন বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিভাত। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর ‘মজ্জা’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। গত ৩৭ বছর যাবত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে ওঠেছে দেশটি।
বিশ্বের বিভিন্ন বিরোধপূর্ণ দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে নিজেদের। অসামান্য অবদানের জন্য সুনাম কুড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। ৬দিন আগে সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬জন বীর শান্তিরক্ষী শাহাদতবরণ গভীরভাবে মর্মাহত করেছে গোটা দেশবাসীকে। জাতিসংঘের পতাকা তলে বিশ্বশান্তি রক্ষার মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গের শপথ করেই তাঁরা সেখানে গিয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে তাই স্বীকৃত এবং প্রশংসিত।
জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সর্বোচ্চসংখ্যক শান্তিরক্ষী পাঠানো ১১৯টি দেশের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে প্রথম বারের মতো ডিআর কঙ্গোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তিনটি হেলিকপটার মোতায়েন করা হয়েছে। শুরু থেকে সুদানে সর্বশেষ ৬ জন নিহত হওয়া ছাড়াও এই পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ১৬৮ জন শান্তিরক্ষী জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর ১৩১ জন, নৌবাহিনীর চার জন, বিমানবাহিনীর ছয় জন এবং পুলিশের ২৪ জন। আহত হয়েছেন ২৭২ জন। সার্বিকভাবে সুপ্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ সেনাসদস্য, উন্নত সরঞ্জাম, বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ এবং উঁচু মূল্যবোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মিশন এলাকার জনসাধারণ ও জাতিসংঘের আস্থা অর্জনে ঈর্ষণীয় সাফল্য লাভ করেছে।
ব্লু হেলমেটধারীরা শান্তির অনন্য দূত। অতীতের ধারাবাহিকতায় এই সময়েও সর্বোচ্চমানের পেশাদারি মনোভাব, সাহসিকতা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে বিশ্বের দেশে দেশে সন্ত্রাস, সংঘাত ও দাঙ্গা দমনের মাধ্যমে শান্তি স্থাপন থেকে শুরু করে দেশ পুনর্গঠনে নির্ভীক ভূমিকা পালন করছেন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা। এক সময় যেসব দেশের সাধারণ মানুষ ‘বাংলাদেশ’ নামের সঙ্গেই পরিচিত ছিল না সেসব দেশের মানুষের মনেও শ্রদ্ধার আসন নিয়েছে বাংলাদেশ। দেশগুলোতে ব্লু হেলমেটধারীরা বিশ্বমানবতার সেবায় উৎসর্গ করেছেন নিজেদের। পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, সততা ও মানবিকতায় তাঁরা আজ বিশ্বমঞ্চে আত্মত্যাগের অনুকরণীয় এক দৃষ্টান্ত।

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.