২৫ আগস্ট, ২০২৫ ১৭:০৭
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেপ্তার হওয়া ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগারে এখন যেন অন্য এক জগতে। সাধারণ বন্দিদের মতো কষ্ট নয়, তারা ডিভিশন পেয়ে বসে বসে চা পান করছেন, পা দুলিয়ে পড়ছেন জাতীয় পত্রিকা, খাচ্ছেন আলাদাভাবে রান্না করা বাড়তি খাবারও।
গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েও কারাগারে তাদের এমন ভিআইপি সুবিধা কতটা যৌক্তিক, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। এমন তথ্য পাওয়ার পর অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের এসব মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে মামলা চলছে। তারা ভিআইপি হিসেবে যদি ডিভিশন পেয়ে থাকেন, তাহলে তাদের অপরাধ অনুযায়ী এ সুবিধা কতটুকু প্রাসঙ্গিক তা বিবেচনা করা প্রয়োজন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কারা সূত্রে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে অবস্থিত এই বিশেষ কারাগারটি সম্পূর্ণ আলাদা একটি স্থাপনা, যা ছিল নারীদের জন্য। আনুমানিক পাঁচ বছর যাবত খালি পড়ে থাকা কারাগারটি এখন বিশেষ কারাগার হিসেবে ব্যবহার করছে কর্তৃপক্ষ। এই কারাগারে বর্তমানে বন্দি সংখ্যা ১৩৭। এদের মধ্যে কয়েদি সংখ্যা ৭২, অর্থাৎ তাদের মামলার রায় হয়েছে এবং তারা সাজা খাটছেন। বিশেষ বন্দি রয়েছেন ৬৫ জন, তাদের মধ্যে ৫৫ জন আবার ডিভিশনপ্রাপ্ত। তাদের দেখভাল ও দৈনন্দিন কাজকর্মে সহায়তার জন্য ওই ৭২ জন সাধারণ কয়েদি নিয়োজিত।
কারাগার সম্পর্কিত একটি সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জের এই বিশেষ কারাগারটির ব্যবহার প্রথমে ছিল অন্য রকম। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মন্ত্রী-নেতারা খালি পড়ে থাকা নারী কারাগারটি ধোয়া-মোছার নাম করে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের হুমকি দিতেন। এমনকি সাবেক আওয়ামী প্রধান শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন— ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে আবার কারাগারে ঢুকিয়ে দেব। ’ তার সেই বক্তব্যের পরপরই তৎকালীন কারা কর্তৃপক্ষ ওই খালি পড়ে থাকা নারী কারাগারে ধোয়া-মোছার কাজ শুরু করে।
কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেই নারী কারাগার আজ রূপান্তরিত হয়েছে বিশেষ কারাগারে যেখানে বন্দি রাখা হয়েছে আওয়ামী সরকারের সাবেক মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতাদের। সেখানে ডিভিশনপ্রাপ্তরা হলেন- ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী; সাবেক হওয়া আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
ওই সূত্র জানিয়েছে, কারাগারে হাজতি বা কয়েদিদের ডিভিশনের বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে আদালতের আদেশের পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (ডিসি) কাছে আবেদন ও আদেশের কপি পাঠানো হয়। তিনি সরকারের পক্ষে, বন্দি কোন শ্রেণির ডিভিশন পাবেন সেই সিদ্ধান্ত দেন। কাগজ-কলমে নির্দেশনা মোতাবেক কারা বিধি অনুযায়ী ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়।
যেমন সাধারণ বন্দিদের খাবারের মান এবং ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের খাবারের মান প্রায় কাছাকাছি হলেও স্পষ্ট কিছু পার্থক্য রয়েছে। ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য সাধারণ বন্দিদের তুলনায় উন্নত মানের খাবার সরবরাহ করা হয়, পরিমাণেও থাকে বেশি। তাদের জন্য আলাদা রান্নার ব্যবস্থাও থাকে।
সাধারণ বন্দিদের সকালের খাবারে দেওয়া হয় রুটি, সবজি ও গুড়। দুপুরে থাকে ভাত, ডাল ও সবজি। আর রাতে পরিবেশন করা হয় ভাত, ডাল, সঙ্গে মাছ বা মাংস। তবে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য নিয়ম অনুযায়ী খাবারের তালিকায় আলাদা আয়োজন থাকে।
যেমন, তাদের জন্য মাছ-মাংসের রান্নার ধরন আলাদা হয়, পরিমাণও তুলনামূলক বেশি। ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা দুপুর ও রাতে প্রতিবারই ১৫০ গ্রাম করে মাছ বা মাংস পান, অথচ সাধারণ বন্দিদের জন্য বরাদ্দ থাকে মাত্র ৩৬ গ্রাম।
আবাসনের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের ভিন্নতা দেখা যায়। সাধারণ বন্দিদের নির্দিষ্ট ভবনের ওয়ার্ডে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। সেখানে পাকা ফ্লোরে কম্বল বিছিয়েই রাত কাটাতে হয় তাদের। অন্যদিকে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য বরাদ্দ থাকে আলাদা কক্ষ।
কেউ একা বা সর্বোচ্চ কয়েকজন মিলে সেখানে থাকতে পারেন। ঘরে থাকে খাট, একটি ম্যাট্রেস, দুটি চাদর, একটি চেয়ার ও একটি টেবিল। প্রতিদিন তাদের জন্য একটি পত্রিকা সরবরাহ করা হয়, সঙ্গে দেওয়া হয় দুধ-চিনি মেশানো চা।
ডিভিশন সুবিধার ব্যাপারে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশের কারাগারে আদালতের নির্দেশে সাজাপ্রাপ্ত কিংবা বিচারাধীন মামলার আসামিদের মধ্যে অনেকেই তাদের সামাজিক মর্যাদা ও অবস্থানের ভিত্তিতে ডিভিশন-সুবিধা পান। তবে বিধি অনুযায়ী ডিভিশনপ্রাপ্ত সবার সুবিধা এক রকম নয়। কারা কোন ক্যাটাগরিতে পড়বেন এবং কী ধরনের সুবিধা ভোগ করবেন— সেটি আইনে সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি যে সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তা কোনো অধ্যাপক পাবেন না। যদিও দুজনই নিয়ম অনুযায়ী ডিভিশন সুবিধাভুক্ত বন্দি হিসেবে গণ্য হবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও সমাজ-অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকার তার নিজস্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে আবু সাইদ, মুগ্ধসহ অসংখ্য আন্দোলনকারীকে হত্যা করেছে, আহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
একপর্যায়ে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার প্রধানসহ সাবেক ও তৎকালীন এমপি-মন্ত্রীরা এবং হাজার হাজার নেতাকর্মী পালিয়ে যায়। পরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় মামলা হলে অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য গ্রেপ্তার হয়।
বর্তমানে তারা কেরানীগঞ্জ কারাগারে চার দেয়ালের ভেতরে বন্দি থাকলেও ডিভিশন অনুযায়ী উন্নতমানের খাবার ও বিশেষ সুবিধা ভোগ করছে। এখন প্রশ্ন হলোতারা যদি রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে ডিভিশন পেয়ে থাকে, তবে তা কতটা যৌক্তিক? কারণ, তারা কেউ কেউ নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রী-এমপি বা শিল্পপতি ভিআইপি পরিচয়ে ডিভিশন পেলেও, মামলার প্রেক্ষাপটে তো তারা গণহত্যার আসামি। ’
তৌহিদুল হক আরও বলেন, ‘মামলা অনুযায়ী তারা হাজার হাজার মানুষ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত, অর্থাৎ গণহত্যাকারী। তাদের বিচার চলছে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে। তাই সরকারের উচিত দ্রুত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা আসলে ডিভিশন সুবিধা কারা পাচ্ছে এবং তা কতটা ন্যায্য। ’
এ বিষয়ে কারা মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন বলেন, ‘কারা বিধি অনুযায়ী ডিভিশনপ্রাপ্ত বিশেষ বন্দিদের নিয়ম অনুযায়ী কিছুটা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ডিভিশনপ্রাপ্তদের কি কি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দরকার সেটি জেল বিধিতে উল্লেখ আছে। তাদের সেভাবেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেপ্তার হওয়া ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগারে এখন যেন অন্য এক জগতে। সাধারণ বন্দিদের মতো কষ্ট নয়, তারা ডিভিশন পেয়ে বসে বসে চা পান করছেন, পা দুলিয়ে পড়ছেন জাতীয় পত্রিকা, খাচ্ছেন আলাদাভাবে রান্না করা বাড়তি খাবারও।
গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েও কারাগারে তাদের এমন ভিআইপি সুবিধা কতটা যৌক্তিক, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। এমন তথ্য পাওয়ার পর অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের এসব মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে মামলা চলছে। তারা ভিআইপি হিসেবে যদি ডিভিশন পেয়ে থাকেন, তাহলে তাদের অপরাধ অনুযায়ী এ সুবিধা কতটুকু প্রাসঙ্গিক তা বিবেচনা করা প্রয়োজন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কারা সূত্রে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে অবস্থিত এই বিশেষ কারাগারটি সম্পূর্ণ আলাদা একটি স্থাপনা, যা ছিল নারীদের জন্য। আনুমানিক পাঁচ বছর যাবত খালি পড়ে থাকা কারাগারটি এখন বিশেষ কারাগার হিসেবে ব্যবহার করছে কর্তৃপক্ষ। এই কারাগারে বর্তমানে বন্দি সংখ্যা ১৩৭। এদের মধ্যে কয়েদি সংখ্যা ৭২, অর্থাৎ তাদের মামলার রায় হয়েছে এবং তারা সাজা খাটছেন। বিশেষ বন্দি রয়েছেন ৬৫ জন, তাদের মধ্যে ৫৫ জন আবার ডিভিশনপ্রাপ্ত। তাদের দেখভাল ও দৈনন্দিন কাজকর্মে সহায়তার জন্য ওই ৭২ জন সাধারণ কয়েদি নিয়োজিত।
কারাগার সম্পর্কিত একটি সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জের এই বিশেষ কারাগারটির ব্যবহার প্রথমে ছিল অন্য রকম। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মন্ত্রী-নেতারা খালি পড়ে থাকা নারী কারাগারটি ধোয়া-মোছার নাম করে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের হুমকি দিতেন। এমনকি সাবেক আওয়ামী প্রধান শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন— ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে আবার কারাগারে ঢুকিয়ে দেব। ’ তার সেই বক্তব্যের পরপরই তৎকালীন কারা কর্তৃপক্ষ ওই খালি পড়ে থাকা নারী কারাগারে ধোয়া-মোছার কাজ শুরু করে।
কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেই নারী কারাগার আজ রূপান্তরিত হয়েছে বিশেষ কারাগারে যেখানে বন্দি রাখা হয়েছে আওয়ামী সরকারের সাবেক মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতাদের। সেখানে ডিভিশনপ্রাপ্তরা হলেন- ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী; সাবেক হওয়া আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
ওই সূত্র জানিয়েছে, কারাগারে হাজতি বা কয়েদিদের ডিভিশনের বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে আদালতের আদেশের পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (ডিসি) কাছে আবেদন ও আদেশের কপি পাঠানো হয়। তিনি সরকারের পক্ষে, বন্দি কোন শ্রেণির ডিভিশন পাবেন সেই সিদ্ধান্ত দেন। কাগজ-কলমে নির্দেশনা মোতাবেক কারা বিধি অনুযায়ী ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়।
যেমন সাধারণ বন্দিদের খাবারের মান এবং ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের খাবারের মান প্রায় কাছাকাছি হলেও স্পষ্ট কিছু পার্থক্য রয়েছে। ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য সাধারণ বন্দিদের তুলনায় উন্নত মানের খাবার সরবরাহ করা হয়, পরিমাণেও থাকে বেশি। তাদের জন্য আলাদা রান্নার ব্যবস্থাও থাকে।
সাধারণ বন্দিদের সকালের খাবারে দেওয়া হয় রুটি, সবজি ও গুড়। দুপুরে থাকে ভাত, ডাল ও সবজি। আর রাতে পরিবেশন করা হয় ভাত, ডাল, সঙ্গে মাছ বা মাংস। তবে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য নিয়ম অনুযায়ী খাবারের তালিকায় আলাদা আয়োজন থাকে।
যেমন, তাদের জন্য মাছ-মাংসের রান্নার ধরন আলাদা হয়, পরিমাণও তুলনামূলক বেশি। ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা দুপুর ও রাতে প্রতিবারই ১৫০ গ্রাম করে মাছ বা মাংস পান, অথচ সাধারণ বন্দিদের জন্য বরাদ্দ থাকে মাত্র ৩৬ গ্রাম।
আবাসনের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের ভিন্নতা দেখা যায়। সাধারণ বন্দিদের নির্দিষ্ট ভবনের ওয়ার্ডে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। সেখানে পাকা ফ্লোরে কম্বল বিছিয়েই রাত কাটাতে হয় তাদের। অন্যদিকে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য বরাদ্দ থাকে আলাদা কক্ষ।
কেউ একা বা সর্বোচ্চ কয়েকজন মিলে সেখানে থাকতে পারেন। ঘরে থাকে খাট, একটি ম্যাট্রেস, দুটি চাদর, একটি চেয়ার ও একটি টেবিল। প্রতিদিন তাদের জন্য একটি পত্রিকা সরবরাহ করা হয়, সঙ্গে দেওয়া হয় দুধ-চিনি মেশানো চা।
ডিভিশন সুবিধার ব্যাপারে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশের কারাগারে আদালতের নির্দেশে সাজাপ্রাপ্ত কিংবা বিচারাধীন মামলার আসামিদের মধ্যে অনেকেই তাদের সামাজিক মর্যাদা ও অবস্থানের ভিত্তিতে ডিভিশন-সুবিধা পান। তবে বিধি অনুযায়ী ডিভিশনপ্রাপ্ত সবার সুবিধা এক রকম নয়। কারা কোন ক্যাটাগরিতে পড়বেন এবং কী ধরনের সুবিধা ভোগ করবেন— সেটি আইনে সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি যে সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তা কোনো অধ্যাপক পাবেন না। যদিও দুজনই নিয়ম অনুযায়ী ডিভিশন সুবিধাভুক্ত বন্দি হিসেবে গণ্য হবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও সমাজ-অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকার তার নিজস্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে আবু সাইদ, মুগ্ধসহ অসংখ্য আন্দোলনকারীকে হত্যা করেছে, আহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
একপর্যায়ে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার প্রধানসহ সাবেক ও তৎকালীন এমপি-মন্ত্রীরা এবং হাজার হাজার নেতাকর্মী পালিয়ে যায়। পরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় মামলা হলে অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য গ্রেপ্তার হয়।
বর্তমানে তারা কেরানীগঞ্জ কারাগারে চার দেয়ালের ভেতরে বন্দি থাকলেও ডিভিশন অনুযায়ী উন্নতমানের খাবার ও বিশেষ সুবিধা ভোগ করছে। এখন প্রশ্ন হলোতারা যদি রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে ডিভিশন পেয়ে থাকে, তবে তা কতটা যৌক্তিক? কারণ, তারা কেউ কেউ নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রী-এমপি বা শিল্পপতি ভিআইপি পরিচয়ে ডিভিশন পেলেও, মামলার প্রেক্ষাপটে তো তারা গণহত্যার আসামি। ’
তৌহিদুল হক আরও বলেন, ‘মামলা অনুযায়ী তারা হাজার হাজার মানুষ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত, অর্থাৎ গণহত্যাকারী। তাদের বিচার চলছে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে। তাই সরকারের উচিত দ্রুত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা আসলে ডিভিশন সুবিধা কারা পাচ্ছে এবং তা কতটা ন্যায্য। ’
এ বিষয়ে কারা মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন বলেন, ‘কারা বিধি অনুযায়ী ডিভিশনপ্রাপ্ত বিশেষ বন্দিদের নিয়ম অনুযায়ী কিছুটা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ডিভিশনপ্রাপ্তদের কি কি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দরকার সেটি জেল বিধিতে উল্লেখ আছে। তাদের সেভাবেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:৪৭
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীনের পাঠানো এক বার্তায় তা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এনসিপি মনে করে, এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কোনো আইনি ভিত্তি অর্জিত হবে না। এটি শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
এনসিপি বহুবার স্পষ্টভাবে আইনি ভিত্তির প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে। আইনি ভিত্তি নিশ্চিত হওয়ার পূর্বে এ ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-এর মতো আরেকটি একপাক্ষিক দলিলে পরিণত হবে।
আরো বলা হয়, ঐকমত্য কমিশন যেহেতু সময় বৃদ্ধি করেছে, এনসিপি কমিশনের পরবর্তী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে। দাবি পূরণ হলে, পরবর্তীতে এনসিপি স্বাক্ষর প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে।
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীনের পাঠানো এক বার্তায় তা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এনসিপি মনে করে, এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কোনো আইনি ভিত্তি অর্জিত হবে না। এটি শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
এনসিপি বহুবার স্পষ্টভাবে আইনি ভিত্তির প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে। আইনি ভিত্তি নিশ্চিত হওয়ার পূর্বে এ ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-এর মতো আরেকটি একপাক্ষিক দলিলে পরিণত হবে।
আরো বলা হয়, ঐকমত্য কমিশন যেহেতু সময় বৃদ্ধি করেছে, এনসিপি কমিশনের পরবর্তী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে। দাবি পূরণ হলে, পরবর্তীতে এনসিপি স্বাক্ষর প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে।
১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৯:১৬
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশনার অজিত শিং সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরায় জামায়াতের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ হয়।
এ সময় হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিল মার্কাস ডেভিস, সিনিয়র ট্রেড কমিশনার ডেবরা বয়েস ও পলিটিক্যাল অ্যাডভাইজার নিসার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে গণতন্ত্রের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কানাডার সার্বিক সহযোগিতা ও কারিগরি সহায়তা কামনা করা হয়।
এছাড়া বাংলাদেশের টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা ও কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করার বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উভয় পক্ষ আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত ও সুদৃঢ় হবে।
আমিরে জামায়াতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন এবং আমিরে জামায়াতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশনার অজিত শিং সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরায় জামায়াতের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ হয়।
এ সময় হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সিল মার্কাস ডেভিস, সিনিয়র ট্রেড কমিশনার ডেবরা বয়েস ও পলিটিক্যাল অ্যাডভাইজার নিসার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে গণতন্ত্রের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কানাডার সার্বিক সহযোগিতা ও কারিগরি সহায়তা কামনা করা হয়।
এছাড়া বাংলাদেশের টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা ও কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করার বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উভয় পক্ষ আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত ও সুদৃঢ় হবে।
আমিরে জামায়াতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন এবং আমিরে জামায়াতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১৯:১৬
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু হওয়া এ বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও। তিনি ঐক্যমত্য কমিশনের প্রধান।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক শুরু হয়। ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো মেয়াদের শেষ দিনে বৈঠকটি চলছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনে বৈঠকটি সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে।
এর আগে কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল মঙ্গলবার বহুল আকাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’ এর চূড়ান্ত অনুলিপি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে, সনদে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে কোনো সুপারিশ নেই। পরে অন্তর্বর্তী সরকার ও দলগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত সুপারিশ দেবে কমিশন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ৬টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।
প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ।
জুলাই জাতীয় সনদের তিনটি ভাগ রয়েছে। প্রথম ভাগে সনদের পটভূমি, দ্বিতীয় ভাগে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব এবং তৃতীয় ভাগে সনদ বাস্তবায়নের সাত দফা অঙ্গীকারনামা রয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু হওয়া এ বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও। তিনি ঐক্যমত্য কমিশনের প্রধান।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক শুরু হয়। ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো মেয়াদের শেষ দিনে বৈঠকটি চলছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনে বৈঠকটি সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে।
এর আগে কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল মঙ্গলবার বহুল আকাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’ এর চূড়ান্ত অনুলিপি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে, সনদে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে কোনো সুপারিশ নেই। পরে অন্তর্বর্তী সরকার ও দলগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত সুপারিশ দেবে কমিশন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ৬টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।
প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ।
জুলাই জাতীয় সনদের তিনটি ভাগ রয়েছে। প্রথম ভাগে সনদের পটভূমি, দ্বিতীয় ভাগে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব এবং তৃতীয় ভাগে সনদ বাস্তবায়নের সাত দফা অঙ্গীকারনামা রয়েছে।
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.