
১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১৩:২২
বরিশালের ৩টি নির্বাচনি এলাকায় শক্ত অবস্থানের জানান দিচ্ছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা সাবেক দুই সংসদ-সদস্যকে সামনে রেখে তাদের এই অবস্থান। তাদের সঙ্গে আছেন দলের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া), বরিশাল-৫ (সদর) ও পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তারা। বিভাগের ২১ নির্বাচনি এলাকার সবকটিতে প্রার্থী দিলেও এ ৩টি আসনে বিএনপির সামনে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়াবে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া): একটিমাত্র উপজেলা মঠবাড়িয়া নিয়ে গঠিত এই নির্বাচনি এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সাবেক সংসদ-সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী। বিএনপি-জাতীয় পার্টি ঘুরে চলতি বছরের আগস্টে ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন চারবারের সাবেক এই সংসদ-সদস্য। যে কোনো মূল্যে সংসদ-সদস্য হওয়ার টার্গেটে ফরাজীর এই দলবদল অবশ্য নতুন নয়। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথমবার সংসদ-সদস্য হন জাতীয় পার্টির টিকিটে। সেবার ভোট পান ২৯ হাজার ৮৩৭। পরেরবার ২০০১-এর নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ছেড়ে যোগ দেন বিএনপিতে। ৬৪ হাজার ৯৫৮ ভোট পেয়ে আবার নির্বাচিত হন। ২০০৮-এ তাকে আর মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি। সেবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে হেরে যান। ২০১৪ সালে পুনরায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ২৯ হাজার ৩৪২ ভোট পেয়ে যান সংসদে। ২০১৮-এর নির্বাচনে আবার জাতীয় পার্টিতে ফেরেন ফরাজী। লাঙ্গল প্রতীকে ভোট করে নির্বাচিত হন সংসদ-সদস্য। এরপর নামেন আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার চেষ্টায়। জাতীয় পার্টির সংসদ-সদস্য হয়েও সংসদে শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বক্তব্য দিতে থাকেন। অবশ্য তাকে দলে নেয়নি আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টিও দেয় মাইনাস করে। ফলে ২০২৪-এর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করলেও হেরে যান ফরাজী। এবার তিনি হয়েছেন হাতপাখার প্রার্থী। সকাল-বিকাল পোশাক পালটানোর মতো দল বদলালেও মঠবাড়িয়ায় রুস্তম আলী ফরাজীর রয়েছে ব্যক্তিগত ভোটব্যাংক। বহু বছর বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিয়ে দরিদ্র একটি শ্রেণির কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তিনি।
বরিশাল-৫ (সদর): বিএনপির ভোটের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত এই আসনে ইসলামী আন্দোলনের হয়ে ভোটে লড়বেন দলটির নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম। এই আসনে সিটি ও জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে বেশ কয়েকবার নিজেদের অবস্থানের জানান দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। সর্বশেষ সিটি নির্বাচনে শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই খোকন সেরনিয়াবাতের বিরুদ্ধে ভোটে লড়েন ফয়জুল। ভোট জালিয়াতির সেই নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের কর্মী-সমর্থকদের যেমন রাখা হয় হামলা-মামলার মুখে, তেমনই বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাননি বিএনপি-জামায়াতের ভোটাররা। ভোটের দিন আওয়ামী লীগের হামলায় গুরুতর আহত পর্যন্ত হন মেয়রপ্রার্থী ফয়জুল। এতকিছুর পরও ওই নির্বাচনে ৩৩ হাজারের বেশি ভোট পান তিনি। এছাড়া ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮’র জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রতিবার গড়ে ৩০ হাজারের বেশি ভোট পায় হাতপাখা। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ ৮ ইসলামী দলের ঐক্য যদি শেষ পর্যন্ত থাকে আর সবাই মিলে ফয়জুল করিমকে একক প্রার্থী দিলে এই আসনেও জিতেও আসতে পারেন ফয়জুল করীম।
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী): কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমানের রয়েছে এই নির্বাচনি এলাকায় বেশ শক্ত অবস্থান। ১৯৯৬-এর নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ-সদস্য নির্বাচন করেছিলেন তিনি। বিএনপি ছেড়ে হাতপাখায় যাওয়া এই নেতার সবচেয়ে বড় অর্জন ২০০১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ৩৮ হাজার ৯৮ ভোট পাওয়া। ষড়যন্ত্রসহ নানা কারণে দলীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে চলতি বছর বিএনপি ছেড়ে ইসলামী আন্দোলনে যোগ দেন মুস্তাফিজুর। এর পরপরই তাকে এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দলটি। এখানে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন। নির্বাচনি এলাকার দুই উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বিএনপির পাশাপাশি বেশ শক্ত অবস্থান ইসলামী আন্দোলনের এই প্রার্থীর। পেশায় চিকিৎসক মুস্তাফিজ গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিয়ে সমর্থন পাচ্ছেন বহু সাধারণ মানুষের। তাছাড়া মোশাররফের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাও ভেতরে ভেতরে তার সঙ্গে রাখছেন যোগাযোগ। কেবল বিএনপি নয়, দুই উপজেলায় থাকা আওয়ামী লীগের ভোটাররাও ঝুঁকছেন মুস্তাফিজের দিকে।
বরিশালের ৩টি নির্বাচনি এলাকায় শক্ত অবস্থানের জানান দিচ্ছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা সাবেক দুই সংসদ-সদস্যকে সামনে রেখে তাদের এই অবস্থান। তাদের সঙ্গে আছেন দলের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া), বরিশাল-৫ (সদর) ও পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তারা। বিভাগের ২১ নির্বাচনি এলাকার সবকটিতে প্রার্থী দিলেও এ ৩টি আসনে বিএনপির সামনে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়াবে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া): একটিমাত্র উপজেলা মঠবাড়িয়া নিয়ে গঠিত এই নির্বাচনি এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সাবেক সংসদ-সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী। বিএনপি-জাতীয় পার্টি ঘুরে চলতি বছরের আগস্টে ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন চারবারের সাবেক এই সংসদ-সদস্য। যে কোনো মূল্যে সংসদ-সদস্য হওয়ার টার্গেটে ফরাজীর এই দলবদল অবশ্য নতুন নয়। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথমবার সংসদ-সদস্য হন জাতীয় পার্টির টিকিটে। সেবার ভোট পান ২৯ হাজার ৮৩৭। পরেরবার ২০০১-এর নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ছেড়ে যোগ দেন বিএনপিতে। ৬৪ হাজার ৯৫৮ ভোট পেয়ে আবার নির্বাচিত হন। ২০০৮-এ তাকে আর মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি। সেবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে হেরে যান। ২০১৪ সালে পুনরায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ২৯ হাজার ৩৪২ ভোট পেয়ে যান সংসদে। ২০১৮-এর নির্বাচনে আবার জাতীয় পার্টিতে ফেরেন ফরাজী। লাঙ্গল প্রতীকে ভোট করে নির্বাচিত হন সংসদ-সদস্য। এরপর নামেন আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার চেষ্টায়। জাতীয় পার্টির সংসদ-সদস্য হয়েও সংসদে শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বক্তব্য দিতে থাকেন। অবশ্য তাকে দলে নেয়নি আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টিও দেয় মাইনাস করে। ফলে ২০২৪-এর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করলেও হেরে যান ফরাজী। এবার তিনি হয়েছেন হাতপাখার প্রার্থী। সকাল-বিকাল পোশাক পালটানোর মতো দল বদলালেও মঠবাড়িয়ায় রুস্তম আলী ফরাজীর রয়েছে ব্যক্তিগত ভোটব্যাংক। বহু বছর বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিয়ে দরিদ্র একটি শ্রেণির কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তিনি।
বরিশাল-৫ (সদর): বিএনপির ভোটের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত এই আসনে ইসলামী আন্দোলনের হয়ে ভোটে লড়বেন দলটির নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম। এই আসনে সিটি ও জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে বেশ কয়েকবার নিজেদের অবস্থানের জানান দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। সর্বশেষ সিটি নির্বাচনে শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই খোকন সেরনিয়াবাতের বিরুদ্ধে ভোটে লড়েন ফয়জুল। ভোট জালিয়াতির সেই নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের কর্মী-সমর্থকদের যেমন রাখা হয় হামলা-মামলার মুখে, তেমনই বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাননি বিএনপি-জামায়াতের ভোটাররা। ভোটের দিন আওয়ামী লীগের হামলায় গুরুতর আহত পর্যন্ত হন মেয়রপ্রার্থী ফয়জুল। এতকিছুর পরও ওই নির্বাচনে ৩৩ হাজারের বেশি ভোট পান তিনি। এছাড়া ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮’র জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রতিবার গড়ে ৩০ হাজারের বেশি ভোট পায় হাতপাখা। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ ৮ ইসলামী দলের ঐক্য যদি শেষ পর্যন্ত থাকে আর সবাই মিলে ফয়জুল করিমকে একক প্রার্থী দিলে এই আসনেও জিতেও আসতে পারেন ফয়জুল করীম।
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী): কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমানের রয়েছে এই নির্বাচনি এলাকায় বেশ শক্ত অবস্থান। ১৯৯৬-এর নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ-সদস্য নির্বাচন করেছিলেন তিনি। বিএনপি ছেড়ে হাতপাখায় যাওয়া এই নেতার সবচেয়ে বড় অর্জন ২০০১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ৩৮ হাজার ৯৮ ভোট পাওয়া। ষড়যন্ত্রসহ নানা কারণে দলীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে চলতি বছর বিএনপি ছেড়ে ইসলামী আন্দোলনে যোগ দেন মুস্তাফিজুর। এর পরপরই তাকে এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দলটি। এখানে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন। নির্বাচনি এলাকার দুই উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বিএনপির পাশাপাশি বেশ শক্ত অবস্থান ইসলামী আন্দোলনের এই প্রার্থীর। পেশায় চিকিৎসক মুস্তাফিজ গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিয়ে সমর্থন পাচ্ছেন বহু সাধারণ মানুষের। তাছাড়া মোশাররফের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাও ভেতরে ভেতরে তার সঙ্গে রাখছেন যোগাযোগ। কেবল বিএনপি নয়, দুই উপজেলায় থাকা আওয়ামী লীগের ভোটাররাও ঝুঁকছেন মুস্তাফিজের দিকে।
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:১৫
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:০৫
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:২৪

২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:১৫
বরিশালে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই কয়লা ও পাচারকাজে ব্যবহৃত একটি লাইটার ভেসেলসহ ১২ চোরাকারবারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ডের একটি দল। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কোস্ট গার্ড স্টেশন বরিশাল কোতোয়ালি থানাধীন চরমোনাই আনন্দ ঘাট-সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালে একটি সন্দেহজনক লাইটার ভেসেল তল্লাশি করা হয়। তল্লাশির পর ভেসেলটি থেকে ১ হাজার ১০০ টন চোরাই কয়লা জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ সময় চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোংলা হিরণ পয়েন্টে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজ থেকে এই কয়লা অসদুপায় অবলম্বন করে অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।
জব্দ করা কয়লা, পাচারকাজে ব্যবহৃত লাইটার ভেসেল এবং আটক ১২ চোরাকারবারিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা।
বরিশালে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই কয়লা ও পাচারকাজে ব্যবহৃত একটি লাইটার ভেসেলসহ ১২ চোরাকারবারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ডের একটি দল। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কোস্ট গার্ড স্টেশন বরিশাল কোতোয়ালি থানাধীন চরমোনাই আনন্দ ঘাট-সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালে একটি সন্দেহজনক লাইটার ভেসেল তল্লাশি করা হয়। তল্লাশির পর ভেসেলটি থেকে ১ হাজার ১০০ টন চোরাই কয়লা জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ সময় চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোংলা হিরণ পয়েন্টে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজ থেকে এই কয়লা অসদুপায় অবলম্বন করে অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।
জব্দ করা কয়লা, পাচারকাজে ব্যবহৃত লাইটার ভেসেল এবং আটক ১২ চোরাকারবারিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা।

২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:০৫
শয়তানের নিঃশ্বাসের খপ্পরে পড়ে ২৭ বছরের গৃহবধু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার মামলা হলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল কোতয়ালি থানার ওসিকে আসামির বিরুদ্ধে এজাহার করার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে উপরোক্ত নির্দেশ দেন।
নগরের ২৬ নং ওয়ার্ডের হরিনাফুলিয়া এলাকার আসমা আক্তার বাদী হয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরের রাসেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। বাদি মামলায় উল্লেখ করেন তার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আসামীর।
বাদির আইডি কার্ড সংশোধন করে দেওয়ার কথা বলে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে আসতে বলে। গত ১২ নভেম্বর বাদি বাস স্ট্যান্ড আসলে শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়া বাদিসহ তার নবজাত শিশু সন্তানকে ঢাকা নিয়ে যায়। এরপর ১২ ই নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাঁদিকে খুনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাদি স্বামীকে জানালে স্বামী ১৯ নভেম্বর ঢাকা গিয়ে বাদিকে উদ্ধার করে বরিশাল নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে ২৭বছরের ওই গৃহবধূ বৃহস্পতিবার বরিশাল আদালতে হাজির হয়ে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
শয়তানের নিঃশ্বাসের খপ্পরে পড়ে ২৭ বছরের গৃহবধু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার মামলা হলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল কোতয়ালি থানার ওসিকে আসামির বিরুদ্ধে এজাহার করার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে উপরোক্ত নির্দেশ দেন।
নগরের ২৬ নং ওয়ার্ডের হরিনাফুলিয়া এলাকার আসমা আক্তার বাদী হয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরের রাসেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। বাদি মামলায় উল্লেখ করেন তার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আসামীর।
বাদির আইডি কার্ড সংশোধন করে দেওয়ার কথা বলে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে আসতে বলে। গত ১২ নভেম্বর বাদি বাস স্ট্যান্ড আসলে শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়া বাদিসহ তার নবজাত শিশু সন্তানকে ঢাকা নিয়ে যায়। এরপর ১২ ই নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাঁদিকে খুনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাদি স্বামীকে জানালে স্বামী ১৯ নভেম্বর ঢাকা গিয়ে বাদিকে উদ্ধার করে বরিশাল নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে ২৭বছরের ওই গৃহবধূ বৃহস্পতিবার বরিশাল আদালতে হাজির হয়ে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
বাবুগঞ্জের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল ওহাব খানের সহধর্মিণী বাংলাদেশ প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকবার্তা দিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখা এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়। এসব সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেরিত পৃথক শোকবার্তায় তারা খালেদা ওহাবের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, 'খালেদা ওহাব দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের অতি আপনজন। তাঁর স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খান ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার। ১৯৮৯ সালে আততায়ীর গুলিতে আব্দুল ওহাব খান নিহত হওয়ার পরে খালেদা ওহাব একজন গৃহবধূ থেকে নিজের মেধা যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি থেকে জনগণের নেত্রী হয়ে ওঠেন। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন কাজ করে গেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাদের একজন স্বজন হারিয়েছে।'
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া শোকবার্তায় সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, 'খালেদা ওহাব শুধু একজন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন। ১৯৮৯ সালে স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খানের মৃত্যুর পরে তিনি তাঁর স্বামীর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পুরো একটা জীবন তিনি অবলীলায় খরচ করেছেন মানুষ ও মানবতার কল্যাণে। তিনি ছিলেন নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তিনি শিখিয়ে গেছেন কীভাবে একজন সাধারণ গৃহবধূ নারীকে সমাজের সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জীবনযুদ্ধে জয়ী এবং সফল হতে হয়। তিনি অদম্য ও জীবন সংগ্রামী নারীদের কাছে একজন আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।'
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভাগীয় সমন্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতা বলেন, 'বাবুগঞ্জে নারীর অগ্রযাত্রা এবং নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। জীবদ্দশায় তিনি বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সর্বোপরি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তিনি আমৃত্যু বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অসাধারণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, রান্নাবান্না এবং অতিথি আপ্যায়নে ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অনন্য। তাঁর শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। একজন কীর্তিমতী নারী হিসেবে তিনি ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন।'
উল্লেখ্য, বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারিণী খালেদা ওহাব ১৯৮৯ সালের উপ-নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পরবর্তী এরশাদ সরকারের উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তনের পরে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর স্বামী বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব খান আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে ওই বছরই অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি। যে সময়ে নারীরা ঠিকভাবে ঘর থেকেই বের হতে পারতেন না সেই সময়ে একজন নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিল অকল্পনীয় একটা ঘটনা। দেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনি একাধিকবার বিআরডিবি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টির বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন।
রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথেও আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ছাড়াও পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট পরিচালিত বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার বাবুগঞ্জ উপজেলা সভানেত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাড়ি বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দরিয়াবাদ গ্রামে।
গত মঙ্গলবার খালেদা ওহাব পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শান্তি সহায়ক সম্মেলনে যোগ দিতে বরিশাল থেকে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে তিনি রামপুরা এলাকায় তার ছোটবোনের বাসায় বেড়াতে গেলে বুধবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে নিকটস্থ ফরাজি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৪টার দিকে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, খালেদা ওহাব স্ট্রোকজনিত কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আছর চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। #
বাবুগঞ্জের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল ওহাব খানের সহধর্মিণী বাংলাদেশ প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকবার্তা দিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখা এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়। এসব সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেরিত পৃথক শোকবার্তায় তারা খালেদা ওহাবের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, 'খালেদা ওহাব দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের অতি আপনজন। তাঁর স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খান ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার। ১৯৮৯ সালে আততায়ীর গুলিতে আব্দুল ওহাব খান নিহত হওয়ার পরে খালেদা ওহাব একজন গৃহবধূ থেকে নিজের মেধা যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি থেকে জনগণের নেত্রী হয়ে ওঠেন। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন কাজ করে গেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাদের একজন স্বজন হারিয়েছে।'
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া শোকবার্তায় সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, 'খালেদা ওহাব শুধু একজন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন। ১৯৮৯ সালে স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খানের মৃত্যুর পরে তিনি তাঁর স্বামীর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পুরো একটা জীবন তিনি অবলীলায় খরচ করেছেন মানুষ ও মানবতার কল্যাণে। তিনি ছিলেন নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তিনি শিখিয়ে গেছেন কীভাবে একজন সাধারণ গৃহবধূ নারীকে সমাজের সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জীবনযুদ্ধে জয়ী এবং সফল হতে হয়। তিনি অদম্য ও জীবন সংগ্রামী নারীদের কাছে একজন আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।'
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভাগীয় সমন্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতা বলেন, 'বাবুগঞ্জে নারীর অগ্রযাত্রা এবং নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। জীবদ্দশায় তিনি বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সর্বোপরি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তিনি আমৃত্যু বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অসাধারণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, রান্নাবান্না এবং অতিথি আপ্যায়নে ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অনন্য। তাঁর শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। একজন কীর্তিমতী নারী হিসেবে তিনি ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন।'
উল্লেখ্য, বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারিণী খালেদা ওহাব ১৯৮৯ সালের উপ-নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পরবর্তী এরশাদ সরকারের উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তনের পরে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর স্বামী বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব খান আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে ওই বছরই অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি। যে সময়ে নারীরা ঠিকভাবে ঘর থেকেই বের হতে পারতেন না সেই সময়ে একজন নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিল অকল্পনীয় একটা ঘটনা। দেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনি একাধিকবার বিআরডিবি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টির বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন।
রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথেও আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ছাড়াও পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট পরিচালিত বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার বাবুগঞ্জ উপজেলা সভানেত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাড়ি বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দরিয়াবাদ গ্রামে।
গত মঙ্গলবার খালেদা ওহাব পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শান্তি সহায়ক সম্মেলনে যোগ দিতে বরিশাল থেকে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে তিনি রামপুরা এলাকায় তার ছোটবোনের বাসায় বেড়াতে গেলে বুধবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে নিকটস্থ ফরাজি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৪টার দিকে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, খালেদা ওহাব স্ট্রোকজনিত কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আছর চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। #

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.