Bkash

ভোলা

দেশ গড়ার স্বপ্ন বুকে নিয়ে শহীদ হন ভোলার ৪৮ যুবক

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

০৪ আগস্ট, ২০২৫ ১৩:২৩

প্রিন্ট এন্ড সেভ

দেশ গড়ার স্বপ্ন বুকে নিয়ে শহীদ হন ভোলার ৪৮ যুবক

২৪’র গণঅভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্রের বুলেট কেড়ে নেয় ভোলা জেলার ৪৬টি তাজা প্রাণ। এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে পদদলিত হয়ে ও পুকুরে ডুবে প্রাণ হারায় আরও দুজন। নিহত ৪৮ জনের অধিকাংশই ছিলেন দিনমজুর। তারা পরিবারের সদস্যদের মুখে দুবেলা দুমুঠো ভাত তুলে দেওয়ার আশায় পাড়ি জমান স্বপ্নের শহর ঢাকায়। কে জানতো? তারা একে একে কফিনবন্দি হয়ে ঘরে ফিরবেন।

স্বজন হারানোর ১ বছর পূর্ণ হলেও এসব শহীদ পরিবারের সদস্যদের গগনবিদারী কান্না আজও থামেনি। একদিকে স্বজন হারানোর বেদনা অন্যদিকে শহীদ পরিবারের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। এ দুইয়ে মিলে দিশেহারা দরিদ্র পরিবারগুলো। সরেজমিনে এমনই চিত্র দেখা গেছে। অন্যদিকে গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ তাদের।

নিহত ৪৮ জনের মধ্যে রয়েছেন ভোলা সদর উপজেলার ১২ জন, দৌলতখানের ৩ জন, বোরহানউদ্দিনের ৯ জন, লালমোহনের ১১ জন, চরফ্যাশনের ১২ জন ও তজুমুদ্দিনের একজন। এর মধ্যে গত ১৯ জুলাই এক দিনেই প্রাণ হারান ১৩ জন, ৪ আগস্ট ৭ জন ও ৫ আগস্ট ৮ জন।

ভোলা সদর উপজেলার বালিয়া গ্রামের মো. হারুন ও শাহিনুর বেগম দম্পতির ছোট ছেলে শহীদ মো. রনি। ছিলেন স্থানীয় নেয়ামতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে ঘরে বসে থাকতে পারেনি সে, ঢাকায় ভাইয়ের সঙ্গে টাইলসের কাজ করবেন জানিয়ে হঠাৎ বাড়ি ঢাকা চলে যান এবং আন্দোলনে সক্রিয় হন। পরবর্তীতে গত ৫ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়িতে গুলিতে নিহত হয় রনি। পরের দিন স্বজনরা মরদেহটি নিজ গ্রামে এনে বাড়ির দরজায় মসজিদের পাশে দাফন করেন।

আদরের সন্তানের কথা মনে পড়লেই কবরের কাছে ছুটে যান বাবা মো. হারুন। দুচোখের পানি ছেড়ে দুহাত তুলে আল্লাহর দরবারে ছেলের জন্য ফরিয়াদ করেন এ বাবা। ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ বাবা বলেন, আমার ছেলে রনির মতো অন্যান্য শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ আজও গড়ে ওঠেনি। মারামারি খুন চাঁদাবাজি রয়েই গেছে।

ভোলা সদর উপজেলার পুর্ব ইলিশা ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন মো. শামিম।

বড় ছেলে বড় সালমান (১০), মাহাদী (৬) আহম্মেদ (৪) স্ত্রী রোকেয়া বেগম আচমা ও গর্ভধারণী মাকে গ্রামের বাড়িতে রেখে ঢাকায় ব্যাচেলর থেকে ইলেকট্রনিক্স মিস্ত্রির কাজ করতেন। তার উপার্জিত অর্থেই চলতো পরিবারের ভরনপোষণ। গত ২০ জুলাই গুলিতে প্রাণ যায় শামিমের, পরেরদিন গ্রামের বাড়িতে এনে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। শামিমের ছোট ছোট ৩ সন্তান নিয়ে এখন বিপাকে রয়েছে পরিবারটি।

কথা হয় শহীদ শামিমের মা বিউটি বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার ছেলে শামিম দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। শামিমের ৩ ছেলে-স্ত্রী ও আমি মা আছি। শামিমের ৩ সন্তানের ভবিষ্যৎ কী? আমার ছেলে বেঁচে থাকলে তো সে’ই তার সন্তানদের ভবিষ্যত গড়ত।

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ছেলের চিকিৎসা না করাতে পারার আক্ষেপ তিলে তিলে শেষ করছে চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের শহীদ হাচনাইনের মা হাছিনা বেগমকে। ঢাকায় সে আকাশ টিভির ইন্টারনেটের কাজ করতো। ২১ জুলাই যাত্রাবাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

হাছিনা বেগম বলেন, আমার ছেলে বুকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েছি। কিন্তু চিকিৎসা দেয়নি, শেষমেশ মৃত বলে আমার ছেলের বুকে সীল মেরে দেয়। একই উপজেলার দুলারহাট থানার ওমরপুর ইউনিয়নের মুদি দোকানের কর্মচারী কিশোর ওমর ফারুকের বাবা মিলন ফরাজি বলেন, আমার ছেলেকে গুলি করে নির্মমভাবে মারা হয়েছে। আজ পর্যন্ত আমার ছেলেকে হত্যাকারীদের ধরা হয়নি এবং তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি।

ক্ষোভ ও দুঃখপ্রকাশ করে জুলাই আগস্টের ভোলার অন্যতম আন্দোলনকারী রাহিম ইসলাম বলেন, আমরা শহীদদের পরিবার ও আহতদের যথাযথ মর্যাদা দিতে পারিনি। বাংলাদেশের দায়িত্বশীলরা কেউ কেউ নির্বাচন নিয়ে, সংস্কার ও দল নিয়ে ব্যস্ত। জুলাইয়ের শহীদ পরিবার ও আহতদের নিয়ে কেউ ব্যস্ত না। মুখে মুখে বিচারের কথা শুনলেও দৃশ্যমান কিছু নেই। সরকারকে শহীদ পরিবারদের দ্রুত পুর্নবাসনের আহ্বান জানান তিনি।

ভোলার ৪৮ শহীদ পরিবারকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করবেন বলে জানান ভোলার জেলা প্রশাসক মো.আজাদ জাহান। তিনি বলেন, প্রতিটি শহীদ পরিবারের খোঁজখবর রাখছি। সরকারি বেসরকারি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ তাদের যেকোনো প্রয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি, ভবিষ্যতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এদিকে দ্রুত গণহত্যায় জড়িতদের বিচার ও পুর্নবাসনের দাবি শহীদ পরিবারদের।

আরও পড়ুন:

পঞ্চমবারের মতো শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত লালমোহন থানার সিরাজুল ইসলাম

মাসুম বিল্লাহ, লালমোহন

মাসুম বিল্লাহ, লালমোহন

১৪ আগস্ট, ২০২৫ ১৯:১৮

প্রিন্ট এন্ড সেভ

পঞ্চমবারের মতো শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত লালমোহন থানার সিরাজুল ইসলাম

ভোলা জেলার ১০টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) মধ্যে পঞ্চমবারের মতো শ্রেষ্ঠ হয়েছেন লালমোহন থানার মো. সিরাজুল ইসলাম। জুলাই মাসে থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ বিভিন্ন পুলিশিং কর্মকান্ড বিশেষ অবদান রাখায় তাকে শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত মাসিক কল্যাণ সভায় লালমোহন থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলামের হাতে সম্মাননা পুরস্কার ও সনদপত্র তুলে দেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ জাল টাকা উদ্ধার করায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন লালমোহন থানার এসআই মো. আবু ইউসুফ।

ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভালো কাজের স্বীকৃতি পেলে ভবিষ্যতের কর্মকান্ড আরো আগ্রহ সৃষ্টি হয়। আমাকে জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত করায় পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এই অর্জন কেবল আমার একার না, এটি আমার থানার সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনগণেরও।

এই পুরস্কারের মাধ্যমে আশা করছি থানা এলাকার সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আগামীতে আরো ভালো কাজ করা সম্ভব হবে। এ সময় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অরিত সরকার, মো. মেহেদী হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার (শিক্ষাণবীশ) মো. হুমায়ুন কবিরসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল মাসেও জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হয়েছিলেন লালমোহন থানার মো. সিরাজুল ইসলাম।

ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

১৩ আগস্ট, ২০২৫ ১৭:০৬

প্রিন্ট এন্ড সেভ

ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ভোলার মনপুরায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. সুজা উদ্দিন সুজনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে তাঁকে উপজেলার রামনেওয়াজ চৌধুরী বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। পুলিশ জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর আক্রমণের মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার মো. সুজা উদ্দিন সুজন ১ নম্বর মনপুরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি সৈয়দ আহম্মদের ছেলে।

মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান কবির দুপুরে জানান, মো. সুজনের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। পরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

লালমোহনে অগ্নিকান্ড কোটি টাকার ক্ষতি

মাসুম বিল্লাহ, লালমোহন

মাসুম বিল্লাহ, লালমোহন

১২ আগস্ট, ২০২৫ ১৮:৩১

প্রিন্ট এন্ড সেভ

লালমোহনে অগ্নিকান্ড কোটি টাকার ক্ষতি

ভোলার লালমোহন পৌরসভার হাইস্কুল সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডর ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত আনুমানিক ৪ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।

তবে এরইমধ্যে পুরোপুরি পুড়ে যায় ৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরো কয়েকটি দোকান। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডর সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।অগ্নিকাÐে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- পলি শো কর্নার, রাইট চয়েজ ফ্যাশন, নাফি ফ্যাশন, ফ্যাশন, নিউ রিফাত ফ্যাশন। এ ছাড়াও ওয়ান ফ্যাশন, হাদিস বস্ত্রালয়, ইভা ফ্যাশনসহ আরো কয়েকটি দোকানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

লালমোহন হাইস্কুল সুপার মার্কেট ব্যবসয়ী সমিতির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, অগ্নিকান্ডে ব্যবসায়ীদের অন্তত ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া ঘর মালিকদেরও আরো ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছি। আমরা এসব ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করে ইউএনওর কাছে পাঠিয়েছি।

আশা করছি উপজেলা প্রশাসন শিগগিরই এসব ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবেন। লালমোহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি।

বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এ অগ্নিকাÐের সূত্রপাত হতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। এ ছাড়া ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ চলছে। এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আজিজ জানান, আমরা ইতোমধ্যে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শুকনো খাবার এবং নগদ অর্থ সহযোগিতা দিয়েছি। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে। পরবর্তীতেকোনো বরাদ্দ এলে তা এই অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে দ্রুত সময়ে মধ্যে পৌঁছে দেয়া হবে।

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.