
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১১:৫০
জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ চূড়ান্ত করার শেষ পর্যায়ে রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে ৭ দফার ভিত্তিতে সনদের চূড়ান্ত খসড়া গত বৃহস্পতিবার রাতেই দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। এ সনদে স্বাক্ষর করবেন—প্রতিটি দলকে এমন দুজন নেতার নাম আজ শনিবারের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। তবে জুলাই সনদ ঘোষণা করার চেয়ে তা বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই বেশি সংকট দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে মতবিরোধ ও জটিলতা রয়েই গেছে। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাকে দায়ী করছে দলগুলো। জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত বৃহস্পতিবারও দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দিনব্যাপী আলোচনা হলেও তাতে জটিলতা কাটেনি। যদিও ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫-এর চূড়ান্ত ভাষ্যে সব মতের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে।
এর আগে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দফায় দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছে ঐকমত্য কমিশন। পরে আবারও একটি চূড়ান্ত সমন্বিত খসড়া দলগুলোকে দেওয়া হয়। এর পরে ২৯টি দল লিখিতভাবে তাদের মতামত কমিশনে পাঠায়। দলগুলোর পরামর্শের ভিত্তিতে কমিশন দুই দফায় বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে বৈঠক করে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। কিন্তু সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতভিন্নতা রয়ে গেছে।
বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—এই তিন দল তিন ধরনের পদ্ধতির কথা বলেছে। সংবিধান সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পক্ষে বিএনপি। তবে আগামী নির্বাচনের আগেই জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে এবং এনসিপি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন চায়। এ নিয়ে আগামী রোববার দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনা হবে বলে কমিশন সূত্র জানিয়েছে।
দফায় দফায় আলোচনা শেষে সাত দফা অঙ্গীকারনামার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এখন তাতে স্বাক্ষর করলে এই সনদ নিয়ে আদালতে কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না রাজনৈতিক দলগুলো।
স্বাক্ষরের জন্য এই চূড়ান্ত খসড়া গত বৃহস্পতিবারই রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়। কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমতসহ (নোট অব ডিসেন্ট) মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য হওয়ার কথা বলা হয়েছে এ চূড়ান্ত খসড়ায়।
এ ছাড়া সনদের চূড়ান্ত খসড়ার পটভূমি এবং অঙ্গীকারনামায় বেশকিছু বিষয়ে ভাষা ও শব্দগত পরিবর্তন হয়েছে। নতুন বিষয়ও যুক্ত হয়েছে। বিশেষ করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ সালের নির্বাচনসহ পরবর্তী বিভিন্ন ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহ এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয় স্থান পেয়েছে, যা আগে ছিল না। তবে সনদ বাস্তবায়নের আইনি বাধ্যবাধকতার যে সুপারিশ এসেছিল, চূড়ান্ত খসড়ায় তা নেই। এ ছাড়া কখন সনদ স্বাক্ষরিত হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
যেসব বিকল্প পদ্ধতি আলোচনায়: জানা গেছে, কোন রাজনৈতিক দল কোন উপায়ে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চায়, তা গত বৃহস্পতিবারের আলোচনার শুরুতে তুলে ধরে ঐকমত্য কমিশন। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে কমিশন কী পরামর্শ পেয়েছে, সেগুলোও উপস্থাপন করা হয়।
সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে লিখিতভাবে মোটাদাগে ছয়টি সুপারিশ পেয়েছে কমিশন। সেগুলো হলো—পূর্ণাঙ্গ সনদ বা এর কিছু অংশ নিয়ে গণভোট, রাষ্ট্রপতির নির্বাহী ক্ষমতার বলে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বাস্তবায়ন, গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, ত্রয়োদশ সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সনদের বিষয়গুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে এই মর্মে মতামত চাওয়া যে, অন্তর্বর্তী সরকার এই সনদ বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না। ওই বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন জানায়, জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবগুলো (ভিন্নমতসহ) চারভাবে বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলো হচ্ছে অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট ও বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ।
সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলোর বক্তব্য: বিএনপিসহ কিছু দলের অভিমত হলো—সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার আগামী সংসদ ছাড়া বাস্তবায়নের কোনো আইনি পথ নেই। বিএনপির মতে, সাংবিধানিক আদেশ জারি বা গণভোটের মতো প্রস্তাবগুলো অগ্রহণযোগ্য। এখনই এই সনদ কার্যকর হলে দেশে দুটি সংবিধান চলমান থাকবে। এদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বেশ কিছু দল চায় জুলাই সনদের একটি আইনি ভিত্তি এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে এর বাস্তবায়ন। গত বৃহস্পতিবার দলগুলো তাদের পৃথক মতামত আবারও তুলে ধরে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে যে প্রস্তাবগুলো এসেছে, সাধারণভাবে এগুলো অগ্রহণযোগ্য। দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা আছে। এই ধারাবাহিকতা না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকারসহ সব অবৈধ হয়ে যাবে।
জামায়াত ও এনসিপির প্রস্তাবের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, গণপরিষদ হয় নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য কিংবা সংবিধানের মূল কাঠামো ও চরিত্র পরিবর্তন করার জন্য। কিন্তু এখন সংবিধান আছে। জিয়াউর রহমানের আমলে প্রোক্লেমেশন জারির মাধ্যমে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয়নি।
তখন সংবিধান স্থগিত ছিল। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে ‘প্রোক্লেমেশন’ (ঘোষণা) জারি করা হয়েছিল। এগুলোর বৈধতা দেওয়া হয়েছিল পরবর্তী সংসদে। প্রোক্লেমেশনের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তনের এখতিয়ার কারও নেই। তা ছাড়া সনদ এখন বাস্তবায়ন করা হলে দুটি সংবিধান চলার মতো অবস্থা হবে। কোনো নাগরিক আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে আদালত প্রশ্ন করবেন, সংবিধান কে পরিবর্তন করল, কীভাবে করল, এই এখতিয়ার কারও আছে?
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তাদের পরামর্শ হলো, সব দল এখন এই অঙ্গীকারনামায় সই করবে। আগামী সংসদে সংস্কার প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করার জন্য দলগুলো যার যার নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। যারাই সংসদে যাবে, তারা এটার বাস্তবায়ন করবে।
জুলাই সনদকে লঙ্ঘন করে ভবিষ্যতে কোনো দলের রাজনীতি করার সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন না। সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর জবাব তারা দিতে পারবেন না বরং তারা অঙ্গীকার করতে পারবেন। আর এখন সনদ বাস্তবায়নের কোনো আইনগত ভিত্তি বের করা গেলে বিএনপি তাতে একমত হবে।
বৃহস্পতিবার কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, সংস্কার আগামী সংসদের হাতে ছেড়ে দিলে গণঅভ্যুত্থানের প্রতি অবিচার করা হবে। নামমাত্র সংস্কার হলে হবে না। এর আইনি ভিত্তি লাগবে। তার ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
গতকাল তিনি বলেন, বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই সংকট রয়ে গেছে। তবে হাতে এখনো যে সময় আছে আমরা পর্যালোচনা করছি। দেখা যাক কমিশন কী উদ্যোগ নেয়। কেননা, এখানে সরকারেরও দুর্বলতা আছে। তিনি বলেন, লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডারের (এলএফও) ভিত্তিতে ১৯৭০ সালের নির্বাচন হয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৭ সালেও বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে, যেটার ভিত্তিতে গণভোট হয়েছে। বিশেষ আদেশের মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। গণভোটের মাধ্যমেও হতে পারে। গণভোটের মাধ্যমে হলে সেটা টেকসই হবে।
যদি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে আমরা এতদিন এটা কী করলাম—সবকিছু অর্থহীন হয়ে যাবে, সবকিছু বিফলে যাবে। বিপ্লবটাই ধ্বংস হয়ে যাবে। বিপ্লবকে ধ্বংস করে পুরোনো ধারায় ফিরে গেলে রাষ্ট্র বিপদে পড়বে, নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাই। বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় দলের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সেদিন বলেছি, সংস্কার প্রস্তাবগুলোর টেকসই বাস্তবায়নের একমাত্র পথ নতুন সংবিধান। যদি পুরোনো সংবিধানই ঘষামাজা করা হয় এবং এটা বাস্তবায়নে পরবর্তী সরকারের মর্জির ওপর নির্ভর করতে হয়, তাহলে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম গতকাল বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই। আইনগতভাবে এটা যেভাবে কার্যকর করা দরকার আমরা চাই সেভাবেই কার্যকর হোক। কোনোটা রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্স দ্বারা, কোনোটা জাতীয় সংসদের দ্বারা এবং এমনভাবে করতে হবে যাতে টেকসই এবং আইনসম্মত হয়। আমরা সেভাবেই চিন্তা করছি এবং সেভাবেই বাস্তবায়ন চাই।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়টি বর্তমান সংবিধান কার্যকর থাকা অবস্থায় কঠিন ও সাংঘর্ষিক হবে। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করলে এতে জনগণের ইচ্ছা ও মতামতের প্রতিফলন ঘটবে, যা জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের সবচেয়ে বাস্তবসম্মত উপায়। পাশাপাশি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমেও এটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তী সাধারণ কোনো সংসদ জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি দিতে পারবে না। সংবিধানের ভিত্তিমূল পরিবর্তনে আইনি বৈধতা দিতে হলে গণভোট অথবা গণপরিষদ বা সংস্কার পরিষদ গঠনের মাধ্যমে বৈধতা দিতে হবে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনীতি বিশ্লেষক ড. মো. সাহাবুল হক বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হবে বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক মাইলফলক, যদি এটিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধাবাদী সমঝোতার বাইরে নিয়ে গিয়ে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ করা যায়। অন্যথায় এটি শুধু ইতিহাসের আরেকটি ব্যর্থ দলিলে পরিণত হবে।
তাই এ মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর দায়িত্ব পড়েছে কথায় নয়, কাজে দেখানোর, যাতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকেই কার্যকরের উপায় বের করতে হবে।
জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ চূড়ান্ত করার শেষ পর্যায়ে রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে ৭ দফার ভিত্তিতে সনদের চূড়ান্ত খসড়া গত বৃহস্পতিবার রাতেই দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। এ সনদে স্বাক্ষর করবেন—প্রতিটি দলকে এমন দুজন নেতার নাম আজ শনিবারের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। তবে জুলাই সনদ ঘোষণা করার চেয়ে তা বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই বেশি সংকট দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে মতবিরোধ ও জটিলতা রয়েই গেছে। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাকে দায়ী করছে দলগুলো। জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত বৃহস্পতিবারও দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দিনব্যাপী আলোচনা হলেও তাতে জটিলতা কাটেনি। যদিও ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫-এর চূড়ান্ত ভাষ্যে সব মতের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে।
এর আগে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দফায় দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছে ঐকমত্য কমিশন। পরে আবারও একটি চূড়ান্ত সমন্বিত খসড়া দলগুলোকে দেওয়া হয়। এর পরে ২৯টি দল লিখিতভাবে তাদের মতামত কমিশনে পাঠায়। দলগুলোর পরামর্শের ভিত্তিতে কমিশন দুই দফায় বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে বৈঠক করে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। কিন্তু সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতভিন্নতা রয়ে গেছে।
বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—এই তিন দল তিন ধরনের পদ্ধতির কথা বলেছে। সংবিধান সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পক্ষে বিএনপি। তবে আগামী নির্বাচনের আগেই জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে এবং এনসিপি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন চায়। এ নিয়ে আগামী রোববার দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনা হবে বলে কমিশন সূত্র জানিয়েছে।
দফায় দফায় আলোচনা শেষে সাত দফা অঙ্গীকারনামার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এখন তাতে স্বাক্ষর করলে এই সনদ নিয়ে আদালতে কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না রাজনৈতিক দলগুলো।
স্বাক্ষরের জন্য এই চূড়ান্ত খসড়া গত বৃহস্পতিবারই রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়। কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমতসহ (নোট অব ডিসেন্ট) মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য হওয়ার কথা বলা হয়েছে এ চূড়ান্ত খসড়ায়।
এ ছাড়া সনদের চূড়ান্ত খসড়ার পটভূমি এবং অঙ্গীকারনামায় বেশকিছু বিষয়ে ভাষা ও শব্দগত পরিবর্তন হয়েছে। নতুন বিষয়ও যুক্ত হয়েছে। বিশেষ করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ সালের নির্বাচনসহ পরবর্তী বিভিন্ন ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহ এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয় স্থান পেয়েছে, যা আগে ছিল না। তবে সনদ বাস্তবায়নের আইনি বাধ্যবাধকতার যে সুপারিশ এসেছিল, চূড়ান্ত খসড়ায় তা নেই। এ ছাড়া কখন সনদ স্বাক্ষরিত হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
যেসব বিকল্প পদ্ধতি আলোচনায়: জানা গেছে, কোন রাজনৈতিক দল কোন উপায়ে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চায়, তা গত বৃহস্পতিবারের আলোচনার শুরুতে তুলে ধরে ঐকমত্য কমিশন। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে কমিশন কী পরামর্শ পেয়েছে, সেগুলোও উপস্থাপন করা হয়।
সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে লিখিতভাবে মোটাদাগে ছয়টি সুপারিশ পেয়েছে কমিশন। সেগুলো হলো—পূর্ণাঙ্গ সনদ বা এর কিছু অংশ নিয়ে গণভোট, রাষ্ট্রপতির নির্বাহী ক্ষমতার বলে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বাস্তবায়ন, গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, ত্রয়োদশ সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সনদের বিষয়গুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে এই মর্মে মতামত চাওয়া যে, অন্তর্বর্তী সরকার এই সনদ বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না। ওই বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন জানায়, জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাবগুলো (ভিন্নমতসহ) চারভাবে বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এগুলো হচ্ছে অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট ও বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ।
সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলোর বক্তব্য: বিএনপিসহ কিছু দলের অভিমত হলো—সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার আগামী সংসদ ছাড়া বাস্তবায়নের কোনো আইনি পথ নেই। বিএনপির মতে, সাংবিধানিক আদেশ জারি বা গণভোটের মতো প্রস্তাবগুলো অগ্রহণযোগ্য। এখনই এই সনদ কার্যকর হলে দেশে দুটি সংবিধান চলমান থাকবে। এদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বেশ কিছু দল চায় জুলাই সনদের একটি আইনি ভিত্তি এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে এর বাস্তবায়ন। গত বৃহস্পতিবার দলগুলো তাদের পৃথক মতামত আবারও তুলে ধরে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে যে প্রস্তাবগুলো এসেছে, সাধারণভাবে এগুলো অগ্রহণযোগ্য। দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা আছে। এই ধারাবাহিকতা না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকারসহ সব অবৈধ হয়ে যাবে।
জামায়াত ও এনসিপির প্রস্তাবের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, গণপরিষদ হয় নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য কিংবা সংবিধানের মূল কাঠামো ও চরিত্র পরিবর্তন করার জন্য। কিন্তু এখন সংবিধান আছে। জিয়াউর রহমানের আমলে প্রোক্লেমেশন জারির মাধ্যমে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয়নি।
তখন সংবিধান স্থগিত ছিল। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে ‘প্রোক্লেমেশন’ (ঘোষণা) জারি করা হয়েছিল। এগুলোর বৈধতা দেওয়া হয়েছিল পরবর্তী সংসদে। প্রোক্লেমেশনের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তনের এখতিয়ার কারও নেই। তা ছাড়া সনদ এখন বাস্তবায়ন করা হলে দুটি সংবিধান চলার মতো অবস্থা হবে। কোনো নাগরিক আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে আদালত প্রশ্ন করবেন, সংবিধান কে পরিবর্তন করল, কীভাবে করল, এই এখতিয়ার কারও আছে?
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তাদের পরামর্শ হলো, সব দল এখন এই অঙ্গীকারনামায় সই করবে। আগামী সংসদে সংস্কার প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করার জন্য দলগুলো যার যার নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। যারাই সংসদে যাবে, তারা এটার বাস্তবায়ন করবে।
জুলাই সনদকে লঙ্ঘন করে ভবিষ্যতে কোনো দলের রাজনীতি করার সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন না। সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর জবাব তারা দিতে পারবেন না বরং তারা অঙ্গীকার করতে পারবেন। আর এখন সনদ বাস্তবায়নের কোনো আইনগত ভিত্তি বের করা গেলে বিএনপি তাতে একমত হবে।
বৃহস্পতিবার কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, সংস্কার আগামী সংসদের হাতে ছেড়ে দিলে গণঅভ্যুত্থানের প্রতি অবিচার করা হবে। নামমাত্র সংস্কার হলে হবে না। এর আইনি ভিত্তি লাগবে। তার ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
গতকাল তিনি বলেন, বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই সংকট রয়ে গেছে। তবে হাতে এখনো যে সময় আছে আমরা পর্যালোচনা করছি। দেখা যাক কমিশন কী উদ্যোগ নেয়। কেননা, এখানে সরকারেরও দুর্বলতা আছে। তিনি বলেন, লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডারের (এলএফও) ভিত্তিতে ১৯৭০ সালের নির্বাচন হয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৭ সালেও বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে, যেটার ভিত্তিতে গণভোট হয়েছে। বিশেষ আদেশের মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। গণভোটের মাধ্যমেও হতে পারে। গণভোটের মাধ্যমে হলে সেটা টেকসই হবে।
যদি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে আমরা এতদিন এটা কী করলাম—সবকিছু অর্থহীন হয়ে যাবে, সবকিছু বিফলে যাবে। বিপ্লবটাই ধ্বংস হয়ে যাবে। বিপ্লবকে ধ্বংস করে পুরোনো ধারায় ফিরে গেলে রাষ্ট্র বিপদে পড়বে, নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাই। বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় দলের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সেদিন বলেছি, সংস্কার প্রস্তাবগুলোর টেকসই বাস্তবায়নের একমাত্র পথ নতুন সংবিধান। যদি পুরোনো সংবিধানই ঘষামাজা করা হয় এবং এটা বাস্তবায়নে পরবর্তী সরকারের মর্জির ওপর নির্ভর করতে হয়, তাহলে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম গতকাল বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই। আইনগতভাবে এটা যেভাবে কার্যকর করা দরকার আমরা চাই সেভাবেই কার্যকর হোক। কোনোটা রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্স দ্বারা, কোনোটা জাতীয় সংসদের দ্বারা এবং এমনভাবে করতে হবে যাতে টেকসই এবং আইনসম্মত হয়। আমরা সেভাবেই চিন্তা করছি এবং সেভাবেই বাস্তবায়ন চাই।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়টি বর্তমান সংবিধান কার্যকর থাকা অবস্থায় কঠিন ও সাংঘর্ষিক হবে। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করলে এতে জনগণের ইচ্ছা ও মতামতের প্রতিফলন ঘটবে, যা জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের সবচেয়ে বাস্তবসম্মত উপায়। পাশাপাশি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমেও এটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তী সাধারণ কোনো সংসদ জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি দিতে পারবে না। সংবিধানের ভিত্তিমূল পরিবর্তনে আইনি বৈধতা দিতে হলে গণভোট অথবা গণপরিষদ বা সংস্কার পরিষদ গঠনের মাধ্যমে বৈধতা দিতে হবে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনীতি বিশ্লেষক ড. মো. সাহাবুল হক বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হবে বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক মাইলফলক, যদি এটিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধাবাদী সমঝোতার বাইরে নিয়ে গিয়ে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ করা যায়। অন্যথায় এটি শুধু ইতিহাসের আরেকটি ব্যর্থ দলিলে পরিণত হবে।
তাই এ মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর দায়িত্ব পড়েছে কথায় নয়, কাজে দেখানোর, যাতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকেই কার্যকরের উপায় বের করতে হবে।
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১৯:১৬
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১৮:৫৮
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১৭:৫২
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১৭:৩৫

০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১৮:৫৮
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও লক্ষ্মীপুর-২ (সদর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, দেশে একটা নির্বাচন হবে। পক্ষে-বিপক্ষে তো থাকতেই হবে। সেটা রাজনৈতিক দলের আদর্শভিত্তিক থাকে। যার যার আদর্শকে ধারণ করে যদি কথা বলি, কোনো আদর্শের মধ্যে ‘নো হাংকি পাংকি’ থাকতে পারে, এটা আমি মনে করি না। যে ভাষায় আমরা চলি, সেই ভাষা আমরা তুলে ধরি, সেই ভাষায় আমরা কথা বলি।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা শ্রমিক দলের নতুন কমিটির পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশির ভিলা হলরুমে এ আয়োজন করা হয়।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে এ্যানি বলেন, একজন ইসলামী দলের বক্তা গতকাল যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটা জনগণ পছন্দ করেনি। একটা দলের নায়েবে আমির, দায়িত্বশীল লোক, কিভাবে বলে ‘নো হাংকি পাংকি’। এটা কি রাজনৈতিক ভাষা হলো। এটা সাধারণ মানুষের গ্রহণযোগ্যতা পায়? রাজনৈতিক নেতা যদি এ ধরনের কথা বলেন, সাধারণ মানুষের উপহাস ও অবজ্ঞা করা ছাড়া আমি মনে করি আর কিছু থাকে না।
তিনি বলেন, রাজনীতি অভিজ্ঞতার ব্যাপার। মনে করেছিলাম তিনি যে দায়িত্বে আছেন, এক সময় ছাত্র রাজনীতি করেছেন, ডাক্তার, সেইভাবেই কথা বলবেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত পাইনি।
এ্যানি বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের পালস বুঝি, গ্রামে যাই, ঘরে ঘরে যাই, গ্রামে গ্রামে গিয়েছি, যাচ্ছি। বিএনপি সাধারণ মানুষের দল, গণমানুষের দল, প্রেসিডেন্ট জিয়ার দল, সহজ স্বাভাবিক রাজনীতি, কঠিন কিছু না। আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ছাত্র রাজনীতি করেছি। আমরাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। রাজনীতি শিখিয়েছি, শিখেছি। রাজনীতি গ্রামের মানুষের সঙ্গে কিভাবে করতে হয় কম-বেশি আমাদের জানা আছে; কিন্তু গতকালকে জামায়াতে ইসলামীর এই ভয়েস আমাদের ভালো লাগেনি, পছন্দ হয়নি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রত্যেক ঘরে ঘরে মা-বোনদের কাছে যাবেন, সালাম দিবেন। বেগম খালেদা জিয়ার সালাম দিবেন, তারেক রহমানের সালাম দিবেন, ধানের শীষের সালাম দিবেন, আমার সালাম দিবেন। বিএনপি আমরা যারা করি, যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করেছেন, লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, সবার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান আছে।
জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাহীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান, বাফুফের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপী, বিএনপি নেতা হাফিজুর রহমান, নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি আবুল হাশেম, বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল আলীম হুমায়ুন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন ও জেলা কৃষক দলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন প্রমুখ।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও লক্ষ্মীপুর-২ (সদর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, দেশে একটা নির্বাচন হবে। পক্ষে-বিপক্ষে তো থাকতেই হবে। সেটা রাজনৈতিক দলের আদর্শভিত্তিক থাকে। যার যার আদর্শকে ধারণ করে যদি কথা বলি, কোনো আদর্শের মধ্যে ‘নো হাংকি পাংকি’ থাকতে পারে, এটা আমি মনে করি না। যে ভাষায় আমরা চলি, সেই ভাষা আমরা তুলে ধরি, সেই ভাষায় আমরা কথা বলি।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা শ্রমিক দলের নতুন কমিটির পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশির ভিলা হলরুমে এ আয়োজন করা হয়।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে এ্যানি বলেন, একজন ইসলামী দলের বক্তা গতকাল যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটা জনগণ পছন্দ করেনি। একটা দলের নায়েবে আমির, দায়িত্বশীল লোক, কিভাবে বলে ‘নো হাংকি পাংকি’। এটা কি রাজনৈতিক ভাষা হলো। এটা সাধারণ মানুষের গ্রহণযোগ্যতা পায়? রাজনৈতিক নেতা যদি এ ধরনের কথা বলেন, সাধারণ মানুষের উপহাস ও অবজ্ঞা করা ছাড়া আমি মনে করি আর কিছু থাকে না।
তিনি বলেন, রাজনীতি অভিজ্ঞতার ব্যাপার। মনে করেছিলাম তিনি যে দায়িত্বে আছেন, এক সময় ছাত্র রাজনীতি করেছেন, ডাক্তার, সেইভাবেই কথা বলবেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত পাইনি।
এ্যানি বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের পালস বুঝি, গ্রামে যাই, ঘরে ঘরে যাই, গ্রামে গ্রামে গিয়েছি, যাচ্ছি। বিএনপি সাধারণ মানুষের দল, গণমানুষের দল, প্রেসিডেন্ট জিয়ার দল, সহজ স্বাভাবিক রাজনীতি, কঠিন কিছু না। আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ছাত্র রাজনীতি করেছি। আমরাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। রাজনীতি শিখিয়েছি, শিখেছি। রাজনীতি গ্রামের মানুষের সঙ্গে কিভাবে করতে হয় কম-বেশি আমাদের জানা আছে; কিন্তু গতকালকে জামায়াতে ইসলামীর এই ভয়েস আমাদের ভালো লাগেনি, পছন্দ হয়নি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রত্যেক ঘরে ঘরে মা-বোনদের কাছে যাবেন, সালাম দিবেন। বেগম খালেদা জিয়ার সালাম দিবেন, তারেক রহমানের সালাম দিবেন, ধানের শীষের সালাম দিবেন, আমার সালাম দিবেন। বিএনপি আমরা যারা করি, যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করেছেন, লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, সবার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান আছে।
জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাহীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান, বাফুফের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপী, বিএনপি নেতা হাফিজুর রহমান, নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি আবুল হাশেম, বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল আলীম হুমায়ুন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন ও জেলা কৃষক দলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন প্রমুখ।

০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১৫:২৩
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে লাগা আগুনের ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনকালে মোবাইল (বাটন) ফোন লুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করায় এক আনসার সদস্যকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে ওই আনসার সদস্য নাইট শিফটে দায়িত্ব পালনের সময় এ ঘটনা ঘটে। বহিষ্কৃত আনসার সদস্যের নাম জেনারুল ইসলাম।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-পরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকউজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নাইট শিফটে দায়িত্ব পালন করছিলেন জেনারুল ইসলাম। দায়িত্বে থাকাকালীন লোভের বশবর্তী হয়ে পোড়া ভবনের ভেতর ভস্মীভূত দ্রব্যের মাঝে থাকা কিছু বাটন ফোন লুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় ঘটনাস্থলেই ধরা পড়েন অভিযুক্ত আনসার সদস্য।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত অপরাধে জেনারুল ইসলামকে তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর দ্রুততম সময়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে বাহিনী একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এতে দীর্ঘদিনের কিছু অনৈতিক চর্চার প্রবণতা হ্রাস পেলেও সম্পূর্ণ নির্মূলের জন্য বাহিনীতে এরইমধ্যে মনস্তাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা আরও জোরদার করা হয়েছে।
আনসার বাহিনীর এ কর্মকর্তা আরও জানান, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অল্প বেতনে দায়িত্ব পালনকারী আনসার সদস্যদের জীবিকার মৌলিক চাহিদা পূরণও অনেক সময় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য বাহিনী প্রধান এরইমধ্যে পে কমিশন চেয়ারম্যানের কাছে অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের যৌক্তিক বেতন বৃদ্ধির আবেদন করেছেন, যেন তাদের নৈতিক ও প্রেষণামূলক অবস্থান আরও দৃঢ় হয়।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও কেপিআই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতা, সততা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। কোনো সদস্যের ব্যক্তিগত অনিয়ম বা শৃঙ্খলাভঙ্গমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না হয়- সে বিষয়ে বাহিনী সর্বদা কঠোর ও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও সদস্যদের সার্বিক কল্যাণধর্মী কার্যক্রমের মাধ্যমে এ ধরনের বিচ্ছিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপে বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ততা ভবিষ্যতে জিরো টলারেন্স নীতির আওতায় আরও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে লাগা আগুনের ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনকালে মোবাইল (বাটন) ফোন লুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করায় এক আনসার সদস্যকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে ওই আনসার সদস্য নাইট শিফটে দায়িত্ব পালনের সময় এ ঘটনা ঘটে। বহিষ্কৃত আনসার সদস্যের নাম জেনারুল ইসলাম।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-পরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকউজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নাইট শিফটে দায়িত্ব পালন করছিলেন জেনারুল ইসলাম। দায়িত্বে থাকাকালীন লোভের বশবর্তী হয়ে পোড়া ভবনের ভেতর ভস্মীভূত দ্রব্যের মাঝে থাকা কিছু বাটন ফোন লুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় ঘটনাস্থলেই ধরা পড়েন অভিযুক্ত আনসার সদস্য।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত অপরাধে জেনারুল ইসলামকে তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর দ্রুততম সময়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে বাহিনী একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এতে দীর্ঘদিনের কিছু অনৈতিক চর্চার প্রবণতা হ্রাস পেলেও সম্পূর্ণ নির্মূলের জন্য বাহিনীতে এরইমধ্যে মনস্তাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা আরও জোরদার করা হয়েছে।
আনসার বাহিনীর এ কর্মকর্তা আরও জানান, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অল্প বেতনে দায়িত্ব পালনকারী আনসার সদস্যদের জীবিকার মৌলিক চাহিদা পূরণও অনেক সময় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য বাহিনী প্রধান এরইমধ্যে পে কমিশন চেয়ারম্যানের কাছে অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের যৌক্তিক বেতন বৃদ্ধির আবেদন করেছেন, যেন তাদের নৈতিক ও প্রেষণামূলক অবস্থান আরও দৃঢ় হয়।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও কেপিআই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতা, সততা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। কোনো সদস্যের ব্যক্তিগত অনিয়ম বা শৃঙ্খলাভঙ্গমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না হয়- সে বিষয়ে বাহিনী সর্বদা কঠোর ও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও সদস্যদের সার্বিক কল্যাণধর্মী কার্যক্রমের মাধ্যমে এ ধরনের বিচ্ছিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপে বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ততা ভবিষ্যতে জিরো টলারেন্স নীতির আওতায় আরও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

০৬ নভেম্বর, ২০২৫ ২২:২৭
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘চক্রান্তের গোপন পথে আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা প্রায় ১৬ বছর গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে রাষ্ট্রক্ষমতাকে হাতের মুঠোর মধ্যে ধরে রাখে। এদের নতজানু নীতির কারণেই দেশের সার্বভৌমত্ব দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়েছিল।’
৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বিবৃতিটি পাঠান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বিবৃতিতে তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতাকর্মীদেরকে বিভৎস নির্মমতায় দমন করেছে, আয়নাঘর, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ দুর্নীতি ও অপশাসনের এক ভয়াল রাজত্ব কায়েম করেছিল। ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে বহু বছর মুক্তি দেওয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার মহিমান্বিত আত্মদানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্টরা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। মানুষের মধ্যে গণতন্ত্রের মুক্তির পথ প্রসারিত হয়েছে। এখন চূড়ান্ত গণতন্ত্রের চর্চার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনসহ গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজে ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা পরিকল্পিতভাবে দেশীয় কৃষ্টি, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর আগ্রাসন চালাতে সুযোগ দিয়েছিল। তাই আমি মনে করি ৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী গণতন্ত্র বিনির্মাণ করতে হবে। আর সেজন্য জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মমুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।’
বিবৃতিতে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘তাদের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করি।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব শুধু মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা নয়, এ দেশে আধিপত্যবাদ বিরোধী জাতীয়তাবাদী রাজনীতির অভ্যুদয়ের সূচনা। সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা পায়। ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত হয়ে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও গণতন্ত্র পুণরুজ্জীবনের অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী নিজ স্বার্থে দেশকে আধিপত্যবাদের থাবার মধ্যে ঠেলে দেয়। এর উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাকে চিরদিনের জন্য ধরে রাখা। সেজন্য একদলীয় বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সংগত অধিকারগুলোকে হরণ করে। দেশমাতৃকার এই চরম সংকটকালে ৭৫ এর ৩ নভেম্বর কুচক্রীরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির এই গভীর সংকটকালে ৭ নভেম্বর স্বজাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় সৈনিক এবং জনতার ঢলে রাজপথে এক অনন্য সংহতির স্ফুরণ ঘটে এবং স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান মুক্ত হন। এই পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয় এবং গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু আধিপত্যবাদী শক্তির এ দেশীয় এজেন্টরা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনো ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘চক্রান্তের গোপন পথে আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা প্রায় ১৬ বছর গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে রাষ্ট্রক্ষমতাকে হাতের মুঠোর মধ্যে ধরে রাখে। এদের নতজানু নীতির কারণেই দেশের সার্বভৌমত্ব দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়েছিল।’
৭ নভেম্বর মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বিবৃতিটি পাঠান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বিবৃতিতে তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতাকর্মীদেরকে বিভৎস নির্মমতায় দমন করেছে, আয়নাঘর, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ দুর্নীতি ও অপশাসনের এক ভয়াল রাজত্ব কায়েম করেছিল। ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে বহু বছর মুক্তি দেওয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার মহিমান্বিত আত্মদানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্টরা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। মানুষের মধ্যে গণতন্ত্রের মুক্তির পথ প্রসারিত হয়েছে। এখন চূড়ান্ত গণতন্ত্রের চর্চার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনসহ গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজে ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা পরিকল্পিতভাবে দেশীয় কৃষ্টি, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর আগ্রাসন চালাতে সুযোগ দিয়েছিল। তাই আমি মনে করি ৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী গণতন্ত্র বিনির্মাণ করতে হবে। আর সেজন্য জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মমুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।’
বিবৃতিতে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘তাদের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করি।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব শুধু মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা নয়, এ দেশে আধিপত্যবাদ বিরোধী জাতীয়তাবাদী রাজনীতির অভ্যুদয়ের সূচনা। সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা পায়। ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত হয়ে সিপাহী-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও গণতন্ত্র পুণরুজ্জীবনের অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী নিজ স্বার্থে দেশকে আধিপত্যবাদের থাবার মধ্যে ঠেলে দেয়। এর উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতাকে চিরদিনের জন্য ধরে রাখা। সেজন্য একদলীয় বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সংগত অধিকারগুলোকে হরণ করে। দেশমাতৃকার এই চরম সংকটকালে ৭৫ এর ৩ নভেম্বর কুচক্রীরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির এই গভীর সংকটকালে ৭ নভেম্বর স্বজাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় সৈনিক এবং জনতার ঢলে রাজপথে এক অনন্য সংহতির স্ফুরণ ঘটে এবং স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান মুক্ত হন। এই পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয় এবং গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু আধিপত্যবাদী শক্তির এ দেশীয় এজেন্টরা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনো ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।’

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.