২৯ মে, ২০২৫ ১০:৩৬
তরুণ সাংবাদিক খন্দকার রাকিবকে হত্যাচেষ্টার যে নাটক সাজানো হয়েছিল তা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এখন মূল ঘটনা ভিন্নদিকে প্রভাবিত করতে ঘটনার নায়ক নামধারী সাংবাদিক নেতা এসএম জাকির হোসেন নতুন ছকে এগিয়েছে। উল্টো মূলধারার সাংবাদিক রাকিবসহ তারই সংগঠনের অপর নেতা হাসিবুল ইসলামকে আইনের মাধ্যমে দৌড়ের ওপরে রাখতে সাজিয়ে নতুন এক নাটক। সেক্ষেত্রে আত্মরক্ষায় পাল্টা মামলা দায়ের করার অভিপ্রায়ে হামলার মূলহোতা আল আমিন সাগরের পরিবারের পক্ষ থেকে কাউনিয়া থানায় একটি এজাহার দাখিল করে। এর আগে আল আমিন সাগরকে গুরুতর আহত দেখিয়ে নাটকীয় কায়দায় ঢাকায় পাঠানো হয়।
বিভিন্ন সূত্রের ধারণা, ০১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাকিবের ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে মামলা অবধারিত এবং হুকুমদাতা এসএম জাকিরের সম্পৃক্ততা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই কৌশলী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পুলিশের কাছে বিষয়টি খোলসা হলেও বিভিন্ন কায়দায় তাদের প্রভাবিত এবং চাপের মুখে রেখেছে, অন্তত জাকিরকে যেন আসামী না করা হয়। নয়া এই মিশন সফল করতে বরিশাল মিডিয়ার ভগবানরূপী আরেক নেতাকে মাঠে নামানো হয়েছে, যে কিনা প্রথম পদক্ষেপেই তালগোল পাকিয়ে ফেলে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে, হচ্ছেন ঢের সমালোচিত।
উল্লেখ্য, এসএম জাকির সাংবাদিক না হলেও ঘটনাচক্রে সাংবাদিকদের একাংশের নেতৃত্ব নেওয়ার পর এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-ভূমিদস্যুতা ও প্রতারণার অভিযোগে অন্তত ৫টি মামলাসহ সাতটি সাধারণ ডায়েরির অস্থিত্ব পাওয়া গেছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা যখন কথিত এই সাংবাদিক নেতার অতীত ইতিহাস-ইতিবৃত্ত খুঁজছে, ঠিক তখনই খন্দকার রাকিবকে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ, সম্প্রতি জাকিরসহ তার ৬ অনুসারীর বিরুদ্ধে এই তরুণ সাংবাদিক ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করে ফিরে আসার সপ্তাহখানের মাথায় এই হামলার ঘটনা ঘটলো।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে যে, রাকিবকে বাগে আনতে একটি উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরিতে এক নারীকে ব্যবহার করা হয়। স্বরোডের বাসিন্দা এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত তানিয়া আক্তার নামক ওই নারী একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ তুলে কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। সেক্ষেত্রেও রয়েছে নাটকীয়তা। ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তানিয়াকে ব্যবহার করে কথিত সাংবাদিক নেতা জাকিরের অনুসারীরা বিভিন্ন কায়দায় সংবাদ প্রকাশ করলে এই বিষয়ে কাউনিয়া থানায় একটি মামলা দায়েরর উদ্দেশে অভিযোগ দেওয়া হয়। মামলাটি গ্রহণ প্রক্রিয়া, তখন তানিয়াকে জাকিরের এক অনুসারী যে কী না, কোতয়ালি থানা পুলিশের দালাল হিসেবে চিহ্নিত, এক তরুণ কোতয়ালি থানায় ওই মামলাটি দায়ের করতে সহায়তা করে বলে জানা যায়।
তানিয়া জানান, তার এই সিদ্ধান্ত নিজের নয়, অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, বিষয়টি ভুল অনুধাবন করে একই এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক হাসিবুল ইসলামের দ্বারস্থ হন সামাজিক কায়দায় ওই তরুণের সাথে আইনগত লড়াই থেকে বিরত থাকতে একটি আপসরফায় যেতে। সেই অনুযায়ী অনুরোধের প্রেক্ষাপটে ১ সেপ্টম্বর সন্ধ্যায় স্বরোডে তানিয়ার বাসার সামনে যান হাসিব।
একটি নির্ভরযোগ সূত্র জানায়, তানিয়ার সাথে হাসিবের সমঝোতা বৈঠকের খবর কোন এক মাধ্যম অবগত হয় এসএম জাকির। তখনই একঢিলে দুই পাখি মারার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। জাকিরের সাথে হাসিবের নীতিগত দ্বন্দ্ব থাকায় পরিকল্পনা ছিল, ওই নারীর ঘরে হাসিব প্রবেশ করা মাত্র চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে অবরুদ্ধ করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া। সেখানে আরেকটি বিষয় হচ্ছে, হাসিবকে অবরুদ্ধ করে রাখলে সঙ্গত কারণে তারই সংগঠনের নেতা খন্দকার রাকিব ঘটনাস্থলে অবধারিত আসবেন, এমনটি ভেবেই এসএম জাকির তার একদল ক্যাডার বাহিনীকে তানিয়ার বাসার চারপাশে আগেভাগেই অবস্থান ঘটান। পরিকল্পনা মাফিক ঘটেছেও তাই।
হাসিব ষড়যন্ত্রে অবরুদ্ধ, এমন খবরে খন্দকার রাকিব সেখানে একাকী পৌছা মাত্র ওই ক্যাডার বাহিনী তার ওপরে আচমকা হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত ক্যাডার বাহিনীর হামলায় রাকিব রক্তাক্ত জখম হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এই হামলার ঘটনার সাথে এক মাত্র আল আমিন পলাশপুরের বাসিন্দা এবং জাকিরের মালিকানাধীন পত্রিকায় কর্মরত। বাকি হামলাকারীদের কারও বাড়ি সাহেবেরহাট, আবার কেউ রুপাতলী এবং কাজিরচরের বাসিন্দা। এরা সকলেই জাকিরের চিহ্নিত অনুসারী হিসেবে বরিশালের মিডিয়াসহ সামাজিক ও প্রশাসনিক মহলে কমবেশি পরিচিত। স্থানীয়দের ভাষ্য, হামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই মিশনে অংশ নেওয়া যুবকরা ঘটনাস্থলে উচ্চস্বরে জাকিরের সাথে একাধিক দফা সেলফোনে যোগাযোগ রেখে নির্দেশনা নিচ্ছিল এবং প্রতি মুহূর্তের পৌছে দিচ্ছিল।
উদ্ভুত এই পরিস্থিতিতে কাউনিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে তানিয়া স্বীকার করেন যে, তার বাসায় হাসিবুলের আগমনের হেতু হচ্ছে তার মামলা নিয়ে আলাপচারিতার মাধ্যমে একটি সামাজিক ফয়সালায় যাওয়ার ক্ষেত্রফল তৈরি করা। কিন্তু কিভাবে জাকিরের অনুসরাীরা সেখানে অতি উৎসাহী হয়ে অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে তিনিও বিস্মিত। এই ঘটনায় প্রমাণ করে হাসিবকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক রাকিবকে ঘটনাস্থলে আসতে বাধ্য করা হয়। এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মাঝে তাকে হত্যা করে দায়ভার অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার সম্ভবত পরিকল্পনা ছিল। সেক্ষেত্রে তানিয়া হতে পারতো জাকিরের পরিকল্পনার ‘বলিরপাঠা’।
এই হত্যার মিশনটি ব্যর্থসহ ঘটনায় কারা জড়িত এবং কার নির্দেশে হামলাকারী স্বরোডে তানিয়ার বাসার সামনে এসেছিল, তা খোলসা হয়ে গেলে বিভিন্ন মহলে জাকিরকে নিয়ে ধিক্কার শুরু হয়। প্রশাসনও বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল, বিভিন্ন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে। অন্যদিকে আহত রাকিবের পরিবার হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনাকারী হিসেবে জাকিরকে অভিযুক্ত করে হামলার প্রেক্ষাপটে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে, এই খবর পেয়ে জাকির তার অনুসারী আল আমিন সাগরের ওপর হামলা এবং গুরুতর আহত হয়েছে, এমন নাটক সাজিয়ে তার পরিবারকে ঘটনার পরদিন বুধবার সকালেই কাউনিয়া থানায় পাঠিয়ে একটি এজাহার দায়ের করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, আল আমিন সাগরের ওপরেই হামলার উদ্দেশে রাকিবের ঘটনাস্থলে আগমন ঘটে।
দোষারোপ করা হয় হাসিবুল ইসলামকেও। বিষয়টি হাস্যকরে পরিণত হয়।
যে কী না হামলা করল তিনিই উল্টো আহত দেখিয়ে দুই সাংবাদিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে উদ্যোগী হলেন (!) অথচ ঘটনার প্রাক্কালে হাসিব প্রথমে তানিয়া, পরবর্তীতে পুলিশের সাথে সার্বিক ঘটনা নিয়ে আলাপ করছিলেন। অন্যদিকে হামলায় গুরুতর জখম হওয়ায় রাকিব শেবাচিমে তাৎক্ষণিক ভর্তি হতে বাধ্য হন।
তরুণ সাংবাদিক রাকিবের স্বাস্থ্যগত বিষয় নিয়ে মত প্রকাশ করতে গিয়ে শেবাচিমের চিকিৎসকেরা জানান, মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত গভীরে পৌঁছে যাওয়ায় তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত নন। তবে সুস্থ হয়ে উঠলেও মানসিক ভারসাম্যহীণ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। সুতরাং রাকিবের পক্ষ থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যখন রাকিবের পরিবার কাউনিয়া থানায় পৌঁছায় এবং এই বিষয়ে একটি এজাহার দাখিল করেন তখন শুরু হয় আর একটি নাটকীয় পর্ব।
একাধিক সূত্র জানায়, আল আমিন সাগরের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত এজাহার গ্রহণে কাউনিয়া থানা পুলিশ অনীহা প্রকাশ করলেও তা ছিল অনানুষ্ঠানিক। পরবর্তীতে রাকিবের পক্ষ থেকে জাকিরসহ ৬ অনুসারীকে আসামি করে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ঘটনার বাস্তবতা তুলে ধরলে কাউনিয়া থানাসহ পুলিশের শীর্ষমহল বিষয়টি আমলে নিয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিতে আগ্রসর হয়। এসময় বরিশাল মিডিয়ার ‘ভগবান’ হিসেবে খ্যাত বিতর্কিত আর এক নেতা হঠাৎ জাকিরের পক্ষালম্বন করে প্রশাসনের শীর্ষস্তরে নিজের আর্জি তুলে ধরে ইজ্জত রক্ষায় অন্তত এই মুহূর্তে তার সহযোগী আলোচ্চ্য জাকিরকে মামলায় আসামি করা থেকে বিরত রাখতে অনুরোধ রাখে। এতে পুলিশ পড়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। কিন্তু রাকিবের মামলা গ্রহণ আইনসিক্ত বিষয়টি ওই নেতার কাছে উপস্থাপন করলে বুধবার অর্থাৎ গতকাল সন্ধ্যারাতে তিনি হাসিবুল ইসলামের সাথে টেলিফোনে সমঝোতার প্রস্তাব রাখেন।
পক্ষান্তরে হাসিব সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে বিষয়টি রাকিবের সাথে পরামর্শের অনুরোধ রাখলে তিনি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন এবং একপর্যায়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর কিছুক্ষণ পরেই এসএম জাকিকের মতবাদ পত্রিকা অফিস থেকে তৈরি একটি পুরানো সংবাদ নতুন আদলে তৈরি করে, যার শিরোনামে হাসিব-রাকিবকে জড়িয়ে গল্প-কাহিনীর আদলে তীরবিদ্ধ করে বিভিন্ন মিডিয়া হাউজে ইমেলে পাঠানো হয়। এতে প্রকাশ পেয়ে যায়, বরিশাল মিডিয়ার সেই ‘ভগবান’ নতুন বিতর্কে জড়িয়েছে। হাস্যকর ও নিন্দনীয় বিষয় হলো যেখানে, সময়ের আলো পত্রিকার ব্যুরো চিফ হাসিব ও অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘বরিশালক্রাইম নিউজ’র প্রকাশক রাকিব সন্তান সমতুল্য, সেখানে পিতারুপী সেই ‘ভগবান’ কিভাবে দুই উদীয়মাণ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এই ধরনের সংবাদ প্রকাশ করে কি বুঝাতে চেয়েছেন, এবং তার নতুন মিশন কি? তানিয়ে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। বরিশাল মিডিয়ার অপরাপর সাংবাদিকরা সহজেই বিষয়টি অনুমান করতে পেরেছেন। তবে সংবাদ প্রকাশ করে হাসিব-রাকিবকে বিতর্কিত করার ‘ভগবান’র সেই মিশনও সফল হয়নি। তার অনুগত অনেক পত্রিকায় প্রেরিত সেই সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে দেখা গেছে।
বাস্তবতা বলছে- সমঝোতার বদলে পরিস্থিতি আরও উষ্কে দিয়ে বরিশাল মিডিয়ায় বিভাজন আরও বিস্তৃত ঘটানোর অভিপ্রায় ওই ‘ভগবান’র উদ্দেশই ছিল, হাসিব-রাকিব বিরোধী ওই সংবাদ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানোর ক্ষেত্রে তার অতিউৎসাহী ভুমিকা।
সূত্র জানায়, দুই সাংবাদিককে নিয়ে চলমান ষড়যন্ত্রের নতুন পর্ব সম্পর্কে পুলিশ-প্রশাসনও অবগত হয়েছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে নাম প্রকাশে অপরাগতা জানিয়ে একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান, পাল্টাপাল্টি মামলা গ্রহণে তারা ইচ্ছুক নন। এখন ঘটনার বাস্তবতা পুঙ্খানুপুঙ্খানুভাবে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে তারা কতিপয় মিডিয়ার হুমকি-ধামকির মুখে রয়েছেন বলে আভাস দেন।
সর্বশেষ আজ দুপুরের প্রাপ্ত তথ্য হচ্ছে, থানা পুলিশ দ্বারা বিমুখ হওয়ায় সেই ‘ভগবান’র পরামর্শে জাকির ও তার অনুসারীরা ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু তানিয়াকে বিভিন্ন প্রলোভন এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের অনুকুলে নিয়ে বরিশাল আদালতে মামলা দিতে সেখানকার বারান্দায় সকাল থেকে ঘুরে ফিরছে। লজ্জাস্কর বিষয় হচ্ছে, তানিয়া নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি মাদক ব্যবসায়ী। অথচ সেই মাদক ব্যবসায়ী নারীকে নিয়েই মূলধারার বা বিরোধীমতের সাংবাদিকদের আইনী ভাবে শায়েস্তা করতে ‘ভগবান’র এই উদ্যোগ কমবেশি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় কথা উঠেছে স্থানীয় সাংবাদিকতা এখন কোন পর্যায়ে নামিয়ে দিয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়।
এদিকে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে হাসিব-রাকিবের পক্ষে বরিশাল মিডিয়ার বড় একটি অংশ এতদিন মৌন সমর্থন দিয়ে আসলেও এখন তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তোলার চিন্তা ভাবনায় অগ্রসর হয়েছে। সম্ভবত ২/১ দিনের মধ্যেই এই আন্দোলনের ডাক আসতে পারে।’
(‘‘বরিশাল মিডিয়ার ভগবানরুপী এই অনুঘটকের প্রায় তিনযুগ ধরে সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি এবং নেতৃত্ব কুক্ষিগত করাসহ তার অতীত কালো অধ্যায় নিয়ে আসছে বিস্তারিত প্রতিবেদন’’)
তরুণ সাংবাদিক খন্দকার রাকিবকে হত্যাচেষ্টার যে নাটক সাজানো হয়েছিল তা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এখন মূল ঘটনা ভিন্নদিকে প্রভাবিত করতে ঘটনার নায়ক নামধারী সাংবাদিক নেতা এসএম জাকির হোসেন নতুন ছকে এগিয়েছে। উল্টো মূলধারার সাংবাদিক রাকিবসহ তারই সংগঠনের অপর নেতা হাসিবুল ইসলামকে আইনের মাধ্যমে দৌড়ের ওপরে রাখতে সাজিয়ে নতুন এক নাটক। সেক্ষেত্রে আত্মরক্ষায় পাল্টা মামলা দায়ের করার অভিপ্রায়ে হামলার মূলহোতা আল আমিন সাগরের পরিবারের পক্ষ থেকে কাউনিয়া থানায় একটি এজাহার দাখিল করে। এর আগে আল আমিন সাগরকে গুরুতর আহত দেখিয়ে নাটকীয় কায়দায় ঢাকায় পাঠানো হয়।
বিভিন্ন সূত্রের ধারণা, ০১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাকিবের ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে মামলা অবধারিত এবং হুকুমদাতা এসএম জাকিরের সম্পৃক্ততা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই কৌশলী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পুলিশের কাছে বিষয়টি খোলসা হলেও বিভিন্ন কায়দায় তাদের প্রভাবিত এবং চাপের মুখে রেখেছে, অন্তত জাকিরকে যেন আসামী না করা হয়। নয়া এই মিশন সফল করতে বরিশাল মিডিয়ার ভগবানরূপী আরেক নেতাকে মাঠে নামানো হয়েছে, যে কিনা প্রথম পদক্ষেপেই তালগোল পাকিয়ে ফেলে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে, হচ্ছেন ঢের সমালোচিত।
উল্লেখ্য, এসএম জাকির সাংবাদিক না হলেও ঘটনাচক্রে সাংবাদিকদের একাংশের নেতৃত্ব নেওয়ার পর এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-ভূমিদস্যুতা ও প্রতারণার অভিযোগে অন্তত ৫টি মামলাসহ সাতটি সাধারণ ডায়েরির অস্থিত্ব পাওয়া গেছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা যখন কথিত এই সাংবাদিক নেতার অতীত ইতিহাস-ইতিবৃত্ত খুঁজছে, ঠিক তখনই খন্দকার রাকিবকে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ, সম্প্রতি জাকিরসহ তার ৬ অনুসারীর বিরুদ্ধে এই তরুণ সাংবাদিক ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করে ফিরে আসার সপ্তাহখানের মাথায় এই হামলার ঘটনা ঘটলো।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে যে, রাকিবকে বাগে আনতে একটি উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরিতে এক নারীকে ব্যবহার করা হয়। স্বরোডের বাসিন্দা এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত তানিয়া আক্তার নামক ওই নারী একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ তুলে কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। সেক্ষেত্রেও রয়েছে নাটকীয়তা। ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তানিয়াকে ব্যবহার করে কথিত সাংবাদিক নেতা জাকিরের অনুসারীরা বিভিন্ন কায়দায় সংবাদ প্রকাশ করলে এই বিষয়ে কাউনিয়া থানায় একটি মামলা দায়েরর উদ্দেশে অভিযোগ দেওয়া হয়। মামলাটি গ্রহণ প্রক্রিয়া, তখন তানিয়াকে জাকিরের এক অনুসারী যে কী না, কোতয়ালি থানা পুলিশের দালাল হিসেবে চিহ্নিত, এক তরুণ কোতয়ালি থানায় ওই মামলাটি দায়ের করতে সহায়তা করে বলে জানা যায়।
তানিয়া জানান, তার এই সিদ্ধান্ত নিজের নয়, অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, বিষয়টি ভুল অনুধাবন করে একই এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক হাসিবুল ইসলামের দ্বারস্থ হন সামাজিক কায়দায় ওই তরুণের সাথে আইনগত লড়াই থেকে বিরত থাকতে একটি আপসরফায় যেতে। সেই অনুযায়ী অনুরোধের প্রেক্ষাপটে ১ সেপ্টম্বর সন্ধ্যায় স্বরোডে তানিয়ার বাসার সামনে যান হাসিব।
একটি নির্ভরযোগ সূত্র জানায়, তানিয়ার সাথে হাসিবের সমঝোতা বৈঠকের খবর কোন এক মাধ্যম অবগত হয় এসএম জাকির। তখনই একঢিলে দুই পাখি মারার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। জাকিরের সাথে হাসিবের নীতিগত দ্বন্দ্ব থাকায় পরিকল্পনা ছিল, ওই নারীর ঘরে হাসিব প্রবেশ করা মাত্র চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে অবরুদ্ধ করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া। সেখানে আরেকটি বিষয় হচ্ছে, হাসিবকে অবরুদ্ধ করে রাখলে সঙ্গত কারণে তারই সংগঠনের নেতা খন্দকার রাকিব ঘটনাস্থলে অবধারিত আসবেন, এমনটি ভেবেই এসএম জাকির তার একদল ক্যাডার বাহিনীকে তানিয়ার বাসার চারপাশে আগেভাগেই অবস্থান ঘটান। পরিকল্পনা মাফিক ঘটেছেও তাই।
হাসিব ষড়যন্ত্রে অবরুদ্ধ, এমন খবরে খন্দকার রাকিব সেখানে একাকী পৌছা মাত্র ওই ক্যাডার বাহিনী তার ওপরে আচমকা হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত ক্যাডার বাহিনীর হামলায় রাকিব রক্তাক্ত জখম হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এই হামলার ঘটনার সাথে এক মাত্র আল আমিন পলাশপুরের বাসিন্দা এবং জাকিরের মালিকানাধীন পত্রিকায় কর্মরত। বাকি হামলাকারীদের কারও বাড়ি সাহেবেরহাট, আবার কেউ রুপাতলী এবং কাজিরচরের বাসিন্দা। এরা সকলেই জাকিরের চিহ্নিত অনুসারী হিসেবে বরিশালের মিডিয়াসহ সামাজিক ও প্রশাসনিক মহলে কমবেশি পরিচিত। স্থানীয়দের ভাষ্য, হামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই মিশনে অংশ নেওয়া যুবকরা ঘটনাস্থলে উচ্চস্বরে জাকিরের সাথে একাধিক দফা সেলফোনে যোগাযোগ রেখে নির্দেশনা নিচ্ছিল এবং প্রতি মুহূর্তের পৌছে দিচ্ছিল।
উদ্ভুত এই পরিস্থিতিতে কাউনিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে তানিয়া স্বীকার করেন যে, তার বাসায় হাসিবুলের আগমনের হেতু হচ্ছে তার মামলা নিয়ে আলাপচারিতার মাধ্যমে একটি সামাজিক ফয়সালায় যাওয়ার ক্ষেত্রফল তৈরি করা। কিন্তু কিভাবে জাকিরের অনুসরাীরা সেখানে অতি উৎসাহী হয়ে অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে তিনিও বিস্মিত। এই ঘটনায় প্রমাণ করে হাসিবকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক রাকিবকে ঘটনাস্থলে আসতে বাধ্য করা হয়। এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মাঝে তাকে হত্যা করে দায়ভার অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার সম্ভবত পরিকল্পনা ছিল। সেক্ষেত্রে তানিয়া হতে পারতো জাকিরের পরিকল্পনার ‘বলিরপাঠা’।
এই হত্যার মিশনটি ব্যর্থসহ ঘটনায় কারা জড়িত এবং কার নির্দেশে হামলাকারী স্বরোডে তানিয়ার বাসার সামনে এসেছিল, তা খোলসা হয়ে গেলে বিভিন্ন মহলে জাকিরকে নিয়ে ধিক্কার শুরু হয়। প্রশাসনও বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল, বিভিন্ন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে। অন্যদিকে আহত রাকিবের পরিবার হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনাকারী হিসেবে জাকিরকে অভিযুক্ত করে হামলার প্রেক্ষাপটে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে, এই খবর পেয়ে জাকির তার অনুসারী আল আমিন সাগরের ওপর হামলা এবং গুরুতর আহত হয়েছে, এমন নাটক সাজিয়ে তার পরিবারকে ঘটনার পরদিন বুধবার সকালেই কাউনিয়া থানায় পাঠিয়ে একটি এজাহার দায়ের করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, আল আমিন সাগরের ওপরেই হামলার উদ্দেশে রাকিবের ঘটনাস্থলে আগমন ঘটে।
দোষারোপ করা হয় হাসিবুল ইসলামকেও। বিষয়টি হাস্যকরে পরিণত হয়।
যে কী না হামলা করল তিনিই উল্টো আহত দেখিয়ে দুই সাংবাদিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে উদ্যোগী হলেন (!) অথচ ঘটনার প্রাক্কালে হাসিব প্রথমে তানিয়া, পরবর্তীতে পুলিশের সাথে সার্বিক ঘটনা নিয়ে আলাপ করছিলেন। অন্যদিকে হামলায় গুরুতর জখম হওয়ায় রাকিব শেবাচিমে তাৎক্ষণিক ভর্তি হতে বাধ্য হন।
তরুণ সাংবাদিক রাকিবের স্বাস্থ্যগত বিষয় নিয়ে মত প্রকাশ করতে গিয়ে শেবাচিমের চিকিৎসকেরা জানান, মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত গভীরে পৌঁছে যাওয়ায় তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত নন। তবে সুস্থ হয়ে উঠলেও মানসিক ভারসাম্যহীণ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। সুতরাং রাকিবের পক্ষ থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যখন রাকিবের পরিবার কাউনিয়া থানায় পৌঁছায় এবং এই বিষয়ে একটি এজাহার দাখিল করেন তখন শুরু হয় আর একটি নাটকীয় পর্ব।
একাধিক সূত্র জানায়, আল আমিন সাগরের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত এজাহার গ্রহণে কাউনিয়া থানা পুলিশ অনীহা প্রকাশ করলেও তা ছিল অনানুষ্ঠানিক। পরবর্তীতে রাকিবের পক্ষ থেকে জাকিরসহ ৬ অনুসারীকে আসামি করে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ঘটনার বাস্তবতা তুলে ধরলে কাউনিয়া থানাসহ পুলিশের শীর্ষমহল বিষয়টি আমলে নিয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিতে আগ্রসর হয়। এসময় বরিশাল মিডিয়ার ‘ভগবান’ হিসেবে খ্যাত বিতর্কিত আর এক নেতা হঠাৎ জাকিরের পক্ষালম্বন করে প্রশাসনের শীর্ষস্তরে নিজের আর্জি তুলে ধরে ইজ্জত রক্ষায় অন্তত এই মুহূর্তে তার সহযোগী আলোচ্চ্য জাকিরকে মামলায় আসামি করা থেকে বিরত রাখতে অনুরোধ রাখে। এতে পুলিশ পড়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। কিন্তু রাকিবের মামলা গ্রহণ আইনসিক্ত বিষয়টি ওই নেতার কাছে উপস্থাপন করলে বুধবার অর্থাৎ গতকাল সন্ধ্যারাতে তিনি হাসিবুল ইসলামের সাথে টেলিফোনে সমঝোতার প্রস্তাব রাখেন।
পক্ষান্তরে হাসিব সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে বিষয়টি রাকিবের সাথে পরামর্শের অনুরোধ রাখলে তিনি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন এবং একপর্যায়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর কিছুক্ষণ পরেই এসএম জাকিকের মতবাদ পত্রিকা অফিস থেকে তৈরি একটি পুরানো সংবাদ নতুন আদলে তৈরি করে, যার শিরোনামে হাসিব-রাকিবকে জড়িয়ে গল্প-কাহিনীর আদলে তীরবিদ্ধ করে বিভিন্ন মিডিয়া হাউজে ইমেলে পাঠানো হয়। এতে প্রকাশ পেয়ে যায়, বরিশাল মিডিয়ার সেই ‘ভগবান’ নতুন বিতর্কে জড়িয়েছে। হাস্যকর ও নিন্দনীয় বিষয় হলো যেখানে, সময়ের আলো পত্রিকার ব্যুরো চিফ হাসিব ও অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘বরিশালক্রাইম নিউজ’র প্রকাশক রাকিব সন্তান সমতুল্য, সেখানে পিতারুপী সেই ‘ভগবান’ কিভাবে দুই উদীয়মাণ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এই ধরনের সংবাদ প্রকাশ করে কি বুঝাতে চেয়েছেন, এবং তার নতুন মিশন কি? তানিয়ে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। বরিশাল মিডিয়ার অপরাপর সাংবাদিকরা সহজেই বিষয়টি অনুমান করতে পেরেছেন। তবে সংবাদ প্রকাশ করে হাসিব-রাকিবকে বিতর্কিত করার ‘ভগবান’র সেই মিশনও সফল হয়নি। তার অনুগত অনেক পত্রিকায় প্রেরিত সেই সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে দেখা গেছে।
বাস্তবতা বলছে- সমঝোতার বদলে পরিস্থিতি আরও উষ্কে দিয়ে বরিশাল মিডিয়ায় বিভাজন আরও বিস্তৃত ঘটানোর অভিপ্রায় ওই ‘ভগবান’র উদ্দেশই ছিল, হাসিব-রাকিব বিরোধী ওই সংবাদ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানোর ক্ষেত্রে তার অতিউৎসাহী ভুমিকা।
সূত্র জানায়, দুই সাংবাদিককে নিয়ে চলমান ষড়যন্ত্রের নতুন পর্ব সম্পর্কে পুলিশ-প্রশাসনও অবগত হয়েছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে নাম প্রকাশে অপরাগতা জানিয়ে একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান, পাল্টাপাল্টি মামলা গ্রহণে তারা ইচ্ছুক নন। এখন ঘটনার বাস্তবতা পুঙ্খানুপুঙ্খানুভাবে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে তারা কতিপয় মিডিয়ার হুমকি-ধামকির মুখে রয়েছেন বলে আভাস দেন।
সর্বশেষ আজ দুপুরের প্রাপ্ত তথ্য হচ্ছে, থানা পুলিশ দ্বারা বিমুখ হওয়ায় সেই ‘ভগবান’র পরামর্শে জাকির ও তার অনুসারীরা ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু তানিয়াকে বিভিন্ন প্রলোভন এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের অনুকুলে নিয়ে বরিশাল আদালতে মামলা দিতে সেখানকার বারান্দায় সকাল থেকে ঘুরে ফিরছে। লজ্জাস্কর বিষয় হচ্ছে, তানিয়া নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি মাদক ব্যবসায়ী। অথচ সেই মাদক ব্যবসায়ী নারীকে নিয়েই মূলধারার বা বিরোধীমতের সাংবাদিকদের আইনী ভাবে শায়েস্তা করতে ‘ভগবান’র এই উদ্যোগ কমবেশি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় কথা উঠেছে স্থানীয় সাংবাদিকতা এখন কোন পর্যায়ে নামিয়ে দিয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়।
এদিকে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে হাসিব-রাকিবের পক্ষে বরিশাল মিডিয়ার বড় একটি অংশ এতদিন মৌন সমর্থন দিয়ে আসলেও এখন তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তোলার চিন্তা ভাবনায় অগ্রসর হয়েছে। সম্ভবত ২/১ দিনের মধ্যেই এই আন্দোলনের ডাক আসতে পারে।’
(‘‘বরিশাল মিডিয়ার ভগবানরুপী এই অনুঘটকের প্রায় তিনযুগ ধরে সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি এবং নেতৃত্ব কুক্ষিগত করাসহ তার অতীত কালো অধ্যায় নিয়ে আসছে বিস্তারিত প্রতিবেদন’’)
২৯ মে, ২০২৫ ১৭:০০
বাহিনীপ্রধান টুটুল ৫ আগস্টের পরে পালিয়ে গেলেও বাণিজ্য ধরে রাখতে মরিয়া তার অনুসারীরা। অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের শেল্টার দিচ্ছে ওয়ার্ডপর্যায়ের দুই বিএনপি নেতা।
বরিশালের তালতলী বাজারের আধিপত্য ধরে রাখতে আওয়ামী সন্ত্রাসী টুটুল বাহিনী ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এই বাহিনী সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বাজার থেকে মৎস্য সম্পদ রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাচারের তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মরক্ষর্থে বাহিনীপ্রধান নিরব হোসেন টুটুল পালিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় নিলেও তার লালিত সন্ত্রাসী মোশারেফ সিকদার, মিরাজ সিকদার, কালু সিকদার, সাকিন সিকদার, সেলিম এবং সবুজরা এখন উত্তর আমানগঞ্জ টু শায়েস্তবাদ পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আলোচিত টুটুল পলাতক থাকায় তার এই বাহিনীকে অর্থের বিনিময়ে শেল্টার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল মহানগরের ওয়ার্ডপর্যায়ের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বরিশালের তালতলী বাজার থেকে প্রতি বছর শত কোটি টাকার জাটকাসহ মাছ পাচার করে আসছিল বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুলের বাহিনী। তৎসময়ে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সিটির মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় নাজিরের পোলের টুটুল এক ধরনের এক ধরনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। মূলত তার কাঁদে ভর করে আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রতিবছর শত কোটি টাকার জাটকা, রেণুপোনাসহ অবৈধ মাছ পাচার করে আসছে সাকিন-কালু-মিরাজেরা।
পুলিশসহ বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, অবৈধভাবে মাছ পাচারের সাথে সম্পৃক্ত এবং জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগে বাহিনীপ্রধান টুটুলসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তাদের মধ্যে টুটুল ভারতে এবং মিরাজ সিকদার দেশে কোথায় আত্মগোপনে থাকলেও বাকিরা ভোল পাল্টে নিজেদের মস্তবড় বিএনপি নেতাকর্মী দাবি করছেন। এবং টুটুলের অবর্তমানে তারা অবৈধ ব্যবসার শেল্টারদাতা হিসেবে বরিশাল নগরীর ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা, এমন দুজন বিএনপি নেতার সাথে সন্ধিচুক্তিও করে নিয়েছে। মাসান্তর তাদের মোটা অংকের উৎকোচ দেওয়াসহ পূর্বের ন্যায় কাউনিয়া থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে অবৈধ মাছ তালতলী বাজার থেকে পাচারের ফন্দি আঁটছে।
আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের মৎস্য সম্পদ পাচারের এই পূর্বপরিকল্পনা আগেভাগেই আঁচ করতে পেরে মৎস্য অধিদপ্তরও নড়েচড়ে বসেছে। দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা রিপন কান্তি এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা জামাল হোসেন জানিয়েছেন, যে কোনো মূল্যে এবার অবৈধ বাণিজ্য রুখে দেওয়া হবে। যেমন কথা তেমন কাজ, যার প্রমাণ মেলে শনিবার গভীর রাতে। মাঠ কর্মকর্তা জামালের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের অবৈধ একটি মাছের চালান শনিবার রাতে আটকে দেওয়া হয়। তিনটি অটোরিকশাভর্তি জাটকা (শিকার নিষিদ্ধ) তালতলী বাজার থেকে এই কর্মকর্তার নেতৃত্বে জব্দ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলের পুরো সময় ধরে মৎস্য বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিমল চন্দ্র দাস, তার বিরুদ্ধে টুটুল বাহিনীর কাছ থেকে উৎকোচগ্রহণ করাসহ বহুমুখী দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সবশেষ বিতর্কিত ওই কর্মকর্তাকে নওগাঁ জেলায় শাস্তিমূলক বদলি করেছে সরকার।
মৎস্য অফিস সূত্র জানিয়েছে, সদর উপজেলার তালতলীতে একটি পাচারকারী সিন্ডিকেট রয়েছে, বিমল বাবুর বদলির পরে তারা ওয়ার্ড বিএনপির এক নেতার সুপারিশ নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন সন্ধিচুক্তি করতে। কিন্তু জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি এবং সদর উপজেলার কর্মকর্তা জামাল হোসেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারীদের সাথে কোনো আপস নয়, বরং তাদের ঠিকানা হবে জেল!
মৎস্য অধিদপ্তরের এমন হুঁশিয়ারির পরেও থেমে নেই আওয়ামী সন্ত্রাসী টুটুল বাহিনী। তারা প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করে অবৈধভাবে মাছ শিকার এবং পাচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কিন্তু তা কোনো দিনও হতে দেওয়া হবে না মন্তব্য করেন মৎস্য কর্মকর্তা।
তালতালীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সিটির ওয়ার্ড বিএনপির দুই নেতার সদর উপজেলার অবৈধ বাণিজ্যে শেল্টার দেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেনি স্থানীয় বিএনপি এবং অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, টুটুল বাহিনী গত ১৫ বছর তালতলী বাজার থেকে শত কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে এবং সেই টাকা দিয়ে সাকিন, কালু, সবজুরা একাধিক বিয়ে করাসহ গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়িও। জানা গেছে, অবৈধ পন্থায় আয় করা টাকা দিয়ে টুটুলের খাস চামচা সাকিন একটি ট্রাকও কিনিয়েছেন, মূলত সেই ট্রাক ব্যবহার করেই রাতে জাটকা পাচার করে।
ইউনিয়ন বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের শাসনামলে কাউনিয়া থানা পুলিশসহ টুটুলকে মাসিক মোটা অংকের অর্থ দিয়ে মাছ পাচার করে মোশারেফ, সাকিন, কালু এবং নিজাম-সবুজেরা। স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পরে টুটুল পালিয়ে ভারতে গেলে তার সাগরেদ মিরাজ সিকদারও মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে মামলার আসামি হয়েও বিএনপি নেতাদের শেল্টারে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নিজাম সিকদারসহ বাহিনীর একাধিক সন্ত্রাসী। তবে আগামীতে তাদের কোনো প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা অবৈধভাবে মাছ পাচার করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় সুশীল মহলসহ তরুণসমাজ।
তালতলী বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা শুধু মৎস্য সম্পদ ধ্বংসই করছে না, পাচারের মাধ্যমে বছরে কোটি কোটি টাকাও হাতিয়ে নিচ্ছে। অতীতে নির্বিকার পুলিশকে দেখা গেছে, বান্ডিল গুণে গুণে টাকা নিতে। বিশেষ করে এই গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, কাউনিয়া থানা পুলিশের সাবেক ওসি মো. আসাদুজ্জামান এবং মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা কাউনিয়া থানায় দায়িত্ব পালনকালে অন্তত ২ কোটি টাকার বেশি নিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করে।
এমনও অভিযোগ আছে, ভোর রাত বা সকালে ওসি আসাদুজ্জামান পুলিশের একটি টিম তালতলী বাজারে পাঠিয়ে দিলে তাদের উপস্থিতিতেই জাটকা ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, যা নিয়ে তৎকালীন সময়ে সংবাদপত্রে ব্যাপক লেখালেখি হয়েছিল। কিন্তু খোদ পুলিশই যখন ব্যবসায় জড়িত, তখন ব্যবস্থা আর নেয় কে? এমন প্রশ্নে বরিশালের রাজনৈতিক অঙ্গন তখন সরগরম হয়ে উঠেছিল।
আওয়ামী লীগের সেই সন্ত্রাসী আমল বা নীতি বিবর্জিত পুলিশ কর্মকর্তা এখন আর থানাগুলোর দায়িত্ব না থাকলেও টুটুল বাহিনীর আধিপত্য মোটেও কমেনি। জানা গেছে, টুটুল বাহিনীর এই অবৈধ বাণিজ্যের প্রতিবাদ করতে গিয়ে গত বছর তরিকুল ইসলাম নামের এক সংবাদকর্মীকে কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসী মিরাজ, সবুজ এবং সাকিনেরা, ওই ঘটনায় আ’লীগের আমলে একটি মামলাও হয়েছিল।
সূত্রের খবর হচ্ছে, সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর টুটুল তার বাহিনীর সদস্যদের রক্ষায় তৎসময়ে আপসরফার প্রস্তাব দেওয়াসহ থানা পুলিশকে মামলা নিতে বারণও করেছিলেন। কিন্তু মূর্তিমাণ সেই সন্ত্রাসের খবর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসহ জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশ পেলে চাপে পড়ে যায় থানা পুলিশ। এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনিচ্ছা সত্ত্বেও মামলা গ্রহণেও বাধ্য হয়।
৫ আগস্ট আওয়ামী দুশাসনের অবসান ঘটলে বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলে তারা কিছুদিন আত্মগোপনে ছিল। তবে ফাল্গুন মাস শুরু হতেই তারা এখন বিএনপি নেতাদের শেল্টার নিয়ে অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছে, যা দেখে ইউনিয়ন বিএনপি নেতাকর্মীরাও হতবাক-বাকরুদ্ধ।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, মৎস্য সম্পদ ধ্বংসের এই বাণিজ্য যে কোনো মূল্যে রুখে দিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা যেমন হুমকি-হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কাউনিয়া থানা পুলিশকেও সেই পদাঙ্ক অবলম্বলন করা জরুরি। অবশ্য কাউনিয়া থানা পুলিশের ওসি নাজমুল নিশাতও সত্যের সঙ্গে থেকে তালতলী থেকে অবৈধভাবে মাছ পাচার বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অতীতের ন্যায় অবৈধ বাণিজ্য কিংবা অপরাধকে কাউনিয়া থানা পুলিশ আর প্রশ্রয় দেবে না। এক্ষেত্রে জনস্বার্থে মামলা করার সুযোগ রয়েছে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত এমন ব্যক্তি যদি মাছ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়, তদন্ত করে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। সেক্ষেত্রে অপরাধারীর পরিচয় যা-ই হোক না কেনো তা দেখার সুযোগ থাকবে না।
আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে বরিশালের তালতলীতে দুই বিএনপি নেতার অবৈধ বাণিজ্যের খবর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিজরুজ্জামান ফারুকও অবগত হয়েছেন। তিনি জানান, টুটুল বাহিনীর লোকদের সাথে দুই কর্মীর একজোট হওয়ার বিষয়টি আগেই জানতে পেরেছেন এবং তিনি তাদের ডেকে নিয়ে সাবধান করে দিয়েছেন। এরপরেও যদি তারা অনৈতিক কাজে জড়িত থাকে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে এবং তাদের অবৈধ মাছ পুলিশ-প্রশাসনকে ধরতে আহ্বান রাখেন শীর্ষস্থানীয় বিএনপি নেতা।’
বাহিনীপ্রধান টুটুল ৫ আগস্টের পরে পালিয়ে গেলেও বাণিজ্য ধরে রাখতে মরিয়া তার অনুসারীরা। অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের শেল্টার দিচ্ছে ওয়ার্ডপর্যায়ের দুই বিএনপি নেতা।
বরিশালের তালতলী বাজারের আধিপত্য ধরে রাখতে আওয়ামী সন্ত্রাসী টুটুল বাহিনী ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এই বাহিনী সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বাজার থেকে মৎস্য সম্পদ রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাচারের তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মরক্ষর্থে বাহিনীপ্রধান নিরব হোসেন টুটুল পালিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় নিলেও তার লালিত সন্ত্রাসী মোশারেফ সিকদার, মিরাজ সিকদার, কালু সিকদার, সাকিন সিকদার, সেলিম এবং সবুজরা এখন উত্তর আমানগঞ্জ টু শায়েস্তবাদ পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আলোচিত টুটুল পলাতক থাকায় তার এই বাহিনীকে অর্থের বিনিময়ে শেল্টার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল মহানগরের ওয়ার্ডপর্যায়ের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বরিশালের তালতলী বাজার থেকে প্রতি বছর শত কোটি টাকার জাটকাসহ মাছ পাচার করে আসছিল বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুলের বাহিনী। তৎসময়ে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সিটির মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় নাজিরের পোলের টুটুল এক ধরনের এক ধরনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। মূলত তার কাঁদে ভর করে আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রতিবছর শত কোটি টাকার জাটকা, রেণুপোনাসহ অবৈধ মাছ পাচার করে আসছে সাকিন-কালু-মিরাজেরা।
পুলিশসহ বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, অবৈধভাবে মাছ পাচারের সাথে সম্পৃক্ত এবং জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগে বাহিনীপ্রধান টুটুলসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তাদের মধ্যে টুটুল ভারতে এবং মিরাজ সিকদার দেশে কোথায় আত্মগোপনে থাকলেও বাকিরা ভোল পাল্টে নিজেদের মস্তবড় বিএনপি নেতাকর্মী দাবি করছেন। এবং টুটুলের অবর্তমানে তারা অবৈধ ব্যবসার শেল্টারদাতা হিসেবে বরিশাল নগরীর ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা, এমন দুজন বিএনপি নেতার সাথে সন্ধিচুক্তিও করে নিয়েছে। মাসান্তর তাদের মোটা অংকের উৎকোচ দেওয়াসহ পূর্বের ন্যায় কাউনিয়া থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে অবৈধ মাছ তালতলী বাজার থেকে পাচারের ফন্দি আঁটছে।
আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের মৎস্য সম্পদ পাচারের এই পূর্বপরিকল্পনা আগেভাগেই আঁচ করতে পেরে মৎস্য অধিদপ্তরও নড়েচড়ে বসেছে। দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা রিপন কান্তি এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা জামাল হোসেন জানিয়েছেন, যে কোনো মূল্যে এবার অবৈধ বাণিজ্য রুখে দেওয়া হবে। যেমন কথা তেমন কাজ, যার প্রমাণ মেলে শনিবার গভীর রাতে। মাঠ কর্মকর্তা জামালের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের অবৈধ একটি মাছের চালান শনিবার রাতে আটকে দেওয়া হয়। তিনটি অটোরিকশাভর্তি জাটকা (শিকার নিষিদ্ধ) তালতলী বাজার থেকে এই কর্মকর্তার নেতৃত্বে জব্দ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলের পুরো সময় ধরে মৎস্য বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিমল চন্দ্র দাস, তার বিরুদ্ধে টুটুল বাহিনীর কাছ থেকে উৎকোচগ্রহণ করাসহ বহুমুখী দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সবশেষ বিতর্কিত ওই কর্মকর্তাকে নওগাঁ জেলায় শাস্তিমূলক বদলি করেছে সরকার।
মৎস্য অফিস সূত্র জানিয়েছে, সদর উপজেলার তালতলীতে একটি পাচারকারী সিন্ডিকেট রয়েছে, বিমল বাবুর বদলির পরে তারা ওয়ার্ড বিএনপির এক নেতার সুপারিশ নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন সন্ধিচুক্তি করতে। কিন্তু জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি এবং সদর উপজেলার কর্মকর্তা জামাল হোসেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারীদের সাথে কোনো আপস নয়, বরং তাদের ঠিকানা হবে জেল!
মৎস্য অধিদপ্তরের এমন হুঁশিয়ারির পরেও থেমে নেই আওয়ামী সন্ত্রাসী টুটুল বাহিনী। তারা প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করে অবৈধভাবে মাছ শিকার এবং পাচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কিন্তু তা কোনো দিনও হতে দেওয়া হবে না মন্তব্য করেন মৎস্য কর্মকর্তা।
তালতালীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সিটির ওয়ার্ড বিএনপির দুই নেতার সদর উপজেলার অবৈধ বাণিজ্যে শেল্টার দেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেনি স্থানীয় বিএনপি এবং অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, টুটুল বাহিনী গত ১৫ বছর তালতলী বাজার থেকে শত কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে এবং সেই টাকা দিয়ে সাকিন, কালু, সবজুরা একাধিক বিয়ে করাসহ গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়িও। জানা গেছে, অবৈধ পন্থায় আয় করা টাকা দিয়ে টুটুলের খাস চামচা সাকিন একটি ট্রাকও কিনিয়েছেন, মূলত সেই ট্রাক ব্যবহার করেই রাতে জাটকা পাচার করে।
ইউনিয়ন বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের শাসনামলে কাউনিয়া থানা পুলিশসহ টুটুলকে মাসিক মোটা অংকের অর্থ দিয়ে মাছ পাচার করে মোশারেফ, সাকিন, কালু এবং নিজাম-সবুজেরা। স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পরে টুটুল পালিয়ে ভারতে গেলে তার সাগরেদ মিরাজ সিকদারও মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে মামলার আসামি হয়েও বিএনপি নেতাদের শেল্টারে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নিজাম সিকদারসহ বাহিনীর একাধিক সন্ত্রাসী। তবে আগামীতে তাদের কোনো প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা অবৈধভাবে মাছ পাচার করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় সুশীল মহলসহ তরুণসমাজ।
তালতলী বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা শুধু মৎস্য সম্পদ ধ্বংসই করছে না, পাচারের মাধ্যমে বছরে কোটি কোটি টাকাও হাতিয়ে নিচ্ছে। অতীতে নির্বিকার পুলিশকে দেখা গেছে, বান্ডিল গুণে গুণে টাকা নিতে। বিশেষ করে এই গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, কাউনিয়া থানা পুলিশের সাবেক ওসি মো. আসাদুজ্জামান এবং মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা কাউনিয়া থানায় দায়িত্ব পালনকালে অন্তত ২ কোটি টাকার বেশি নিয়ে গেছেন আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করে।
এমনও অভিযোগ আছে, ভোর রাত বা সকালে ওসি আসাদুজ্জামান পুলিশের একটি টিম তালতলী বাজারে পাঠিয়ে দিলে তাদের উপস্থিতিতেই জাটকা ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, যা নিয়ে তৎকালীন সময়ে সংবাদপত্রে ব্যাপক লেখালেখি হয়েছিল। কিন্তু খোদ পুলিশই যখন ব্যবসায় জড়িত, তখন ব্যবস্থা আর নেয় কে? এমন প্রশ্নে বরিশালের রাজনৈতিক অঙ্গন তখন সরগরম হয়ে উঠেছিল।
আওয়ামী লীগের সেই সন্ত্রাসী আমল বা নীতি বিবর্জিত পুলিশ কর্মকর্তা এখন আর থানাগুলোর দায়িত্ব না থাকলেও টুটুল বাহিনীর আধিপত্য মোটেও কমেনি। জানা গেছে, টুটুল বাহিনীর এই অবৈধ বাণিজ্যের প্রতিবাদ করতে গিয়ে গত বছর তরিকুল ইসলাম নামের এক সংবাদকর্মীকে কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসী মিরাজ, সবুজ এবং সাকিনেরা, ওই ঘটনায় আ’লীগের আমলে একটি মামলাও হয়েছিল।
সূত্রের খবর হচ্ছে, সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর টুটুল তার বাহিনীর সদস্যদের রক্ষায় তৎসময়ে আপসরফার প্রস্তাব দেওয়াসহ থানা পুলিশকে মামলা নিতে বারণও করেছিলেন। কিন্তু মূর্তিমাণ সেই সন্ত্রাসের খবর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসহ জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশ পেলে চাপে পড়ে যায় থানা পুলিশ। এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনিচ্ছা সত্ত্বেও মামলা গ্রহণেও বাধ্য হয়।
৫ আগস্ট আওয়ামী দুশাসনের অবসান ঘটলে বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলে তারা কিছুদিন আত্মগোপনে ছিল। তবে ফাল্গুন মাস শুরু হতেই তারা এখন বিএনপি নেতাদের শেল্টার নিয়ে অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছে, যা দেখে ইউনিয়ন বিএনপি নেতাকর্মীরাও হতবাক-বাকরুদ্ধ।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, মৎস্য সম্পদ ধ্বংসের এই বাণিজ্য যে কোনো মূল্যে রুখে দিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা যেমন হুমকি-হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কাউনিয়া থানা পুলিশকেও সেই পদাঙ্ক অবলম্বলন করা জরুরি। অবশ্য কাউনিয়া থানা পুলিশের ওসি নাজমুল নিশাতও সত্যের সঙ্গে থেকে তালতলী থেকে অবৈধভাবে মাছ পাচার বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অতীতের ন্যায় অবৈধ বাণিজ্য কিংবা অপরাধকে কাউনিয়া থানা পুলিশ আর প্রশ্রয় দেবে না। এক্ষেত্রে জনস্বার্থে মামলা করার সুযোগ রয়েছে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত এমন ব্যক্তি যদি মাছ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়, তদন্ত করে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। সেক্ষেত্রে অপরাধারীর পরিচয় যা-ই হোক না কেনো তা দেখার সুযোগ থাকবে না।
আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে বরিশালের তালতলীতে দুই বিএনপি নেতার অবৈধ বাণিজ্যের খবর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিজরুজ্জামান ফারুকও অবগত হয়েছেন। তিনি জানান, টুটুল বাহিনীর লোকদের সাথে দুই কর্মীর একজোট হওয়ার বিষয়টি আগেই জানতে পেরেছেন এবং তিনি তাদের ডেকে নিয়ে সাবধান করে দিয়েছেন। এরপরেও যদি তারা অনৈতিক কাজে জড়িত থাকে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে এবং তাদের অবৈধ মাছ পুলিশ-প্রশাসনকে ধরতে আহ্বান রাখেন শীর্ষস্থানীয় বিএনপি নেতা।’
২৯ মে, ২০২৫ ১৬:৫৭
উত্তর আমানতগঞ্জের বিএনপি নেতা মিরাজ, সেলিম এবং নয়ন-সবুজসহ গুটিকয়েক সন্ত্রাসে তটস্থ এলাকাবাসী ঘুরে বসতে শুরু করেছে। বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিক হাসিবুল ইসলামের ভাইদের ওপর হামলাসহ কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা পরে এলাকাবাসী এখন আর আগের মতো মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং তার সেকেন্ড ইন কামান্ড নিরব হোসেন টুটুলের ওপর আস্থা বা ভরসা রাখতে পারছে না। ফলে অনেকেই সাদিক-টুটুল বলয় ছেড়ে বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন, হচ্ছেন। বিশেষ করে সাংবাদিক স্বজন তারেকের ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে মামলা এবং টুটুলের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত মিরাজসহ সকলে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে যাওয়ার পরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, উত্তর আমানতগঞ্জে সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নেই এমন মানুষের সংখ্যা অধিকা, এই অংশ এতদিন নিবর হোসেন টুটুলের সাথে থাকলেও মিরাজ বাহিনীর নিপীড়িন এবং সন্ত্রাসের চিত্র দেখে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের দোষারপ করছেন। ফলশ্রুতিতে বলাই যায়, মিরাজসহ এই কয়েকজন ব্যক্তির কারণে সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ এবং নিরব হোসেন টুটুলের বদনাম হয়েছে, হচ্ছে, সেক্ষেত্রে তাদের জনপ্রিয়তাও হ্রাস পাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মহানগর আওয়ামী লীগ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুলের আশ্রয়-প্রশ্রয় মিরাজ এবং সেলিমসহ ৯/১০ জনের একটি বাহিনী সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র থাকাকালীন উত্তর আমানতগঞ্জে দেদার ত্রাস চালিয়েছে। সদর উপজেলার তালতলী বন্দর থেকে জাটকা, চাপিলা এবং রেণুপোনার মতো জাতীয় সম্পদ পাচার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে। পাশাপাশি বেলতলা টু শায়েস্তবাদ পর্যন্ত সমান্তরাল চালিয়ে ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজিসহ সশস্ত্র ত্রাস। সর্বশেষ যার শিকার হয়েলে সাংবাদিক স্বজন তারিকুল ইসলাম, চল্লিশোর্ধ্ব এই যুবকও সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করেন।
ঈদের দুদিন আগে এই বাহিনীর অনুরুপ হামলার শিকার হয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক মাহাবুব সিকদার। জানা গেছে, তাকেসহ তার বাবা ভাইদের মারধরের পর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে কাউনিয়া পুলিশ গিয়ে দোকানটি খুলে দেয়। সেই ঘটনার সপ্তাহখানেকের মাথায় সাংবাদিক স্বজন তারেক এবং তার ভাইদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা করেছে মিরাজ বাহিনী।
স্থানীয় বাসিন্দা নাছির, কবির, সোহেল অভিযোগ করেন, গোটা উত্তর আমানতগঞ্জবাসী সাদিক আব্দুল্লাহ এবং নিরব হোসেন টুটুলের বন্দনা করতো। কিন্তু বিএনপি নেতা মিরাজ, সেলিম, নয়ন, সবুজসহ ৯/১০ জনের বাহিনী যাকে তাকে মারধর করে ক্রমাগত সন্ত্রাস সৃষ্টি করায় মহানগরের শীর্ষ নেতা সাদিকের বদনাম করেছে। এমনকি টুটুলকে বিষয়টি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বারংবার অভিযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়নি, যার প্রভাব পড়েছে সাদিক আব্দুল্লাহ’র রাজনীতিতে। দেখা গেছে, টুটুলের এই বাহিনী মিছিল মিটিংয়ে যে কজন লোক সমাবেত করছে, তাদের অপেক্ষা বিরোধী অংশটি অর্থাৎ স্থানীয় ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ সামসুদ্দোহা আবিদ এবং মৎস্যজীবী লীগ নেতা খান হাবিব জনসমর্থনে এগিয়ে যাচ্ছেন পর্যায়ক্রমে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, মিরাজসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা সাদিক আব্দুল্লাহ এবং নিরব হোসেন টুটুলের নাম ভাঙিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের ত্রাস চালিয়ে আসায় তাদের ওপর স্থানীয়রা সংক্ষুব্ধ, অনেকেই বিকল্প রাজনৈতিক হিসেবে আবিদ ও খান হাবিবকে বেশি মাত্রায় গুরুত্ব দিতে শুরু করেছেন। সেক্ষেত্রে নিরব হোসেন টুটুলের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়, মন্তব্য পাওয়া গেছে।
তবে মিরাজসহ তার বাহিনীর সন্ত্রাসের কারণে এলাকাবাসী কাউনিয়া থানা পুলিশের ওসি মো. আসাদুজ্জামানকেও দুষছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি, মিরাজ, কালু এবং নিজামসহ এই বাহিনীর সদস্যদের চোরাকারবারি করার সুযোগ করে দিয়ে মাসোহারা গ্রহণ করে থাকেন। সাংবাদিক তারিকুল ইসলাম যে বিষয়টি গত শনিবার শেবাচিমে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় উর্ধ্বতন পুলিশ কর্তাদের সামনেই প্রকাশ করে দিয়েছেন। এছাড়া সন্ত্রাসী বাহিনীটির সাথে যে ওসি আসাদের গভীর সংখ্যতা রয়েছে, তা থানা পুলিশের আচারণেও প্রকাশ পেয়েছে, পাচ্ছে।
থানা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এই বাহিনীর সদস্যদের অনেকেই প্রতিদিন ওসির রুমে যাতায়াত করেন। এমনকি তাদের একজন বিএনপি নেতা নিজাম সিকদারকে ওসি রুমে বসে সিগারেট খেতেও দেখা যায়। এবং এগুলো তারা দম্ভোক্তির সুরে এলাকার ঘুরে মানুষের কাছে বলে বেড়ায়। ফলে কাউনিয়া থানা পুলিশের ওপরও উত্তর আমানতগঞ্জবাসী ভরসা না রাখতে পেরে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত এবং পুলিশ কমিশনার মো. জিহাদুল কবির ও র্যাবপ্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মেয়রের চেয়ার হারানোর পরে রাজনৈদিকভাবে দুর্বল থাকা সাদিক আব্দুল্লাহ’র এই দুসময়ে তার নাম ভাঙিয়ে বিএনপি নেতা মিরাজরা যে ত্রাস অব্যাহত রেখেছে, তাতে স্থানীয়ভাবে আরও সমর্থন হ্রাস পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বিপরিতে তার ঘোর শক্র আপন চাচা খোকন সেরনিয়াবাত এবং সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের বলয়-বৃদ্ধি ঘটাবে স্থানীয় জনতা।
এই বিষয়ে সাদিক আব্দুল্লাহ’র বক্তব্য না পাওয়া গেলেও নিরব হোসেন টুটুলের ভাষ্য হচ্ছে, তার নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করলে কোনো ছাড় নয়। উত্তর আমানতগঞ্জে যা হয়েছে, হচ্ছে তার জন্য তিনি দায়ী নন জানিয়ে বলেন, মামলা হয়েছে, পুলিশ ব্যবস্থাগ্রহণ করবে। আর এই মামলায় যারা অভিযুক্ত তারা আওয়ামী লীগের কেউ না, দলীয়ভাবে তাদের কোনো পদপদবিও নেই।
জানা গেছে, গত শনিবার স্থানীয় বাসিন্দা তারেকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলাটি থানায় যাতে নথিভুক্ত না হয়, বিএনপি নেতা মিরাজ বিভিন্ন মহল থেকে সুপারিশ রেখেছিল। কিন্তু কোনো কাজে আসেনি, কারণ যাকে রক্তাক্ত করা হয়েছে, সেই তারেক বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিক ও সংগঠক হাসিবুল ইসলামের ভাই। এই কারণে বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসন।
এই সন্ত্রাস দমন করা এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য গুরুদায়িত্ব বলে মনে করছে এলাকাবাসী। পাশাপাশি যাদের নাম ভাঙিয়ে ত্রাস চালাচ্ছে, তাদেরও বিষয়টি সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি। নতুবা কিছুদিন পরে উত্তর আমানতগঞ্জে সাদিক সমর্থক খুঁজে পাওয়া যাবে না, বরং রাজনৈতিক গুরু পরিবর্তন করে মেয়র খোকন সেরনিয়বাতের অনুকূলে যাবে।
নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে হলেও সাদিক আব্দুল্লাহ এবং নিরব হোসেন টুটুলকে বিএনপি নেতা মিরাজসহ ৯/১০ জনকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করা উচিৎ। এর ব্যত্তয় ঘটলে উত্তর আমানতগঞ্জে আগামীতে সাদিক সমর্থক খুঁজে পাওয়া দুস্কর হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধরা।’
উত্তর আমানতগঞ্জের বিএনপি নেতা মিরাজ, সেলিম এবং নয়ন-সবুজসহ গুটিকয়েক সন্ত্রাসে তটস্থ এলাকাবাসী ঘুরে বসতে শুরু করেছে। বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিক হাসিবুল ইসলামের ভাইদের ওপর হামলাসহ কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা পরে এলাকাবাসী এখন আর আগের মতো মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং তার সেকেন্ড ইন কামান্ড নিরব হোসেন টুটুলের ওপর আস্থা বা ভরসা রাখতে পারছে না। ফলে অনেকেই সাদিক-টুটুল বলয় ছেড়ে বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন, হচ্ছেন। বিশেষ করে সাংবাদিক স্বজন তারেকের ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে মামলা এবং টুটুলের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত মিরাজসহ সকলে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে যাওয়ার পরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, উত্তর আমানতগঞ্জে সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নেই এমন মানুষের সংখ্যা অধিকা, এই অংশ এতদিন নিবর হোসেন টুটুলের সাথে থাকলেও মিরাজ বাহিনীর নিপীড়িন এবং সন্ত্রাসের চিত্র দেখে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের দোষারপ করছেন। ফলশ্রুতিতে বলাই যায়, মিরাজসহ এই কয়েকজন ব্যক্তির কারণে সাবেক সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ এবং নিরব হোসেন টুটুলের বদনাম হয়েছে, হচ্ছে, সেক্ষেত্রে তাদের জনপ্রিয়তাও হ্রাস পাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মহানগর আওয়ামী লীগ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুলের আশ্রয়-প্রশ্রয় মিরাজ এবং সেলিমসহ ৯/১০ জনের একটি বাহিনী সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র থাকাকালীন উত্তর আমানতগঞ্জে দেদার ত্রাস চালিয়েছে। সদর উপজেলার তালতলী বন্দর থেকে জাটকা, চাপিলা এবং রেণুপোনার মতো জাতীয় সম্পদ পাচার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে। পাশাপাশি বেলতলা টু শায়েস্তবাদ পর্যন্ত সমান্তরাল চালিয়ে ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজিসহ সশস্ত্র ত্রাস। সর্বশেষ যার শিকার হয়েলে সাংবাদিক স্বজন তারিকুল ইসলাম, চল্লিশোর্ধ্ব এই যুবকও সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করেন।
ঈদের দুদিন আগে এই বাহিনীর অনুরুপ হামলার শিকার হয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক মাহাবুব সিকদার। জানা গেছে, তাকেসহ তার বাবা ভাইদের মারধরের পর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে কাউনিয়া পুলিশ গিয়ে দোকানটি খুলে দেয়। সেই ঘটনার সপ্তাহখানেকের মাথায় সাংবাদিক স্বজন তারেক এবং তার ভাইদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা করেছে মিরাজ বাহিনী।
স্থানীয় বাসিন্দা নাছির, কবির, সোহেল অভিযোগ করেন, গোটা উত্তর আমানতগঞ্জবাসী সাদিক আব্দুল্লাহ এবং নিরব হোসেন টুটুলের বন্দনা করতো। কিন্তু বিএনপি নেতা মিরাজ, সেলিম, নয়ন, সবুজসহ ৯/১০ জনের বাহিনী যাকে তাকে মারধর করে ক্রমাগত সন্ত্রাস সৃষ্টি করায় মহানগরের শীর্ষ নেতা সাদিকের বদনাম করেছে। এমনকি টুটুলকে বিষয়টি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বারংবার অভিযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়নি, যার প্রভাব পড়েছে সাদিক আব্দুল্লাহ’র রাজনীতিতে। দেখা গেছে, টুটুলের এই বাহিনী মিছিল মিটিংয়ে যে কজন লোক সমাবেত করছে, তাদের অপেক্ষা বিরোধী অংশটি অর্থাৎ স্থানীয় ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ সামসুদ্দোহা আবিদ এবং মৎস্যজীবী লীগ নেতা খান হাবিব জনসমর্থনে এগিয়ে যাচ্ছেন পর্যায়ক্রমে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, মিরাজসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা সাদিক আব্দুল্লাহ এবং নিরব হোসেন টুটুলের নাম ভাঙিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের ত্রাস চালিয়ে আসায় তাদের ওপর স্থানীয়রা সংক্ষুব্ধ, অনেকেই বিকল্প রাজনৈতিক হিসেবে আবিদ ও খান হাবিবকে বেশি মাত্রায় গুরুত্ব দিতে শুরু করেছেন। সেক্ষেত্রে নিরব হোসেন টুটুলের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়, মন্তব্য পাওয়া গেছে।
তবে মিরাজসহ তার বাহিনীর সন্ত্রাসের কারণে এলাকাবাসী কাউনিয়া থানা পুলিশের ওসি মো. আসাদুজ্জামানকেও দুষছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি, মিরাজ, কালু এবং নিজামসহ এই বাহিনীর সদস্যদের চোরাকারবারি করার সুযোগ করে দিয়ে মাসোহারা গ্রহণ করে থাকেন। সাংবাদিক তারিকুল ইসলাম যে বিষয়টি গত শনিবার শেবাচিমে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় উর্ধ্বতন পুলিশ কর্তাদের সামনেই প্রকাশ করে দিয়েছেন। এছাড়া সন্ত্রাসী বাহিনীটির সাথে যে ওসি আসাদের গভীর সংখ্যতা রয়েছে, তা থানা পুলিশের আচারণেও প্রকাশ পেয়েছে, পাচ্ছে।
থানা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এই বাহিনীর সদস্যদের অনেকেই প্রতিদিন ওসির রুমে যাতায়াত করেন। এমনকি তাদের একজন বিএনপি নেতা নিজাম সিকদারকে ওসি রুমে বসে সিগারেট খেতেও দেখা যায়। এবং এগুলো তারা দম্ভোক্তির সুরে এলাকার ঘুরে মানুষের কাছে বলে বেড়ায়। ফলে কাউনিয়া থানা পুলিশের ওপরও উত্তর আমানতগঞ্জবাসী ভরসা না রাখতে পেরে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত এবং পুলিশ কমিশনার মো. জিহাদুল কবির ও র্যাবপ্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মেয়রের চেয়ার হারানোর পরে রাজনৈদিকভাবে দুর্বল থাকা সাদিক আব্দুল্লাহ’র এই দুসময়ে তার নাম ভাঙিয়ে বিএনপি নেতা মিরাজরা যে ত্রাস অব্যাহত রেখেছে, তাতে স্থানীয়ভাবে আরও সমর্থন হ্রাস পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বিপরিতে তার ঘোর শক্র আপন চাচা খোকন সেরনিয়াবাত এবং সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের বলয়-বৃদ্ধি ঘটাবে স্থানীয় জনতা।
এই বিষয়ে সাদিক আব্দুল্লাহ’র বক্তব্য না পাওয়া গেলেও নিরব হোসেন টুটুলের ভাষ্য হচ্ছে, তার নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করলে কোনো ছাড় নয়। উত্তর আমানতগঞ্জে যা হয়েছে, হচ্ছে তার জন্য তিনি দায়ী নন জানিয়ে বলেন, মামলা হয়েছে, পুলিশ ব্যবস্থাগ্রহণ করবে। আর এই মামলায় যারা অভিযুক্ত তারা আওয়ামী লীগের কেউ না, দলীয়ভাবে তাদের কোনো পদপদবিও নেই।
জানা গেছে, গত শনিবার স্থানীয় বাসিন্দা তারেকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলাটি থানায় যাতে নথিভুক্ত না হয়, বিএনপি নেতা মিরাজ বিভিন্ন মহল থেকে সুপারিশ রেখেছিল। কিন্তু কোনো কাজে আসেনি, কারণ যাকে রক্তাক্ত করা হয়েছে, সেই তারেক বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিক ও সংগঠক হাসিবুল ইসলামের ভাই। এই কারণে বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসন।
এই সন্ত্রাস দমন করা এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য গুরুদায়িত্ব বলে মনে করছে এলাকাবাসী। পাশাপাশি যাদের নাম ভাঙিয়ে ত্রাস চালাচ্ছে, তাদেরও বিষয়টি সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি। নতুবা কিছুদিন পরে উত্তর আমানতগঞ্জে সাদিক সমর্থক খুঁজে পাওয়া যাবে না, বরং রাজনৈতিক গুরু পরিবর্তন করে মেয়র খোকন সেরনিয়বাতের অনুকূলে যাবে।
নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে হলেও সাদিক আব্দুল্লাহ এবং নিরব হোসেন টুটুলকে বিএনপি নেতা মিরাজসহ ৯/১০ জনকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করা উচিৎ। এর ব্যত্তয় ঘটলে উত্তর আমানতগঞ্জে আগামীতে সাদিক সমর্থক খুঁজে পাওয়া দুস্কর হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধরা।’
২৯ মে, ২০২৫ ১১:৪৫
চলতি বছরের শেষদিকে দেশের সাত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী মনোনয়নের কাজও এগিয়ে নিয়েছে দলটি।
বরিশাল সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীও প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। হাইকমান্ডের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে নিহত তার ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ছোট ছেলে এবং আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র ছোট ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। বিশেষ করে খোকন সেরনিয়াবাতের ওপরে সুনজর রয়েছে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। তবে একই পরিবারের সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র বড় ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকেও মাথায় রাখছেন তারা।
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের এই দুই সদস্যের কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের আগ মুহূর্তের পরিবেশ এবং পরিবারের অন্যদের মতামতের ভিত্তিতে। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপরও নির্ভর করতে হতে পারে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এতোদিন চট্টগ্রামেই বেশি থেকেছেন হঠাৎ আলোচনায় আসা খোকন সেরনিয়াবাত। বরিশালে গেলে থাকেন তার শ্বশুরের বাসা নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ডে। ঢাকায় বসবাস করেন ধানমণ্ডিতে।
বরিশালের নেতারা জানান, পঁচাত্তরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে নিভৃতচারী পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী খোকন সেরনিয়াবাতের দলে কোনো পদ-পদবি নেই। সাবেক সংসদ সদস্য ও সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পরে প্রথম মহানগর আওয়ামী লীগের শোকসভা ও দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এখন মাঝে-মধ্যেই এসে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য ভোজসভার আয়োজন করে থাকেন ভোজনরসিক খোকন।
পারিবারিকভাবে অনেক আগে থেকেই সম্পর্কে ভাতিজা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে খোকন সেরনিয়াবাতের চাপা দ্বন্দ্ব রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে এখন মনোনয়ন নিয়ে তা বাড়ছে বলেও জানান আওয়ামী লীগের নেতারা।
খোকন সেরনিয়াবাত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবেই শুনেছি। এটি সম্পূর্ণ দল ও নেত্রীর বিষয়। বরিশালের মানুষের চাওয়া-না চাওয়ার বিষয়ও থাকতে পারে। নেত্রী ও বরিশালের মানুষ যদি আমাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চান, তখনতো চিন্তা করতেই হবে’।
বড় ভাইয়ের ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ’র সম্ভাব্য প্রার্থীতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইচ্ছার স্বাধীনতা সবারই আছে। তিনি যদি প্রার্থী হন এবং দল যদি তাকে মনোনয়ন দেয়, তাতে কোনো সমস্যা দেখি না। তার সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই, দ্বন্দ্বও নেই’।
অন্যদিকে ২০১৪ সালে শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্থান ঘটে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র বড় ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র। মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিক বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনেরও নেতৃত্বে আছেন।
বর্তমানে বরিশাল মহানগর ও সদর উপজেলার আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে অঘোষিতভাবেই রয়েছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য হওয়ায় প্রভাব আর নেতৃত্বগুণে তৃণমূলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী তার সঙ্গেই থাকেন।
অবশ্য বদনামও রয়েছে তার। হিরণের সঙ্গে হাসানাত পরিবারের পুরনো দ্বন্দ্ব গড়িয়েছে হিরণপতœী বরিশাল সদর আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজের সঙ্গেও। আর সাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বর্তমানে জেবুন্নেছাপন্থীদেরকে দলে অনেকটাই কোনঠাসা করে রেখেছেন তিনি।
আরও অভিযোগ রয়েছে, বরিশালের সকল সরকারি দপ্তরেই রয়েছে তার একক আধিপত্য। ২০১৫ সালের ৩০ জানুয়ারি মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল সাদিক আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে কুয়াকাটার হোটেলরুমে গুলিবিদ্ধ হন। ওই গুলি সাদিকের আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই বের হয়েছিল বলে প্রথমে অভিযোগ উঠলেও অজ্ঞাত কারণে তা আর সামনে আসেনি। যদিও পরে একান্ত ঘনিষ্টজন টুটুলের চিকিৎসা ও কৃত্রিম পা বসানোর কাজ সাদিকের চেষ্টায়ই সফল হয়।
চেষ্টা করেও সাদিক আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।’’
চলতি বছরের শেষদিকে দেশের সাত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী মনোনয়নের কাজও এগিয়ে নিয়েছে দলটি।
বরিশাল সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীও প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। হাইকমান্ডের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে নিহত তার ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ছোট ছেলে এবং আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র ছোট ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। বিশেষ করে খোকন সেরনিয়াবাতের ওপরে সুনজর রয়েছে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। তবে একই পরিবারের সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র বড় ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকেও মাথায় রাখছেন তারা।
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের এই দুই সদস্যের কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের আগ মুহূর্তের পরিবেশ এবং পরিবারের অন্যদের মতামতের ভিত্তিতে। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপরও নির্ভর করতে হতে পারে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এতোদিন চট্টগ্রামেই বেশি থেকেছেন হঠাৎ আলোচনায় আসা খোকন সেরনিয়াবাত। বরিশালে গেলে থাকেন তার শ্বশুরের বাসা নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ডে। ঢাকায় বসবাস করেন ধানমণ্ডিতে।
বরিশালের নেতারা জানান, পঁচাত্তরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে নিভৃতচারী পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী খোকন সেরনিয়াবাতের দলে কোনো পদ-পদবি নেই। সাবেক সংসদ সদস্য ও সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পরে প্রথম মহানগর আওয়ামী লীগের শোকসভা ও দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এখন মাঝে-মধ্যেই এসে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য ভোজসভার আয়োজন করে থাকেন ভোজনরসিক খোকন।
পারিবারিকভাবে অনেক আগে থেকেই সম্পর্কে ভাতিজা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে খোকন সেরনিয়াবাতের চাপা দ্বন্দ্ব রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে এখন মনোনয়ন নিয়ে তা বাড়ছে বলেও জানান আওয়ামী লীগের নেতারা।
খোকন সেরনিয়াবাত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবেই শুনেছি। এটি সম্পূর্ণ দল ও নেত্রীর বিষয়। বরিশালের মানুষের চাওয়া-না চাওয়ার বিষয়ও থাকতে পারে। নেত্রী ও বরিশালের মানুষ যদি আমাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চান, তখনতো চিন্তা করতেই হবে’।
বড় ভাইয়ের ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ’র সম্ভাব্য প্রার্থীতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইচ্ছার স্বাধীনতা সবারই আছে। তিনি যদি প্রার্থী হন এবং দল যদি তাকে মনোনয়ন দেয়, তাতে কোনো সমস্যা দেখি না। তার সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই, দ্বন্দ্বও নেই’।
অন্যদিকে ২০১৪ সালে শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্থান ঘটে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র বড় ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র। মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিক বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনেরও নেতৃত্বে আছেন।
বর্তমানে বরিশাল মহানগর ও সদর উপজেলার আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে অঘোষিতভাবেই রয়েছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য হওয়ায় প্রভাব আর নেতৃত্বগুণে তৃণমূলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী তার সঙ্গেই থাকেন।
অবশ্য বদনামও রয়েছে তার। হিরণের সঙ্গে হাসানাত পরিবারের পুরনো দ্বন্দ্ব গড়িয়েছে হিরণপতœী বরিশাল সদর আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজের সঙ্গেও। আর সাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বর্তমানে জেবুন্নেছাপন্থীদেরকে দলে অনেকটাই কোনঠাসা করে রেখেছেন তিনি।
আরও অভিযোগ রয়েছে, বরিশালের সকল সরকারি দপ্তরেই রয়েছে তার একক আধিপত্য। ২০১৫ সালের ৩০ জানুয়ারি মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল সাদিক আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে কুয়াকাটার হোটেলরুমে গুলিবিদ্ধ হন। ওই গুলি সাদিকের আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই বের হয়েছিল বলে প্রথমে অভিযোগ উঠলেও অজ্ঞাত কারণে তা আর সামনে আসেনি। যদিও পরে একান্ত ঘনিষ্টজন টুটুলের চিকিৎসা ও কৃত্রিম পা বসানোর কাজ সাদিকের চেষ্টায়ই সফল হয়।
চেষ্টা করেও সাদিক আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।’’
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.