১৩ জুন, ২০২৫ ১৫:৫৫
বরগুনায় মহামারী আকার ধারণ করতে শুরু করেছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সারাদেশে ডেঙ্গু রোগীর প্রায় এক চতুর্থাংশই বরগুনায়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে এ জেলায়। এ অবস্থায় ভর্তি হওয়া আক্রান্ত রোগীদের বিদ্যমান চিকিৎসা সেবা হাসপাতালের সক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রেজওয়ানুর আলাম।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬৭ জন। বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে ১৯৩ জন। এবছর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৬৩১ জন আক্রান্ত রোগী। এর মধ্যে বরগুনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে আক্রান্ত ৫ জনের।
বর্তমানে চিকিৎসা সেবা হাসপাতালের সক্ষমতার বাইরে
গতবছর জেলায় মোট ২ হাজার ৪৩৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ওই বছর বারগুনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৪ জন। তবে এ বছর মাঝামাঝি সময়েই ব্যাপক হারে বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
যা সারাদেশে আক্রান্ত রোগীর শতকরা হিসেবে ২৬ দশমিক ৫১ ভাগই বরগুনায়। অপরদিকে একই সময়ে বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৭৫ জন। সে হিসেবে শুধু বরগুনায় আক্রান্তের সংখ্যা শতকরা প্রায় ৬২ ভাগ।
জেলার প্রায় ১২ লাখ মানুষের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ বছর ধরেই রয়েছে চিকিৎসক সঙ্কট। এছাড়া নার্স, বিভিন্ন জনবলসহ রয়েছে শয্যা সঙ্কটও। হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ৫৫ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ১৯ জন চিকিৎসক।
অপরদিকে দেড় শতাধিক নার্স থাকার কথা থাকলেও কর্মরত নার্সের সংখ্যা মাত্র ৬৬ জন। ফলে হঠাৎ করে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নির্ধারিত ৫৫টি বেডের বিপরীতে প্রতিদিন প্রায় ১৫০-২০০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।
এছাড়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মিলিয়ে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৫ শতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। এরপর আউটডোরেও প্রায় প্রতিদিন ৫ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ফলে চিকিৎসক ও নার্স সঙ্কটে হাসপাতালে আসা ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বর চিকিৎসক ও নার্সদের।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ইশরাত জাহান বলেন, বর্তমানে আমাদের জনবল অনেক কম। প্রতিদিন যে হারে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে তা সামাল দেয়া আমাদের পক্ষে খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা এবার কোরবানির ঈদেও ছুটি পাইনি।
পরিবার রেখে আমরা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছি। একজন রোগীর কাছে গিয়ে আরেক জনের রোগীর কাছে যেতে দেরি হলে অনেক সময় শুনতে হয় নার্সদের ব্যবহার ভালো না। বরগুনায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও ১০০ শয্যার নার্স দিয়ে চলছে হাসপাতালে কার্যক্রম। এতে প্রায় প্রতিদিন পাঁচ শতাধিকেরও বেশি ভর্তি রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় আমাদের।
চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা
সরেজমিনে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন এলাকার রোগীদের পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হলেই ভর্তি করা হচ্ছে হাসপাতালে। তবে এসব ভর্তি রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তির পর প্রতিদিন দেখা মিলছে না চিকিৎসকের।
এছাড়াও ভর্তি রোগী বেড়ে যাওয়ায় বেড সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এতে রোগীদের যায়গা হয়েছে হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোর এবং লিফটের দরজার সামনে। ভর্তি রোগীদের আরও অভিযোগ বাইরের ক্লিনিকে করতে হয় প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এমনকি ওষুধও কিনতে হয় বাইরে থেকে।
হাসপাতালে ভর্তি শিল্পী নামে এক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বলেন, আমি এক সপ্তাহ ধরে ভর্তি আছি। হাসপাতালে কোনো পরীক্ষা হয় না। বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে হয়। প্রয়োজনীয় ওষুধও কিনতে হচ্ছে বাইরের দোকান থেকে।
মো. সাইদুল নামে ভর্তি রোগীর এক স্বজন বলেন, আমার খালা ডেঙ্গু পজিটিভ হওয়ায় তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তবে এই মুহূর্তে হাসপাতালে অনেক বেশি রোগী ভর্তি থাকায় কোনো বেড পাইনি। বাধ্য হয়ে ফ্লোরেই বিছানা করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে আসার পর প্রায় চার ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেছে কোনো চিকিৎসক আমাদের কাছে আসেনি। বরগুনায় যে হারে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে চিকিৎসক বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবে এখন নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাসকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, গত বছর জুন মাসের তুলনায় এবছর রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে রোগী ভর্তি হলে তাদেরকে আমাদের চিকিৎসা দিতে হবে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকলেও ম্যানেজ করতে হবে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সকলে সচেতন থাকলে এবং যার যার বাসা বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে এত বেশি মানুষ আক্রান্ত হতো বলে মনে হয় না। সামাজিকভাবে সবার দায়িত্ব রয়েছে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ
বরগুনায় হঠাৎ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, পৌরসভা কতৃপক্ষসহ, বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে একাধিক সভা করেছেন জেলা প্রশাসন।
এছাড়া চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল। পরিস্থিতি বিবেচনায় হাসপাতালে ইতিমধ্যে দুজন চিকিৎসক এবং দশজন সিনিয়র নার্স পদায়ন করা হয়েছে। জেলার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আরও কয়েকজন চিকিৎসককে পদায়নের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন বিভাগীয় পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল।
এ বিষয়ে বরগুনায় একটি মতবিনিময় সভা শেষে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, শুধু ডেঙ্গু নয় যেকোনো স্বাস্থ্যের যদি বিপর্যয় হয় স্বাস্থ্য বিভাগ মানুষের জন্য সবসময় পাশে থাকবে। তবে বরগুনার বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা।
কারণ বিভাগের ৫ টি জেলায় ডেঙ্গুতে যা আক্রান্ত হয় তার থেকে বেশি আক্রান্ত হয় বরগুনায়। যেহেতু ডেঙ্গু রোগ মশার কারণে ছড়ায় সেক্ষেত্রে মশা নিধনের বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ উপদেশ-পরামর্শ দিতে পারে।
সরকারিভাবে মশা নিধনের কাজে যে সমস্ত দপ্তর নিয়োজিত রয়েছেন, আশা করি তারা স্থানীয় প্রশাসন,স্বাস্থ্য বিভাগসহ সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে বরগুনায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বরগুনায় ডেঙ্গু হটস্পট
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সবশেষ ১ হাজার ৬৩১ জন আক্রান্ত রোগীর এলাকা ভিত্তিক একটি পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী ৪১৪ জন রোগী সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের বাসিন্দা। এর মধ্যে ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ মনসাতলী নামক একটি এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২০ জন।
ওই এলাকার বাসিন্দা গাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, আমাদের এ এলাকাটি বরগুনা পৌরসভার একদম কাছাকাছি হওয়ায় ঘনবসতির সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাটি ইউনিয়নের আওতায় থাকায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কোনো কর্মী নেই। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই এলাকার বিভিন্ন জায়গার ডোবা নালা ও নিচু জমিতে পানি জমে থাকে।
বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতির বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রেজওয়ানুর আলম বলেন, বরগুনাতে ডেঙ্গুর পিক সিজন চলছে। ৫৫ বেডের অনুকূলে ভর্তির রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে আমাদের চিকিৎসকসহ নার্স সংখ্যাও কম।
হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে প্রতি ঘরেই ডেঙ্গু রোগী আছে। দিনকে দিন এটি মহামারী আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। আমরা বর্তমানে মহা বিপর্যয়ের সম্মুখীন, চিকিৎসা সেবা আমাদের সক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী বেড়ে যাওয়ার বিষয় জানতে চাইলে বরগুনার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ্ বলেন, বরগুনায় হঠাৎ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কারণ বলা কঠিন। মূলত সরকারের রোগতত্ত, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনষ্টিটিউট (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু বা এ ধরনের রোগের গবেষণামূলক কাজ করেন। এ বিষয়ে তারাই হয়তো সুনির্দিষ্ট কারণ বলতে পারবেন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, গত দুই মাস ধরেই বরগুনায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কয়েকটি সভা করেছি। মশক নিধনে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অব্যাহত রেখেছেন।
হাসপাতালের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। বিশেষ করে হাসপাতালে চিকিৎসক এবং নার্স সঙ্কটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বরগুনায় মহামারী আকার ধারণ করতে শুরু করেছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সারাদেশে ডেঙ্গু রোগীর প্রায় এক চতুর্থাংশই বরগুনায়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে এ জেলায়। এ অবস্থায় ভর্তি হওয়া আক্রান্ত রোগীদের বিদ্যমান চিকিৎসা সেবা হাসপাতালের সক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রেজওয়ানুর আলাম।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬৭ জন। বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে ১৯৩ জন। এবছর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৬৩১ জন আক্রান্ত রোগী। এর মধ্যে বরগুনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে আক্রান্ত ৫ জনের।
বর্তমানে চিকিৎসা সেবা হাসপাতালের সক্ষমতার বাইরে
গতবছর জেলায় মোট ২ হাজার ৪৩৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ওই বছর বারগুনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৪ জন। তবে এ বছর মাঝামাঝি সময়েই ব্যাপক হারে বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
যা সারাদেশে আক্রান্ত রোগীর শতকরা হিসেবে ২৬ দশমিক ৫১ ভাগই বরগুনায়। অপরদিকে একই সময়ে বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৭৫ জন। সে হিসেবে শুধু বরগুনায় আক্রান্তের সংখ্যা শতকরা প্রায় ৬২ ভাগ।
জেলার প্রায় ১২ লাখ মানুষের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ বছর ধরেই রয়েছে চিকিৎসক সঙ্কট। এছাড়া নার্স, বিভিন্ন জনবলসহ রয়েছে শয্যা সঙ্কটও। হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ৫৫ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ১৯ জন চিকিৎসক।
অপরদিকে দেড় শতাধিক নার্স থাকার কথা থাকলেও কর্মরত নার্সের সংখ্যা মাত্র ৬৬ জন। ফলে হঠাৎ করে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নির্ধারিত ৫৫টি বেডের বিপরীতে প্রতিদিন প্রায় ১৫০-২০০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।
এছাড়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মিলিয়ে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৫ শতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। এরপর আউটডোরেও প্রায় প্রতিদিন ৫ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ফলে চিকিৎসক ও নার্স সঙ্কটে হাসপাতালে আসা ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বর চিকিৎসক ও নার্সদের।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ইশরাত জাহান বলেন, বর্তমানে আমাদের জনবল অনেক কম। প্রতিদিন যে হারে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে তা সামাল দেয়া আমাদের পক্ষে খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা এবার কোরবানির ঈদেও ছুটি পাইনি।
পরিবার রেখে আমরা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছি। একজন রোগীর কাছে গিয়ে আরেক জনের রোগীর কাছে যেতে দেরি হলে অনেক সময় শুনতে হয় নার্সদের ব্যবহার ভালো না। বরগুনায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও ১০০ শয্যার নার্স দিয়ে চলছে হাসপাতালে কার্যক্রম। এতে প্রায় প্রতিদিন পাঁচ শতাধিকেরও বেশি ভর্তি রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় আমাদের।
চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা
সরেজমিনে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন এলাকার রোগীদের পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হলেই ভর্তি করা হচ্ছে হাসপাতালে। তবে এসব ভর্তি রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তির পর প্রতিদিন দেখা মিলছে না চিকিৎসকের।
এছাড়াও ভর্তি রোগী বেড়ে যাওয়ায় বেড সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এতে রোগীদের যায়গা হয়েছে হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোর এবং লিফটের দরজার সামনে। ভর্তি রোগীদের আরও অভিযোগ বাইরের ক্লিনিকে করতে হয় প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এমনকি ওষুধও কিনতে হয় বাইরে থেকে।
হাসপাতালে ভর্তি শিল্পী নামে এক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বলেন, আমি এক সপ্তাহ ধরে ভর্তি আছি। হাসপাতালে কোনো পরীক্ষা হয় না। বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে হয়। প্রয়োজনীয় ওষুধও কিনতে হচ্ছে বাইরের দোকান থেকে।
মো. সাইদুল নামে ভর্তি রোগীর এক স্বজন বলেন, আমার খালা ডেঙ্গু পজিটিভ হওয়ায় তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তবে এই মুহূর্তে হাসপাতালে অনেক বেশি রোগী ভর্তি থাকায় কোনো বেড পাইনি। বাধ্য হয়ে ফ্লোরেই বিছানা করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে আসার পর প্রায় চার ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেছে কোনো চিকিৎসক আমাদের কাছে আসেনি। বরগুনায় যে হারে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে চিকিৎসক বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবে এখন নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাসকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, গত বছর জুন মাসের তুলনায় এবছর রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে রোগী ভর্তি হলে তাদেরকে আমাদের চিকিৎসা দিতে হবে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকলেও ম্যানেজ করতে হবে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সকলে সচেতন থাকলে এবং যার যার বাসা বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে এত বেশি মানুষ আক্রান্ত হতো বলে মনে হয় না। সামাজিকভাবে সবার দায়িত্ব রয়েছে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ
বরগুনায় হঠাৎ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, পৌরসভা কতৃপক্ষসহ, বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে একাধিক সভা করেছেন জেলা প্রশাসন।
এছাড়া চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল। পরিস্থিতি বিবেচনায় হাসপাতালে ইতিমধ্যে দুজন চিকিৎসক এবং দশজন সিনিয়র নার্স পদায়ন করা হয়েছে। জেলার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আরও কয়েকজন চিকিৎসককে পদায়নের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন বিভাগীয় পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল।
এ বিষয়ে বরগুনায় একটি মতবিনিময় সভা শেষে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, শুধু ডেঙ্গু নয় যেকোনো স্বাস্থ্যের যদি বিপর্যয় হয় স্বাস্থ্য বিভাগ মানুষের জন্য সবসময় পাশে থাকবে। তবে বরগুনার বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা।
কারণ বিভাগের ৫ টি জেলায় ডেঙ্গুতে যা আক্রান্ত হয় তার থেকে বেশি আক্রান্ত হয় বরগুনায়। যেহেতু ডেঙ্গু রোগ মশার কারণে ছড়ায় সেক্ষেত্রে মশা নিধনের বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ উপদেশ-পরামর্শ দিতে পারে।
সরকারিভাবে মশা নিধনের কাজে যে সমস্ত দপ্তর নিয়োজিত রয়েছেন, আশা করি তারা স্থানীয় প্রশাসন,স্বাস্থ্য বিভাগসহ সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে বরগুনায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বরগুনায় ডেঙ্গু হটস্পট
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সবশেষ ১ হাজার ৬৩১ জন আক্রান্ত রোগীর এলাকা ভিত্তিক একটি পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী ৪১৪ জন রোগী সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের বাসিন্দা। এর মধ্যে ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ মনসাতলী নামক একটি এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২০ জন।
ওই এলাকার বাসিন্দা গাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, আমাদের এ এলাকাটি বরগুনা পৌরসভার একদম কাছাকাছি হওয়ায় ঘনবসতির সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাটি ইউনিয়নের আওতায় থাকায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কোনো কর্মী নেই। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই এলাকার বিভিন্ন জায়গার ডোবা নালা ও নিচু জমিতে পানি জমে থাকে।
বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতির বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রেজওয়ানুর আলম বলেন, বরগুনাতে ডেঙ্গুর পিক সিজন চলছে। ৫৫ বেডের অনুকূলে ভর্তির রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে আমাদের চিকিৎসকসহ নার্স সংখ্যাও কম।
হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে প্রতি ঘরেই ডেঙ্গু রোগী আছে। দিনকে দিন এটি মহামারী আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। আমরা বর্তমানে মহা বিপর্যয়ের সম্মুখীন, চিকিৎসা সেবা আমাদের সক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী বেড়ে যাওয়ার বিষয় জানতে চাইলে বরগুনার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ্ বলেন, বরগুনায় হঠাৎ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কারণ বলা কঠিন। মূলত সরকারের রোগতত্ত, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনষ্টিটিউট (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু বা এ ধরনের রোগের গবেষণামূলক কাজ করেন। এ বিষয়ে তারাই হয়তো সুনির্দিষ্ট কারণ বলতে পারবেন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, গত দুই মাস ধরেই বরগুনায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কয়েকটি সভা করেছি। মশক নিধনে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অব্যাহত রেখেছেন।
হাসপাতালের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। বিশেষ করে হাসপাতালে চিকিৎসক এবং নার্স সঙ্কটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৭:১০
ক্ষতিপূরণ এবং ন্যায্য রূপান্তর এখনই' এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জলবায়ু ঋণ বাতিল করার দাবিতে বরগুনার তালতলীতে পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), পিপীলিকা'র পাঠশালা, বিডি ক্লিন-তালতলী ও নিদ্রা পর্যটন উদ্যোক্তা কমিটির আয়োজনে এ পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ পদযাত্রা উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু হয়ে সোনাকাটা ইউনিয়নের নিদ্রার চর সৈকতে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শতাধিক শিক্ষার্থী পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের শরীরে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবি সম্বলিত টি শার্ট ও বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা যায়।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সাধারণ-সম্পাদক আবু জাফর সালেহ পদযাত্রা কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন। এসময় বক্তব্য রাখেন, বরগুনা জেলা টেলিভিশন ফোরামের সাবেক সাধারণ-সম্পাদক বেলাল হোসেন মিলন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ'র (তালতলী-আমতলী) সমন্বয়ক আরিফুর রহমান, পরিবেশ ও উন্নয়নকর্মী এম মিলন, সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী মো. মোস্তাফিজ, তালতলী চারুকলা একাডেমীর পরিচালক রফিকুল ইসলাম অন্তর প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, 'আমাদের সকল প্রকার জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং সকল ক্ষেত্রে নবায়ন শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।উপকূলীয় অঞ্চলে সূর্যের তাপ বেশি উষ্ণ বিধায় এখানে সোলার প্রযুক্তি স্থাপন, সমুদ্র তীরের বাতাসকে ব্যবহার করে বায়োবিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্রামীণ এলাকায় বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করতে হবে। সকল প্রকার জলবায়ু ঋণ বাতিল করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।'
ক্ষতিপূরণ এবং ন্যায্য রূপান্তর এখনই' এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জলবায়ু ঋণ বাতিল করার দাবিতে বরগুনার তালতলীতে পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), পিপীলিকা'র পাঠশালা, বিডি ক্লিন-তালতলী ও নিদ্রা পর্যটন উদ্যোক্তা কমিটির আয়োজনে এ পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ পদযাত্রা উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু হয়ে সোনাকাটা ইউনিয়নের নিদ্রার চর সৈকতে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শতাধিক শিক্ষার্থী পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের শরীরে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবি সম্বলিত টি শার্ট ও বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা যায়।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সাধারণ-সম্পাদক আবু জাফর সালেহ পদযাত্রা কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন। এসময় বক্তব্য রাখেন, বরগুনা জেলা টেলিভিশন ফোরামের সাবেক সাধারণ-সম্পাদক বেলাল হোসেন মিলন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ'র (তালতলী-আমতলী) সমন্বয়ক আরিফুর রহমান, পরিবেশ ও উন্নয়নকর্মী এম মিলন, সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী মো. মোস্তাফিজ, তালতলী চারুকলা একাডেমীর পরিচালক রফিকুল ইসলাম অন্তর প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, 'আমাদের সকল প্রকার জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং সকল ক্ষেত্রে নবায়ন শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।উপকূলীয় অঞ্চলে সূর্যের তাপ বেশি উষ্ণ বিধায় এখানে সোলার প্রযুক্তি স্থাপন, সমুদ্র তীরের বাতাসকে ব্যবহার করে বায়োবিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্রামীণ এলাকায় বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করতে হবে। সকল প্রকার জলবায়ু ঋণ বাতিল করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।'
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:৩০
বরগুনায় মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাদীকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস. এম. শরীয়ত উল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব স্বপন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মিলটন মুন্সি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকার মো. শাহজাহান মুন্সির ছেলে।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, মিলটন মুন্সি বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের দক্ষিণ লাকুরতলা এলাকায় অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সুলতান আহমেদের সম্পত্তির দেখভাল করতেন। জমি দখল নিয়ে হুমকি ও ভয়ভীতির অভিযোগে তিনি মো. মহিউদ্দিন বাদল (৫৫) ও মো. নাসির উদ্দিন (৫৮) নামে দুইজনের বিরুদ্ধে বরগুনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আদালত জিডিটি আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।
পরবর্তীতে মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০(২) ধারায় বাদী মিলটন মুন্সিকে ৭ দিনের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব স্বপন বলেন, ‘বাদী মিলটন মুন্সি আদালতে তার অভিযোগের পক্ষে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন। ফলে অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০(২) ধারায় আদালত তাকে সাত দিনের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন। অভিযুক্ত দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এটি আইন অঙ্গনে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।’
বরগুনায় মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাদীকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস. এম. শরীয়ত উল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব স্বপন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মিলটন মুন্সি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকার মো. শাহজাহান মুন্সির ছেলে।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, মিলটন মুন্সি বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের দক্ষিণ লাকুরতলা এলাকায় অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সুলতান আহমেদের সম্পত্তির দেখভাল করতেন। জমি দখল নিয়ে হুমকি ও ভয়ভীতির অভিযোগে তিনি মো. মহিউদ্দিন বাদল (৫৫) ও মো. নাসির উদ্দিন (৫৮) নামে দুইজনের বিরুদ্ধে বরগুনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আদালত জিডিটি আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।
পরবর্তীতে মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০(২) ধারায় বাদী মিলটন মুন্সিকে ৭ দিনের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব স্বপন বলেন, ‘বাদী মিলটন মুন্সি আদালতে তার অভিযোগের পক্ষে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন। ফলে অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০(২) ধারায় আদালত তাকে সাত দিনের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন। অভিযুক্ত দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এটি আইন অঙ্গনে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।’
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:৩৬
বরগুনার তালতলী উপজেলায় ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পর এবার নিজের ছয় বছর বয়সী ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে চাচা হাবিব ওরফে হাবিল খান (২৭)। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটার পরপরই পুলিশ ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহত তাননুর আক্তার নাবিল (৬) ইদুপাড়া গ্রামের দুলাল খানের মেয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে দোকানে বিস্কুট কিনতে গেলে হঠাৎ পেছন দিক থেকে চাচা হাবিল একটি গড়ান কাঠের লাঠি দিয়ে শিশুটির মাথা ও হাতে আঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনরা তাকে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ডা. রকিবুল ইসলাম তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফার্ড করেন। পথে শিশুটি মৃত্যুবরণ করে।
এদিকে হত্যার ঘটনার পর স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করে এবং পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘাতক হাবিল ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে তার বড় ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেছিল। সে সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর। শিশু আইনে সে ৯ বছর সাজাভোগের পর ২০২৪ সালের শুরুর দিকে জামিনে মুক্তি পায়।
মুক্তির এক বছর না যেতেই আবারও ঘাতক রূপে ফিরে এলো সে। এবার বড়ভাইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের কন্যা তাননুর আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পর চাচার হাতে এবার ভাতিজি খুন
নিহত শিশুর বাবা দুলাল খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে হত্যা করেছে। এখন আমার ছোট মেয়ে তাননুকেও পিটিয়ে মেরেছে। আমার জীবনে আর কিছুই রইল না। আমি ঘাতক হাবিলের ফাঁসি চাই।’
প্রত্যক্ষদর্শী রানা হাওলাদার জানান, তাননু দোকানে যাওয়ার পথে হাবিল পেছন দিক থেকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
ইউপি সদস্য মো. টুকু সিকদার ও সাবেক ইউপি সদস্য সালাম হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করলে সে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে।’
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটির মাথা ও হাতের কনুইয়ে গুরুতর জখম ছিল। বরিশালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।’
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, ‘ঘাতক হাবিল খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ থানায় রাখা হয়েছে এবং বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। শিশুর বাবা দুলাল খান বাদী হয়ে হাবিলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।’
বরগুনার তালতলী উপজেলায় ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পর এবার নিজের ছয় বছর বয়সী ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে চাচা হাবিব ওরফে হাবিল খান (২৭)। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটার পরপরই পুলিশ ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহত তাননুর আক্তার নাবিল (৬) ইদুপাড়া গ্রামের দুলাল খানের মেয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে দোকানে বিস্কুট কিনতে গেলে হঠাৎ পেছন দিক থেকে চাচা হাবিল একটি গড়ান কাঠের লাঠি দিয়ে শিশুটির মাথা ও হাতে আঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনরা তাকে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ডা. রকিবুল ইসলাম তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফার্ড করেন। পথে শিশুটি মৃত্যুবরণ করে।
এদিকে হত্যার ঘটনার পর স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করে এবং পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘাতক হাবিল ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে তার বড় ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেছিল। সে সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর। শিশু আইনে সে ৯ বছর সাজাভোগের পর ২০২৪ সালের শুরুর দিকে জামিনে মুক্তি পায়।
মুক্তির এক বছর না যেতেই আবারও ঘাতক রূপে ফিরে এলো সে। এবার বড়ভাইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের কন্যা তাননুর আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পর চাচার হাতে এবার ভাতিজি খুন
নিহত শিশুর বাবা দুলাল খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে হত্যা করেছে। এখন আমার ছোট মেয়ে তাননুকেও পিটিয়ে মেরেছে। আমার জীবনে আর কিছুই রইল না। আমি ঘাতক হাবিলের ফাঁসি চাই।’
প্রত্যক্ষদর্শী রানা হাওলাদার জানান, তাননু দোকানে যাওয়ার পথে হাবিল পেছন দিক থেকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
ইউপি সদস্য মো. টুকু সিকদার ও সাবেক ইউপি সদস্য সালাম হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করলে সে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে।’
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটির মাথা ও হাতের কনুইয়ে গুরুতর জখম ছিল। বরিশালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।’
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, ‘ঘাতক হাবিল খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ থানায় রাখা হয়েছে এবং বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। শিশুর বাবা দুলাল খান বাদী হয়ে হাবিলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।’
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.