dreamliferupatolibarisal

বরিশাল

বাবুগঞ্জে দলীয় কোন্দলেই কি স্থগিত বিএনপির সম্মেলন?

আরিফ আহমেদ মুন্না

আরিফ আহমেদ মুন্না

২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৯:৫২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বাবুগঞ্জে দলীয় কোন্দলেই কি স্থগিত বিএনপির সম্মেলন?

বাবুগঞ্জে ১৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির উপজেলা সম্মেলন উপলক্ষ্যে বিতরণ করা আমন্ত্রণ পত্র।

দাওয়াত কার্ড বিলি শেষ হয়েছিল। মঞ্চ নির্মাণের কাজও প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে ছিল। নেতাকর্মীদের মাঝে ছিল উচ্ছ্বাস আর উদ্দীপনা। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পরে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ঘিরে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল উৎসবের প্রাণচাঞ্চল্য। তবে সম্মেলনের মাত্র একদিন আগে আচমকা স্থগিত করা হয়েছে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ওই ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পরে শুক্রবার ১৯ সেপ্টেম্বর ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মূহুর্তে তা অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করা হয়। বরিশাল-৩ আসনের (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের প্রার্থী কেন্দ্রীয় দুই হেভিওয়েট নেতার দ্বন্দ্বের কারণেই শেষ মূহুর্তে এই সম্মেলন স্থগিত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই সম্মেলন স্থগিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করলেও এর সঠিক কারণ নিশ্চিত করতে পারেনি বিএনপির দলীয় হাইকমান্ড।

বিএনপির স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, বাবুগঞ্জ উপজেলা সম্মেলন আয়োজনের মূল নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তিনি ওই সম্মেলনের প্রধান অতিথি ছিলেন। তাকে প্রধান অতিথি করেই শুক্রবারের ওই উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের দাওয়াত কার্ড বিলি করা হয়। এদিকে বিএনপির অপর একটি অংশের নেতৃত্ব দেওয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমানের অনুসারীদের অভিযোগ, তাদের কাউকেই রাখা হয়নি সম্মেলনের কোনো আয়োজনে। উপজেলা বিএনপির একটি বড় অংশকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বিগত ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড সম্মেলনে গঠিত কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়নি দলের ত্যাগী এবং নির্যাতিত নেতাকর্মীদের। এমন অভিযোগ হাইকমান্ডে যাওয়ার পরেই দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম থেকে সম্মেলন স্থগিতের নির্দেশ আসে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। এতে জয়নুল আবেদীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ খানকে আহবায়ক এবং ওয়াহিদুল ইসলাম প্রিন্সকে সদস্য সচিব করে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এর আগে আওয়ামী লীগ আমলের প্রায় পুরো সময়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন ইসরাত হোসেন কচি তালুকদার। তিনি বেগম সেলিমা রহমানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে সেই কমিটিতেও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ওয়াহিদুল ইসলাম প্রিন্স।

বরিশাল জেলা বিএনপির সদস্য ও বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইসরাত হোসেন কচি তালুকদার বলেন, 'বিগত ১৭ বছর রাজপথে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে হামলা-মামলা ও কারাবরণকারী নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করে বাবুগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে বিভিন্ন দলের বিতর্কিত লোকজন নিয়ে ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন কমিটি করা হয়েছে। যেসব কমিটি বিলুপ্ত হয়েছিল সেই বিলুপ্ত কমিটিই পুনর্বহাল করে নিজেদের অনুগত লোকজন নিয়ে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এবং সদস্য সচিব। ফলে দলের তৃণমূল পর্যায়ের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। নিরুপায় হয়ে তারা দলের হাইকমান্ডের কাছে এসব তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগ জানায়।'

বরিশাল জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আওলাদ হোসেন বলেন, 'বিএনপির বর্তমান আহবায়ক এবং সদস্য সচিব নিজেদের কোরাম ভারী করতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীদের এনে বিএনপিতে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ১৭ বছর লড়াই-সংগ্রাম করা বিএনপির ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের ওয়ার্ড এবং ইউনিয়নের পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ওয়ার্ড এবং ইউনিয়নগুলোতে নিজেদের ইচ্ছামতো লোক এনে বসানো হয়েছে। বিএনপির দুঃসময়ে এদের কাউকে অতীতেও খুঁজে পাওয়া যায়নি আর ভবিষ্যতেও পাওয়া যাবে না।'

তবে এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সুলতান আহমেদ খান। তিনি বলেন, 'উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপস্থিততে সম্মেলন করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং সদস্য সচিব উপস্থিত ছিলেন। বরিশাল-৩ আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক নেতা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের বিএনপিতে জায়গা দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানের অনুসারীদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগও সত্য নয়। ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন কমিটিতে তাদের অনেকেই স্থান পেয়েছে। এখন কেউ যদি ইচ্ছা করে সম্মেলনে না আসে আর দূরে বসে দোষ খুঁজে বেড়ায়, তারা চাইলে অনেককিছুই বলতে পারে।'

আহবায়ক সুলতান আহমেদ খান আরো বলেন, '১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আমি বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলাম। এরপরে ২০১০ সালে ইসরাত হোসেন কচি তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিতে আমাকে এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ফকিরকে সাধারণ সদস্য পদেও রাখা হয়নি। তবুও জেলা এবং উপজেলার বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছি। আওয়ামী লীগের আমলে মহাসড়ক অবরোধের প্রথম নাশকতার মামলা আমার নামেই হয়েছে। আমি ২০১৮ সালে উপজেলা বিএনপির কমিটিতে সদস্য পদ ফিরে পাই এবং ২০২৩ সালে আহবায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করি। ২০২৪ সালে আমাকে আহবায়ক রেখেই আবার আহবায়ক কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। সম্মেলনের মাধ্যমে সবাইকে নিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ উপজেলা সম্মেলন করতে চেয়েছিলাম। তবে জেলার সদস্য সচিবের মাধ্যমে যতদূর জেনেছি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সরাসরি নির্দেশে সম্মেলন স্থগিত হয়েছে। শুধু বাবুগঞ্জ নয়, বরিশাল জেলার সব সম্মেলনই স্থগিত করা হয়েছে।'

বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহীন বলেন, 'রাজনৈতিক দলে দলীয় বিরোধ, মতভেদ আছে এবং থাকবে। এটা গণতন্ত্রের একটা অংশ। বাবুগঞ্জ উপজেলা সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে। তিনি জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের মধ্যে কমিটি নিয়ে কোনো বিভাজন কিংবা সংঘাত চান না।'

এ বিষয়ে জানতে বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই দল চায় না এই সময়ে স্থানীয় বিরোধ আরো বেড়ে যাক। সে কারণেই সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। সামনের নির্বাচন অনেক কঠিন হবে। এই নির্বাচন বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কে কার লোক, সেটা নিয়ে বিভাজন করার সময় নয় এখন। সকল মতভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে হবে।' #

বরিশালে ডেঙ্গু আক্রান্ত বৃদ্ধের মৃত্যু

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:৪১

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বরিশালে ডেঙ্গু আক্রান্ত বৃদ্ধের মৃত্যু

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সুলতান খান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল। মৃত সুলতান খান পটুয়াখালী জেলার দুমকী উপজেলার বাসিন্দা।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৬ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরগুনা হাসপাতালে ৫৪ জন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন, বরিশাল জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ জন, পটুয়াখালীতে ২৯ জন, ভোলায় ৫ জন, পিরোজপুরে ১৭ জন ও ঝালকাঠিতে ২ জন। বর্তমানে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৪০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বিভাগের দুই মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৫ হাজার ৮৯২ রোগী ভর্তি হয়েছেন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ৪১৬ জন।

এছাড়া চলতি বছর গোটা বিভাগে ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জন, বরগুনায় ১৪ ও পটুয়াখালীকে ১ জন।

মেঘনায় অভিযানে আটক ১১ জেলের জেল-জরিমানা

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৩:০২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

মেঘনায় অভিযানে আটক ১১ জেলের জেল-জরিমানা

বরিশালের হিজলার মেঘনা নদীতে যৌথ অভিযান চালিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারের সময় ১১ জেলেকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) হিজলার মেঘনা নদীতে কোস্ট গার্ড সদস্যদের সহযোগিতায় উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এ অভিযান পরিচালনা করে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোহাম্মদ আলম জানান, অভিযানে আটক ১১ জনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইলিয়াস সিকদার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাঁচজনকে আট দিন করে কারাদণ্ড দেন।

এছাড়া বাকিদের মধ্যে একজনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও চারজনকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বয়স কম থাকায় এক কিশোরকে মুচলেকার মাধ্যমে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বরিশালের সেই ৩৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার কাজ শুরু

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

১৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:২২

প্রিন্ট এন্ড সেভ

বরিশালের সেই ৩৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার কাজ শুরু

বরিশাল শহরের ঝুঁকিপূর্ণ সেই ৩৪টি ভবন ভাঙার কাজ শুরু করেছে সিটি কর্পোরেশন। শুক্রবার সকালে শহরের সদর রোডের তিনতলা দুটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সূচনা হয়। দীর্ঘ ১০ বছর পূর্বে এই ভবনসমূহকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং এতে বসবাসরতদের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে বলে সিটি প্রশাসন ঘোষণা করে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে ভবনগুলো অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগেপরে এনিয়ে দৈনির রূপালী বাংলাদেশসহ একাধিক পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও হয়।

সূত্র জানায়, কীর্তনখোলার তীরের শহর বরিশালের ৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৩৫টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে বিসিসি। ২০১৩ সালের জরিপে এসব ভবনকে বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে। এই ভবনের বেশিরভাগ তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় বেশ কয়েকবার ভাঙার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয় সিটি কর্পোরেশন। এবং ভবনগুলো যে আইনগতভাবে ভাঙতে না পারে তার জন্য আদালতে মামলাও করা হয়। পরবর্তীতে আইনি জটিলতা এড়াতে বিষয়টি নিয়ে সিটি কর্পোরেশন তৎপরতা দেখায়নি বা নিশ্চুপ হয়ে যায়।

জানা গেছে, সদর রোডসংলগ্ন বহুতল ভবন দুটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল অবৈধভাকে দখল করে রেখেছিলেন। এই কাজী কামলা বরিশাল-১ আসনের সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ শ্যালক। তিনি আওয়ামী লীগের শাসনামলে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে বরিশালে ব্যাপক সন্ত্রাস করেছেন। সদর রোডে ভবন দুটির নিচের দোকান দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে নিজে দখল করে রাখেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে তিনি একাধিক রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকলেও জামিনে মুক্ত হয়ে আত্মগোপনে আছেন।

একটি ভবনের মালিক নজরুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তাঁর চাচা উলফাত হাজি এবং শুককুর হাজি ১৯৬০ সালে একটি ভবন ও ৩০ বছর আগে আরেকটি ভবন সদর রোডে নির্মাণ করেন। ২০১৩ সালে একটি পাকা ভবনে ফাটল দেখা দেয় এবং পাশের ভবন ঘেঁষে হেলে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন ২০১৩ সালে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু প্রভাবশালী ভাড়াটেরা জোর করে দখলে রাখায় ওই সময় ভাঙার ভবন ভাঙা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পরে ভবন ভাঙার জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা সিটি করপোরেশনে জমা দেন নজরুল ইসলাম। তারপর ভবনটি শুক্রবার সকাল থেকে ভবনটি অপসারণে কাজ শুরু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস। এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উলফাত এবং শাকুর ম্যানশন নামের ওই দুটি ভবন ইতিপূর্বে ভাঙার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভাড়াটেরা আদালতে গেছেন। আমরা কোর্টের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রায় পেয়েছি। এর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে সেখানে নোটিস দিয়েছিলাম, কিন্তু তারপরও ভাড়াটেরা দখল ছাড়েননি। শুক্রবার সকালে তাদের চূড়ান্তভাবে চলে যাওয়ার নোটিস দিয়ে ভবন ভাঙা শুরু হয়। আশা করছি, সাত দিনের মধ্যে ভবন দুটি ভেঙে ফেলা সম্ভব।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী জানান, নগরের কাউনিয়া এলাকার জানুকি সিংহ রোডের মতি লস্করের বাড়ি, পূর্ব বগুড়া রোড কাজি অফিসের পেছনে রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন, আগরপুর রোডে মহিলা কলেজসংলগ্ন মনু মিয়ার ভবন এবং সদর রোডসংলগ্ন ফজলুল হক অ্যাভিনিউর হোটেল বাহাদুর ভবনসহ ৩৪টি ভবনই পর্যায়ক্রমে ভেঙে ফেলা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু অনুমোদনহীন এমন কিছু ভবনও রয়েছে।’

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.