
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১৮:০৯
রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণ করতে বারণ, চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করলে নেওয়া হবে ব্যবস্থা
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি বিমুখ রাখতে নড়েচড়ে বসেছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) প্রশাসন। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ, ব্যানার, ফেস্টুন টাঙানো এমনকি বিশেষ কোনো নেতার সাথে ক্যামেরাবন্দি ছবি সমাজপাতায় প্রকাশ-প্রচারে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বারণ করা হয়েছে। এবং এনিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক করে বিসিসি প্রশাসন অফিস আদেশও জারি করেছে। বিসিসি প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে রাজনীতিবিদেরা স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখলেও অভিজ্ঞ মহলের পাশাপাশি সমাজকর্মীরা বিষয়টিকে ইতিবাচক এবং সমপোযোগী বলছেন।
পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের গত ১৬ বছরের শাসনামলে সরকারি দপ্তরসমূহে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ লক্ষ্যণীয় ছিল। চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে অধিকাংশ দপ্তরের ‘টপ টু বটম’ কর্মকর্তা-কর্মচারী দলবাজ হয়ে পড়েছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরে প্রত্যাশা ছিল অন্তত সরকারি দপ্তরসমূহ দলবাজমুক্ত হবে। কিন্তু মোটেও তা হয়নি, বরং আগের ন্যায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করছেন। এমনকি দলীয় পদ-পদবি বহন করাসহ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে কর্মে ফাঁকি দিয়ে সেবাগ্রহিতাদের বিড়াম্বনায় ফেলছেন। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এই প্রবনতা বেশিমাত্রায় দেখা যাচ্ছে, যা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজনৈতিক নেতাদের লেজুড়বৃত্তি করে শহরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, ব্যানার সাটানোসহ দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে সমালোচনা হয়। এবং কেউ কেউ রাজনৈতিক নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে ছবি তুলে তা ব্যক্তিগত ফেসবুকেও পোস্ট করেন, যা চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘনের সামিল। এই বিষয়টি নজরে আসার পরে প্রশাসক রায়হান কাওসার ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন।
সূত্র নিশ্চিত করেছে, গত ৯ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদেশে উল্লেখ করা হয়, ‘সিটি করপোরেশনের কিছু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক সভা, সমাবেশে অংশগ্রহণ করছেন, যা চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থী অপরাধ। এ অবস্থায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজনৈতিক সভা, সমাবেশ, মিছিলে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হলো।
জনস্বার্থে বিসিসি প্রশাসনের এই নড়েচড়ে বসায় বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব বিষয়টির বিরোধীতা করছে। প্রাসঙ্গিক এই বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, অফিস শেষে বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিলে বিসিসি বাধা দিতে পারে না। এটা যে কারও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, এভাবে রাজনীতিতে বাধা দেওয়া ঠিক না।
বাসদের জেলা সমন্বয়ক ডা. মনীষা চক্রবর্তীও বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতার মত অনুরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এবং রাজনীতি করার অধিকার সবারই আছে। অফিস সময়ের বাইরে রাজনীতি করার স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত করা ঠিক হবে না।
তবে বরিশাল সিটি কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি নুর খান বলছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে সকলে আইনে মানতে বাধ্য। কিন্তু অনেকে কর্মস্থল ফাঁকি দিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়াসহ দলীয় নেতাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে সেই ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করে প্রভাব বিস্তার করছেন। বিষয়টি নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে নেতিবাচক আলোচনা হয় এবং তা বিসিসি প্রশাসনের কানেও এসেছে। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজনৈতিক নেতাদের ছবিসংবলিত ব্যানার পোস্টার সাটানোর বিষয়টি খোদ প্রশাসক রায়হান কাওসারের নজরে আসলে তিনি বিব্রতবোধ করেন।
বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, চাকরি আইনে অনেক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিসিসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতিতে জড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে অনেকে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন, বিষয়টি নজরে আসার পরে গত ৯ নভেম্বর আদেশ জারি করে এগুলো করতে বারণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কেউ এমন চাকরিপরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকলে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বরিশাল সিটির প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওসার ইতিমধ্যে সরকারি প্রতিটি দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তাকে তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে রাজনীতিতে জড়াতে বারণ করেছেন। এরপরেও যদি কেউ এই ধরনের কর্মকান্ডে জড়িয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে সমালোচিত করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন তিনি। সেক্ষেত্রে দলবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি হারানোর ঝুঁকিও থাকছে।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সুশীলমহল। এনিয়ে শহরের কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা সমাজকর্মী কাজী এনায়েত হোসেন শিবলুর অভিব্যক্তি হচ্ছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি গ্রুপ আওয়ামী লীগের শাসনামলে রাজনীতিতে জড়িয়ে খেসারত হিসেবে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন, আবার অনেকের মাথায় শাস্তির খড়গ ঝুলছে। কিন্তু এরপরেও তারা দলবাজি ছাড়তে চাইছেন না, যা জনসাধারণের জন্য অস্বস্তিকর। তবে এবার বরিশাল সিটির প্রশাসক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি থেকে বিরত রাখতে যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা আসলেই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত কতটুকু বাস্তবায়ন হয়, সেটা এখন দেখতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।’
রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণ করতে বারণ, চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করলে নেওয়া হবে ব্যবস্থা
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি বিমুখ রাখতে নড়েচড়ে বসেছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) প্রশাসন। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ, ব্যানার, ফেস্টুন টাঙানো এমনকি বিশেষ কোনো নেতার সাথে ক্যামেরাবন্দি ছবি সমাজপাতায় প্রকাশ-প্রচারে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বারণ করা হয়েছে। এবং এনিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক করে বিসিসি প্রশাসন অফিস আদেশও জারি করেছে। বিসিসি প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে রাজনীতিবিদেরা স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখলেও অভিজ্ঞ মহলের পাশাপাশি সমাজকর্মীরা বিষয়টিকে ইতিবাচক এবং সমপোযোগী বলছেন।
পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের গত ১৬ বছরের শাসনামলে সরকারি দপ্তরসমূহে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ লক্ষ্যণীয় ছিল। চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে অধিকাংশ দপ্তরের ‘টপ টু বটম’ কর্মকর্তা-কর্মচারী দলবাজ হয়ে পড়েছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরে প্রত্যাশা ছিল অন্তত সরকারি দপ্তরসমূহ দলবাজমুক্ত হবে। কিন্তু মোটেও তা হয়নি, বরং আগের ন্যায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করছেন। এমনকি দলীয় পদ-পদবি বহন করাসহ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে কর্মে ফাঁকি দিয়ে সেবাগ্রহিতাদের বিড়াম্বনায় ফেলছেন। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এই প্রবনতা বেশিমাত্রায় দেখা যাচ্ছে, যা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজনৈতিক নেতাদের লেজুড়বৃত্তি করে শহরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, ব্যানার সাটানোসহ দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে সমালোচনা হয়। এবং কেউ কেউ রাজনৈতিক নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে ছবি তুলে তা ব্যক্তিগত ফেসবুকেও পোস্ট করেন, যা চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘনের সামিল। এই বিষয়টি নজরে আসার পরে প্রশাসক রায়হান কাওসার ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন।
সূত্র নিশ্চিত করেছে, গত ৯ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদেশে উল্লেখ করা হয়, ‘সিটি করপোরেশনের কিছু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক সভা, সমাবেশে অংশগ্রহণ করছেন, যা চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থী অপরাধ। এ অবস্থায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজনৈতিক সভা, সমাবেশ, মিছিলে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হলো।
জনস্বার্থে বিসিসি প্রশাসনের এই নড়েচড়ে বসায় বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব বিষয়টির বিরোধীতা করছে। প্রাসঙ্গিক এই বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, অফিস শেষে বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিলে বিসিসি বাধা দিতে পারে না। এটা যে কারও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, এভাবে রাজনীতিতে বাধা দেওয়া ঠিক না।
বাসদের জেলা সমন্বয়ক ডা. মনীষা চক্রবর্তীও বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতার মত অনুরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এবং রাজনীতি করার অধিকার সবারই আছে। অফিস সময়ের বাইরে রাজনীতি করার স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত করা ঠিক হবে না।
তবে বরিশাল সিটি কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি নুর খান বলছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে সকলে আইনে মানতে বাধ্য। কিন্তু অনেকে কর্মস্থল ফাঁকি দিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়াসহ দলীয় নেতাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে সেই ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করে প্রভাব বিস্তার করছেন। বিষয়টি নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে নেতিবাচক আলোচনা হয় এবং তা বিসিসি প্রশাসনের কানেও এসেছে। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজনৈতিক নেতাদের ছবিসংবলিত ব্যানার পোস্টার সাটানোর বিষয়টি খোদ প্রশাসক রায়হান কাওসারের নজরে আসলে তিনি বিব্রতবোধ করেন।
বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, চাকরি আইনে অনেক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিসিসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতিতে জড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে অনেকে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন, বিষয়টি নজরে আসার পরে গত ৯ নভেম্বর আদেশ জারি করে এগুলো করতে বারণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কেউ এমন চাকরিপরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকলে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বরিশাল সিটির প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওসার ইতিমধ্যে সরকারি প্রতিটি দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তাকে তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে রাজনীতিতে জড়াতে বারণ করেছেন। এরপরেও যদি কেউ এই ধরনের কর্মকান্ডে জড়িয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে সমালোচিত করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন তিনি। সেক্ষেত্রে দলবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি হারানোর ঝুঁকিও থাকছে।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সুশীলমহল। এনিয়ে শহরের কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা সমাজকর্মী কাজী এনায়েত হোসেন শিবলুর অভিব্যক্তি হচ্ছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি গ্রুপ আওয়ামী লীগের শাসনামলে রাজনীতিতে জড়িয়ে খেসারত হিসেবে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন, আবার অনেকের মাথায় শাস্তির খড়গ ঝুলছে। কিন্তু এরপরেও তারা দলবাজি ছাড়তে চাইছেন না, যা জনসাধারণের জন্য অস্বস্তিকর। তবে এবার বরিশাল সিটির প্রশাসক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি থেকে বিরত রাখতে যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা আসলেই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত কতটুকু বাস্তবায়ন হয়, সেটা এখন দেখতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।’
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:১৫
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:০৫
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:২৪

২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:১৫
বরিশালে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই কয়লা ও পাচারকাজে ব্যবহৃত একটি লাইটার ভেসেলসহ ১২ চোরাকারবারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ডের একটি দল। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কোস্ট গার্ড স্টেশন বরিশাল কোতোয়ালি থানাধীন চরমোনাই আনন্দ ঘাট-সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালে একটি সন্দেহজনক লাইটার ভেসেল তল্লাশি করা হয়। তল্লাশির পর ভেসেলটি থেকে ১ হাজার ১০০ টন চোরাই কয়লা জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ সময় চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোংলা হিরণ পয়েন্টে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজ থেকে এই কয়লা অসদুপায় অবলম্বন করে অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।
জব্দ করা কয়লা, পাচারকাজে ব্যবহৃত লাইটার ভেসেল এবং আটক ১২ চোরাকারবারিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা।
বরিশালে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই কয়লা ও পাচারকাজে ব্যবহৃত একটি লাইটার ভেসেলসহ ১২ চোরাকারবারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ডের একটি দল। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কোস্ট গার্ড স্টেশন বরিশাল কোতোয়ালি থানাধীন চরমোনাই আনন্দ ঘাট-সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালে একটি সন্দেহজনক লাইটার ভেসেল তল্লাশি করা হয়। তল্লাশির পর ভেসেলটি থেকে ১ হাজার ১০০ টন চোরাই কয়লা জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ সময় চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোংলা হিরণ পয়েন্টে অবস্থানরত একটি বিদেশি জাহাজ থেকে এই কয়লা অসদুপায় অবলম্বন করে অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছিল।
জব্দ করা কয়লা, পাচারকাজে ব্যবহৃত লাইটার ভেসেল এবং আটক ১২ চোরাকারবারিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা।

২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:০৫
শয়তানের নিঃশ্বাসের খপ্পরে পড়ে ২৭ বছরের গৃহবধু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার মামলা হলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল কোতয়ালি থানার ওসিকে আসামির বিরুদ্ধে এজাহার করার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে উপরোক্ত নির্দেশ দেন।
নগরের ২৬ নং ওয়ার্ডের হরিনাফুলিয়া এলাকার আসমা আক্তার বাদী হয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরের রাসেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। বাদি মামলায় উল্লেখ করেন তার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আসামীর।
বাদির আইডি কার্ড সংশোধন করে দেওয়ার কথা বলে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে আসতে বলে। গত ১২ নভেম্বর বাদি বাস স্ট্যান্ড আসলে শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়া বাদিসহ তার নবজাত শিশু সন্তানকে ঢাকা নিয়ে যায়। এরপর ১২ ই নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাঁদিকে খুনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাদি স্বামীকে জানালে স্বামী ১৯ নভেম্বর ঢাকা গিয়ে বাদিকে উদ্ধার করে বরিশাল নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে ২৭বছরের ওই গৃহবধূ বৃহস্পতিবার বরিশাল আদালতে হাজির হয়ে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
শয়তানের নিঃশ্বাসের খপ্পরে পড়ে ২৭ বছরের গৃহবধু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার মামলা হলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল কোতয়ালি থানার ওসিকে আসামির বিরুদ্ধে এজাহার করার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে উপরোক্ত নির্দেশ দেন।
নগরের ২৬ নং ওয়ার্ডের হরিনাফুলিয়া এলাকার আসমা আক্তার বাদী হয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরের রাসেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। বাদি মামলায় উল্লেখ করেন তার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আসামীর।
বাদির আইডি কার্ড সংশোধন করে দেওয়ার কথা বলে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে আসতে বলে। গত ১২ নভেম্বর বাদি বাস স্ট্যান্ড আসলে শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়া বাদিসহ তার নবজাত শিশু সন্তানকে ঢাকা নিয়ে যায়। এরপর ১২ ই নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাঁদিকে খুনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাদি স্বামীকে জানালে স্বামী ১৯ নভেম্বর ঢাকা গিয়ে বাদিকে উদ্ধার করে বরিশাল নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে ২৭বছরের ওই গৃহবধূ বৃহস্পতিবার বরিশাল আদালতে হাজির হয়ে মামলা করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
বাবুগঞ্জের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল ওহাব খানের সহধর্মিণী বাংলাদেশ প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকবার্তা দিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখা এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়। এসব সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেরিত পৃথক শোকবার্তায় তারা খালেদা ওহাবের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, 'খালেদা ওহাব দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের অতি আপনজন। তাঁর স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খান ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার। ১৯৮৯ সালে আততায়ীর গুলিতে আব্দুল ওহাব খান নিহত হওয়ার পরে খালেদা ওহাব একজন গৃহবধূ থেকে নিজের মেধা যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি থেকে জনগণের নেত্রী হয়ে ওঠেন। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন কাজ করে গেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাদের একজন স্বজন হারিয়েছে।'
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া শোকবার্তায় সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, 'খালেদা ওহাব শুধু একজন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন। ১৯৮৯ সালে স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খানের মৃত্যুর পরে তিনি তাঁর স্বামীর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পুরো একটা জীবন তিনি অবলীলায় খরচ করেছেন মানুষ ও মানবতার কল্যাণে। তিনি ছিলেন নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তিনি শিখিয়ে গেছেন কীভাবে একজন সাধারণ গৃহবধূ নারীকে সমাজের সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জীবনযুদ্ধে জয়ী এবং সফল হতে হয়। তিনি অদম্য ও জীবন সংগ্রামী নারীদের কাছে একজন আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।'
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভাগীয় সমন্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতা বলেন, 'বাবুগঞ্জে নারীর অগ্রযাত্রা এবং নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। জীবদ্দশায় তিনি বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সর্বোপরি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তিনি আমৃত্যু বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অসাধারণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, রান্নাবান্না এবং অতিথি আপ্যায়নে ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অনন্য। তাঁর শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। একজন কীর্তিমতী নারী হিসেবে তিনি ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন।'
উল্লেখ্য, বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারিণী খালেদা ওহাব ১৯৮৯ সালের উপ-নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পরবর্তী এরশাদ সরকারের উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তনের পরে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর স্বামী বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব খান আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে ওই বছরই অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি। যে সময়ে নারীরা ঠিকভাবে ঘর থেকেই বের হতে পারতেন না সেই সময়ে একজন নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিল অকল্পনীয় একটা ঘটনা। দেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনি একাধিকবার বিআরডিবি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টির বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন।
রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথেও আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ছাড়াও পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট পরিচালিত বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার বাবুগঞ্জ উপজেলা সভানেত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাড়ি বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দরিয়াবাদ গ্রামে।
গত মঙ্গলবার খালেদা ওহাব পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শান্তি সহায়ক সম্মেলনে যোগ দিতে বরিশাল থেকে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে তিনি রামপুরা এলাকায় তার ছোটবোনের বাসায় বেড়াতে গেলে বুধবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে নিকটস্থ ফরাজি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৪টার দিকে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, খালেদা ওহাব স্ট্রোকজনিত কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আছর চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। #
বাবুগঞ্জের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল ওহাব খানের সহধর্মিণী বাংলাদেশ প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকবার্তা দিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখা এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়। এসব সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেরিত পৃথক শোকবার্তায় তারা খালেদা ওহাবের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, 'খালেদা ওহাব দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের অতি আপনজন। তাঁর স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খান ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার। ১৯৮৯ সালে আততায়ীর গুলিতে আব্দুল ওহাব খান নিহত হওয়ার পরে খালেদা ওহাব একজন গৃহবধূ থেকে নিজের মেধা যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি থেকে জনগণের নেত্রী হয়ে ওঠেন। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন কাজ করে গেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাদের একজন স্বজন হারিয়েছে।'
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া শোকবার্তায় সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, 'খালেদা ওহাব শুধু একজন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন। ১৯৮৯ সালে স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খানের মৃত্যুর পরে তিনি তাঁর স্বামীর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পুরো একটা জীবন তিনি অবলীলায় খরচ করেছেন মানুষ ও মানবতার কল্যাণে। তিনি ছিলেন নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তিনি শিখিয়ে গেছেন কীভাবে একজন সাধারণ গৃহবধূ নারীকে সমাজের সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জীবনযুদ্ধে জয়ী এবং সফল হতে হয়। তিনি অদম্য ও জীবন সংগ্রামী নারীদের কাছে একজন আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।'
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভাগীয় সমন্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতা বলেন, 'বাবুগঞ্জে নারীর অগ্রযাত্রা এবং নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। জীবদ্দশায় তিনি বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সর্বোপরি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তিনি আমৃত্যু বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অসাধারণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, রান্নাবান্না এবং অতিথি আপ্যায়নে ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অনন্য। তাঁর শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। একজন কীর্তিমতী নারী হিসেবে তিনি ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন।'
উল্লেখ্য, বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারিণী খালেদা ওহাব ১৯৮৯ সালের উপ-নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পরবর্তী এরশাদ সরকারের উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তনের পরে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর স্বামী বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব খান আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে ওই বছরই অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি। যে সময়ে নারীরা ঠিকভাবে ঘর থেকেই বের হতে পারতেন না সেই সময়ে একজন নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিল অকল্পনীয় একটা ঘটনা। দেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনি একাধিকবার বিআরডিবি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টির বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন।
রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথেও আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ছাড়াও পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট পরিচালিত বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার বাবুগঞ্জ উপজেলা সভানেত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাড়ি বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দরিয়াবাদ গ্রামে।
গত মঙ্গলবার খালেদা ওহাব পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শান্তি সহায়ক সম্মেলনে যোগ দিতে বরিশাল থেকে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে তিনি রামপুরা এলাকায় তার ছোটবোনের বাসায় বেড়াতে গেলে বুধবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে নিকটস্থ ফরাজি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৪টার দিকে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, খালেদা ওহাব স্ট্রোকজনিত কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আছর চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। #

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.